ইসমাঈল (আ) এর বংশধর সম্বন্ধে কোরআনুল কারীম কিংবা রাসূলুল্লাহ (ছ) এর হাদীসে বিস্তারিত কোন আলোচনা করা হয়নি। অবশ্য তাওরাত তাঁর বংশধরদের নামসমূহের পৃথক পৃথক তাফসীরের সাথে উল্লেখ করেছে। তাওরাতের বর্ণনা অনুসারে ইসমাঈল (আ) এর বার পুত্র ছিলেন। যাঁরা অভিহিত ও প্রসিদ্ধ ছিলেন বার সরদার নামে এবং পুরবর্তী কালে তাঁরাই আরবের ভিন্ন ভিন্ন গোত্রের আদি পুরুষ হয়েছেন। আর তাঁর একজন মাত্র কন্যা ছিলেন, যার নাম ছিল বাশামাহ্ বা মুহাল্লাত।
"আর ইব্রাহীম (আ) এর পুত্র ইসমাঈল (আ) যিনি সারার বাঁদী মিসরীয় হাজেরার গর্ভে জন্ম গ্রহণ করেছিল। এটাই তার বংশ পরিচয়। ইসমাঈল (আ) এর সন্তানদের নামানুসারে ইসমাঈল (আ) এর বংশের শাখা প্রশাখা বিভক্ত হয়েছিল। -নাবায়ুত, জ্বীদার, ওবাঈল, হিশাম, মিশমা, রুমাহ, মানশা, ই'দার, তীমা, ইয়াতুর, নাফীশ, ক্বীদামা এই বারজন ইসমাঈল (আ) এর পুত্র। আর তারা নিজেদের বারটি গোত্রের বারজন সরদার ছিলেন। (তাওরাত)
এদের মধ্যে নাবেত বা নাবায়ুত এবং জ্বীদার নামক বড় দু' পুত্র খুব প্রসিদ্ধ। এ দু'জনের উল্লেখ তাওরাতের মধ্যে খুব বেশী দেখা যায় এবং আরব ঐতিহাসিকরাও তাদের উপর বিশেষভাবে আলোকপাত করে থাকেন। ইনিই সেই নারেত বা নাবায়ুত যার বংশধররা "আছহাবুল হিজর" নামে অভিহিত ও প্রসিদ্ধ হয়েছিল। আর ক্বীদারের বংশধররা "আছহাবুর রাসস" নামে বিখ্যাত হয়েছিল। এ দুজন ছাড়া বাকী দশভাই ও তাদের বংশের অবস্থার পরিচয় খুব অল্পই পাওয়া যায়।
কোরআনুল কারীমে হযরত ইসমাঈল (আ) এর আলোচনা
হযরত ইসমাইল (আ)এর আলোচনা কোরআনুল কারীমে বহুবার হয়েছে তন্মধ্যে শুধু এক স্থানে তাঁর গুণাবলি বর্ণিত হয়নি। এ আয়াতটি তাঁর "যাবীহ” হওয়ার বর্ণনা সম্বলিত আয়াত। আর দু স্থানে সে সুসংবাদ প্রদানের ক্ষেত্রে তাঁর উল্লেখ হয়েছে। যাতে ইব্রাহীম (আ) কে পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। আর সূরা-মারইয়ামে তাঁর নাম উল্লেখ করে তাঁর উৎকৃষ্ট গুণাবলির উল্লেখ করা হয়েছে-
"আর স্মরণ করুন, এ কিতাবে (কোরআনুল কারীমে) ইসমাঈল (আ) এর আলোচনা। তিনি ছিলেন ওয়াদা পালনে সত্যনিষ্ঠ। আর রাসূল এবং নবী, আর তিনি নিজের পরিবারবর্গকে নামাযের ও যাকাতের আদেশ দিতেন, আর তিনি স্বীয় প্রতিপালকের সন্তোষভাজন। (সূরা মারইয়াম: ৫৪-৫৫)
হযরত ইসমাঈল (আ) এর ইহধাম ত্যাগ
হযরত ইসমাঈল (আ)এর বয়স যখন ১৩৬ বছর তখন তিনি ইন্তিকাল করেন, এ সময় তাঁর বংশধররা বহু বিস্তৃতি লাভ করেছিল। হেজায, শাম, ফিলিস্তীনে এবং মিসর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। তাওরাতে একস্থানে ইঙ্গিত রয়েছে যে, হযরত ইসমাঈল (আ) ফিলিস্তীনেই সমাহিত হয়েছেন, এখানেই তাঁর ইন্তকাল হয়েছিল। আর আরব ঐতিহাসিকেরা বলেন, তিনি এবং তাঁর মাতা হাজেরা বাইতুল্লাহ শরীফের পাশেই সমাহিত হন।
0 Comments