রসনার তৃতীয় বিপদ

        রসনার তৃতীয় বিপদঃ অসভ্য বিষয়ে অনর্থক বাক্য ব্যয় করা রসনার তৃতীয় বিপদ। যেমন স্ত্রীলোকের রূপ-লাবণ্য বর্ণন্য করা, মদ পানের জলসার কথা আলোচনা করা, পাপী লোকদের প্রশংসা করা, ধনী লোকদের পার্থিব সুখ-সম্পদের কথা আলোচনা করা, রাজা-বাদশাহদের নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতার কথা আলাপালোচনা করা। তাছাড়া তাদের গর্বাহঙ্কারের বিষয় আলাপ করা এসব বিষয়ে এভাবে অনর্থক কথা বলা হারাম। অনাবশ্যক কথা বলা বা আবশ্যকীয় কথা অতিরিক্ত বলা হারাম না হলেও তা' ত্যাগ করা উত্তম। কেননা এক্ষেত্রেও অনেক সময়ই নিরাপদ হওয়া যায় না। বহু লোক অহেতুক কথাবার্তা বলে শান্তি এবং আনন্দ লাভ করবার জন্য মজলিস করে বসে। তাদের সে কথাবার্তায় মানুষের সম্মান নষ্ট করা, পাপকার্যের আলোচনা করা এবং অসত্য বিষয়াদির চর্চা করা অবশ্যই কিছু না কিছু হয়ে থাকে। যার ফলে পাপ থেকে তারাও রেহাই পায় না। এজন্যই ইহ-পারলৌকিক কল্যাণ এবং মঙ্গল ব্যতীত অন্য কোনরূপ কথাবার্তা না বলাই উত্তম। হযরত বেলাল ইবনে হাতেম (রাঃ) বলেছেন, হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন যে, মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টিজনক এমন কথা বলে ফেলতে পারে যার ফলাফল সে নিজে নাও বুঝতে পারে। অথচ আল্লাহ তজ্জন্য তার সন্তুষ্টি কিয়ামত পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করেন। আবার মানুষ আল্লাহর অসন্তুষ্টিজনক এমন কথা বলে ফেলতে পারে যার ফলাফল সে নিজে নাও বুঝতে পারে। অথচ আল্লাহ তজ্জন্য তার অসন্তুষ্টি কিয়ামত পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করেন।


        হযরত বেলাল ইবনে হারেছ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, মানুষ অনেক সময় এমন কথাও বলে ফেলে যা' মজলিসে উপস্থিত ব্যক্তিদের হাস্যের উদ্রেক করে। সে সব কথা দ্বারা ঐ ব্যক্তি মানুষের মন থেকে বহু দূরবর্তী হয়ে যায়। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেছেন, মানুষ অসাবধানে এমন কথা বলে ফেলে যার ফলাফল সে বুঝতে পারে না। অথচ সে কথা তাকে দোযখের কূপে নিক্ষেপ করে। আবার সে অসাবধানে এমন কথাও বলে ফেলতে পারে যে, যার ফলাফল সে বুঝতে পারে না। অথচ সে কথা তাকে বেহেশতের সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছে দেয়। হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি অধিকাংশ সময় পাপ বিষয়ক আলোচনা করে, রোজ কিয়ামতে সে ব্যক্তি অধিক পাপীরূপে গণ্য হবে। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, "এদের সঙ্গে উঠা-বসা করো না যে পর্যন্ত না তারা অন্য কথা বলে। নতুবা নিশ্চয়ই তোমরা তাদের ন্যায় হবে। হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) বলেছেন, পাপকার্য সম্বন্ধে অধিক আলোচনাকারীগণ রোজ কিয়ামতে পাপীরূপে গণ্য হবে। হযরত ইবনে সীরীন (রহঃ) বলেছেন, জনৈক আনসার কোন এক মজলিসের নিকট দিয়ে গমনকালে তাদেরকে বলেছিলেন, তোমরা অজু কর। কেননা তোমাদের আলোচনার কোন কোন বিষয় অপবিত্রতার চেয়েও মন্দ। তাদের উক্ত মজলিসের কথাবার্তাগুলো পাপসম্পর্কিত আলোচনা ছিল। পরদিন্দা, পবঞনা অশ্লীন কথা এবং অন্যান্য জঘন্য বিষয়ের আলোচনার হুকুম  অধিক কঠর এগুলো নিশিদ্ধ বিষয়ে অনাথক কথা।

Post a Comment

0 Comments