হজ্জ আদায়ের শর্তগুলির বিবরণ

 

১) সুস্থ শরীর হওয়া একটি শর্তঃ

        যদি কেহ সুস্থ শরীর থাকা অবস্থায় হজ্জের উপযুক্ত অর্থশালি হইয়া থাকে, কিন্তু সে ব্যক্তি হজ্জ আদায় করিল না, তৎপরে তাহার অদ্ধাঙ্গ বা সর্ব্বাঙ্গ উত্থান শক্তি রহিত হইয়া যায়, অথবা সে ব্যক্তি খঞ্জ বা অন্ধ হইয়া যায়, কিম্বা এরূপ বৃদ্ধ বা পীড়াগ্রস্থ হইয়া যায় যে, উটের বা অন্য কোন সওয়ারির উপর বসিতে সক্ষম না হয়, তবে তাহার পক্ষে কোন লোক পাঠাইয়া বদল হজ্জ করান ফরজ হইবে।

        আর যদি সে ব্যক্তি কষ্ট পরিশ্রম করিয়া হজ্জ আদায় করে। তবে ফরজ হজ্জ আদায় হইয়া যাইবে। আর যদি নিজে হজ্জ আদায় করার পরে সে ব্যক্তি সুস্থ হইয়া যায়, তবে দ্বিতীয়বার তাহাকে হজ আদায় করিতে হইবে না।

        যদি কেহ অন্ধ, খঞ্জ, উত্থান বা চলতশক্তি রহিত বা সওয়ারির উপর বসিতে অক্ষম এরূপ বৃদ্ধ অবস্থায় হজ্জের। উপযুক্ত টাকার মালিক হয়, তবে তাহার উপর হজ্জ ফরজ হইবে কিনা, ইহাতে মতভেদ হইয়াছে।

        এমাম আজম (রঃ) বলিয়াছেন, উক্ত ব্যক্তির উপর হজ্জ করা ফরজ হইবে না।

       আর এমাম আবু ইউসুফ ও এমাম মোহাম্মদ (রঃ) বলিয়াছেন তাহার উপর হজ্জ ফরজ হইবে, তাহার পক্ষে বদলা হজ্জ করান ফরজ হইবে, আর মৃত্যু উপস্থিত হইলে, বদলা হজ্জের জন্য ওছিএত করা ফরজ হইবে।

         আর যদি বদলা হজ্জ করানোর পরে সে ব্যক্তি সুস্থ হইয়া যায়, তবে দ্বিতীয়বার তাহার নিজেই হজ্জ করা ফরজ হইবে।

        এইরূপ কারাগারে বন্দী থাকা এবং হজ্জ করিতে সুলতানের নিষেধাজ্ঞা ও দণ্ডের আশঙ্কা থাকা অবস্থায় কেহ হজ্জের উপযুক্ত অর্থশালী হইলে, এমামগণের উপরোক্ত প্রকার মতভেদ হইয়াছে।

        তোহফা প্রণেতা, এমাম ইসবিজাবী ও এবনোল হোমাম এমাম সাহেবের শিষ্যদ্বয়ের মতটি মনোনীত ও প্রবল বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন। কাজিখান ও বহু ফকিহ এই মতটি ছহিহ্ বলিয়াছেন নেহায়া কেতাবে এমাম সাহেবের মতটি গৃহীত হইয়াছে। রামালি উহাকে সমধিক ছহিহ মত বলিয়াছেন। বাহারোর রায়েকে ইহাকেই ছহিহ মজহাব বলা হইয়াছে। বাঃ,২/৩১১ আঃ, ১/২৩২, মেনা, ২/৩১১। শাঃ ২/১৫৪।

        লেখক বলেন, এমাম সাহেবের মতটি সহজ, আর তাহার শিষ্য দ্বয়ের মতটি সমিধক এহতিয়াত।

        (মসলা) মোল্লা আলি কারি বলিয়াছেন, বাদশাহ কিম্বা মহা প্রতাপশালী আমির হজ্জ করিতে গেলে, রাজ্যে বিপ্লব উপস্থিত হইয়া থাকে, প্রজাদের মধ্যে অশান্তি ঘটিয়া থাকে এবং অনেক ক্ষেত্রে বাদশাহ হত হইয়া তাকে, এই জন্য বাদশাহ কিম্বা প্রতাপশালী আমির হজ্জ করিতে যাইবে, না গিয়া বদলা হজ্জ করাইবেন। মেনহাতোল খালেকে আছে, যদি সুলতানের সুলতানাত শরিয়তের শর্তানুযায়ী হইয়া থাকে, তবে উপরোক্ত প্রকার হুকুম হইবে, নচেৎ

       নিজে সুলতানাত ত্যাগ করিয়া উপযুক্ত লোককে খালিফা স্থির করিয়া হজ্জ করিতে যাইবে, কিন্তু যদি এরূপ ক্ষেত্রেও সৈন্য বিদ্রোহ হয়, তবে নিজে হজ্জ করিবে না।

        এবনে আবেদিন শামি বলিয়াছেন যদি উক্ত সুলতান প্রথমাবস্থায় হজ্জ করিতে সক্ষম হইয়া থাকেন, তৎপরে সুলতানাত লাভ করিয়া অক্ষম হইয়া থাকেন, তবে তাহার পক্ষে বদলা হজ্জ করান ফরজ হইবে।

        আর যদি তিনি সুলতানাত লাভ করার পরে হজ্জের উপযুক্ত হইয়া থাকেন, তবে এমাম আজমের মতে তাহার প্রতি বদলা হজ্জ করান ফরজ হইবে না। আর তাহার শিষ্যদ্বয়ের মতে বদলা হজ্জ করান ফরজ হইবে।

        আর যদি বয়তল-মাল তহবিল ব্যতিত সুলতানের হজ্জের উপযুক্ত নিজের টাকা না থাকে, তবে তাহার উপর হজ্জ ফরজ হইবে না।

        আর যদি সুলতান হজ্জের উপযুক্ত হওয়ার পরে শেষ জীবনে সুলতানাত ত্যাগ করিয়া থাকেন, তবে তাহার নিজেই হজ্জ করা ফরজ হইবে। মেনঃ, ২/৩১১। শাঃ ২/১৫৪।

            ২) পথের শান্তি থাকা হজ্জ আদায় করার একটী শর্ত (ফকিহ) আবদুল্লা এই বলিয়াছেন, যদি পথটি অধিক সময় নিরাপদ থাকে, তবে হজ্জ আদায় করা ওয়াজেব হইবে, ইহাই বিশ্বাসযোগ্য মত।

        কেরমানি বলিয়াছেন, সমুদ্রের যে পথে লোক গমন করিয়া থাকে, যদি উক্ত পথটি অধিক সময় নিরাপদ থাকে, তবে উক্ত পথে হজ্জ আদায় করা ওয়াজেব হইবে। ইহাই সমধিক ছহিহ্ মত।

        ফৎহোল কদিরে আছে, যদি সাধারণতঃ উক্ত পথে লুণ্ঠনকারী দিগের লুষ্ঠনের ভয় না থাকে, তবে হজ্জ আদায় করা ওয়াজেব হইবে। যদি ডাকাতেরা হাজিদিগের সহিত যুদ্ধ করিনে এরূপ প্রবল আশাঙ্কা হয়, তবে ওজোর (আপত্তি) বলিয়া ধরিতে হইবে, কিন্তু যদি কতক হাজি দল ছাড়া হইয়া দূরে যাওয়ায় গতিকে চোরের দ্বারা হত হয়, তবে উহা ওজোর হইতে পারে না।

        যদিও অরণ্যবাসি আরবেরা কিম্বা রক্ষকেরা হাজিদিগের নিকট হইতে কিছু টাকা কড়ি দাবি করিয়া গ্রহণ করে, তবু উহা দিয়া হজ্জ করা ওয়াজেব হইবে।

        যদি নিরাপদে হজ্জ আদায় করিতে কিছু উৎকোচ দিতে হয়, তবে উহা দেওয়া জায়েজ হইবে। শাঃ, ২/১৫৭। তার ১/৪৮৩ লেখক বলেন, হিন্দুস্থানের হাজিয়া রেল স্টিমারে সাধারণত নিরাপদে হজ্জ করিয়া থাকেন, কাজেই তাহাদের পক্ষে হা আদায় করা যে ফরজ ইহাতে কোন প্রকার সন্দেহ নাই।

            ৩) স্ত্রীলোক যুবতী হউক, আর বৃদ্ধা হউক, যদি তিন দিবসের পথ (৪৫) মাইল অতিক্রম করিয়া হজ্জ করিতে চাহে, তবে তাহার সহিত একজন 'মহরম' পুরুষ লোক থাকা শর্ত। ইহা গৃহতি কেতাবে আছে।

        আর তিন দিবসের কম পথ হইলে হজ্জ করিতে গেলে, তাহারে সহিত মহরম না থাকিলেও হজ্জ করিতে পারিবে।

        এমাম আবু হানিফা ও এমাম আবু ইউছুফের এক রেওয়াতে আছে যে, বিনা মহরমে স্ত্রীলোকের এক দিবসের (১৮মাইল) পথ ছফর করা মকরুহ, লোবাবের টীকায় এই মতটা ফৎওয়ার উপযুক্ত হওয়া বলিয়া উল্লিখিত হইয়াছে। ছহিহ বোখারি ও মোছলেমে এই মতটি সমর্থিত হইয়াছে।

        মহরম লোকটীর বালেগ বুদ্ধিমান ও পরহেজগার হওয়া আবশ্যক। মহরম পুরুষটা নাবালেগ, পাগল বা ফাছেক হইলে, তাহার সহিত হজ্জ করিতে যাওয়া জায়েজ হইবে না অবশ্য যদি সে ব্যক্তি বালেগ হওয়ার নিকট নিকট বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া থাকে, তবে তাহার সহিত হজ্জ করিতে যাওয়া জায়েজ হইবে।

        মুফতি আবু ছউদ বলিয়াছেন, বর্তমান জামানায় দুধ ভাইয়ের সহিত কোন স্ত্রীলোকের হজ্জ করিতে যাওয়া জায়েজ নহে। এবনে আবেদীন শামি বলিয়াছেন, যুবতী শ্বাশুড়ী যুবক জামাতার সহিত হজ্জ করিতে যাইতে পারিবে না। শাঃ২/১৫৭/১৫৮

        যদি কোন স্ত্রীলোক তিন দিবসের (বা এক দিবসের) দূর পথ হইতে মহরম বা স্বামীকে সঙ্গে না লইয়া হজ্জ করিতে যায়, তবে তাহার হজ্জ আদায় হইয়া যাইবে, কিন্তু ইহা মকরুহ তহরিমি হইবে। শাঃ, ২/১৫৯।

            (মসলা) যে মহরম পুরুষটী উক্ত স্ত্রীলোকের সঙ্গে যাইবে, উক্ত স্ত্রীলোকটা তাহার পথ খরচ দিতে বাধ্য হইবে, কিন্তু স্বামী সঙ্গ ৭ হইলে তাহার পথ খরচ দেওয়া ওয়াজেব হইবে না। যতক্ষণ কোন স্ত্রীলোক নিজের এবং সঙ্গী মহরমের পথ খরচ পরিমাণ টাকার মালিক না হয়, ততক্ষণ তাহার উপর হজ্জ হইবে না।

        কোন স্ত্রীলোক ফরজ হজ্জ আদায় করিতে কোন উপযুক্ত মহরম ব্যক্তি সঙ্গি পাইলে, যদি তাহার স্বামী হজ্জ করিতে নিষেধ করে, তবে তাহার নিষেধাজ্ঞা না শুনিয়া হজ্জ করিবে।

        আর স্বামীর বিনা অনুমতিতে নফল হজ্জ আদায় করিতে যাওয়া নিষিদ্ধ।

    যদি তাহার কোন মহরম বা স্বামী না থাকে, তবে তাহার পক্ষে নিকাহ করা ওয়াজেব হইবে না। ইহা কাজিখান, লোবাব, জও হেরা, মানাছেকে এবনে আমিরে হজ্জে আছে।

        যদি কোন স্ত্রীলোক পীড়া কিম্বা পথের অশান্তির কারণে অথবা স্বামী বা মহরমের অভাবে হজ্জ করিতে না পারে, তবে তাহাকে বদলা হজ্জ করাইতে ওছিয়ত করা অয়াজেব কাজিখান, নেহায়া, ফতহোল কদির, লোবাব জওহেরা ও আমির এই মতটি পছন্দ করিয়াছেন। আঃ ১/ ২৩২/২৩৩/শাঃ,২/৫৮।

৪) স্ত্রীলোকের এদ্দত না থাকা একটি  শর্তঃ

        যে সময় শহরের লোকেরা হজ্জ করিতে বাহির হন, সেই সময় কোন স্ত্রীলোকের তালাকের বা স্বামীর মৃত্যুর এদ্দত থাকিলে, তাহার পক্ষে হজ্জ করিতে যাওয়া নিষিদ্ধ।

        আর যদি স্ত্রীলোকের হজ্জে রওয়ানা হওয়ার পরে তাহার স্বামী তাহাকে রাজয়ি তালাক দেয়, তবে সে নিজের স্বামীকে ত্যাগ করিবে না এবং স্বামীর পক্ষে তাহাকে ফিরাইয়া লওয়া উচিৎ।

        আর যদি স্বামী তাহাকে তালাকে বাএন দিয়া থাকে, তবে তাহার স্বামী বেগানা হইয়া যাইবে। এক্ষেত্রে যদি মক্কা শরিফ ও তাহার নিজের শহর এই উভয়টা তিন দিবসের কম পথ হয়, তবে ইচ্ছা হয় উক্তস্ত্রীলোকটা হজ্জ করিতে যাইবে, আর ইচ্ছা হয় নিজের শহরের দিকে চলিয়া যাইবে।

        আর যদি একটি তিন দিবসের পথ হয় এবং অন্যটি তদপেক্ষা কম পথ হয়, তবে যেটি কম পথ হয়, সেই দিকে চলিয়া যাইবে।

        আর যদি উভয়টি তিন দিবসের পথ হয়, এক্ষেত্রে যদি কোন শহরে থাকে, তবে তথায় থাকিয়া এদ্দত পালন করিবে এবং কোন মহরম পাইলেও তথা হইতে বাহির হইবে না।

        আর যদি এরূপ কোন গ্রামে কিম্বা ময়দানে থাকে যে তথায় এজ্জত হানির আশঙ্কাকরে, তবে তথা হইতে কোন-নিরাপদ স্থানে, পৌঁছিয়া এদ্দত পালন করিবে এবং কোন মহরম সঙ্গী পাইলেও উক্ত নিরাপদ স্থান হইতে বাহির হইয়া অন্যত্রে যাইবে না। কঃ, ১/৪৩৮। শাঃ ২/১৬৯। তাঃ, ১/৪৮৪।

        ৫) হজ্জে আর একটি শর্ত এই যে, এরাপ ওয়াক্ত বাকি থাকে যে, যেন নিয়মিত চলনে হজ্জের স্থানে উপস্থিত হইতে পারে, এমন কি যদি প্রত্যেক দিবসে কিম্বা দিবসের কতকাংশে এক মন্ত্রেল অপেক্ষা অধিক পথ চলতে হয় তবে (সেই বৎসর) হজ্জ ওয়াজের হইবে না।

      ৬) হজ্জের অবশিষ্ট শর্ত এই যে, উক্ত ছকরে ফরজগুলি ওয়াক্ত মত আদায় করিতে সক্ষম হওয়া।

        কেরমাণি বলিয়াছেন, একটি বিষয় এররূপ ভাবে ফরজ হইতে পারে না যে, উহাতে অন্য একটি ফরজ নষ্ট হইয়া যায়। যদি কেব এহরাম বাঁধিয়া আরফাতে উপস্থিত হয় এবং আরফাতে দাঁড়াইবার সময়ের মধ্যে অল্পই বাকি থাকে, এমনকি যদি আরফাতে দাঁড়াইতে যায়, তবে তাহার এশা কাজা হইয়া যায়, আর যদি এশা পাড়িতে থাকে, তবে হজ্জে দাঁড়ানোর সময় নষ্ট হইয়া যায়, এক্ষেত্রে হজ্জ আদায় করিবে, কিম্বা এশার নামাজ পড়িবে, ইহাতে মতভেদে হইয়াছে। কেহ কেহ বলেন, হজ্জ আদায় করিবে এবং এশা কাজা পড়িয়া হাইবে, আর কেহ কেহ বলেন, এশা পড়িয়া লইবে এবং হজ্জ কাজা করিবে, মোল্লা আলি কারি এই মতটি গ্রহণীয় বলিয়াছেন।

এবনল হজ্জ মালেক বলিয়াছেন, হজ্জ ফরজ আদায় করার জন্য নামাজ কাজা করা জায়েজ নহে। ইহাতে এজমা হইয়াছে আবুল কাছেম বলিয়াছেন, কেহ বর্তমান কালে জেহাদ করিতে গিয়া এক ওয়াক্ত নামাজ কাজা করিলে, উহার কাফ্ফারার জন্য তাহার পক্ষে একশত জেহাদ করা আবশ্যক হইবে।

        এই জন্য যুদ্ধকালে শত্রুদের আশঙ্কা হইলে, নামাজে দেরী না করিয়া খওফের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করা হইয়াছে যাহা অন্য সময় জায়েজ হইতে পারে না।

        এই জন্য যে সময় খোন্দক যুদ্ধের দিবস হজরত পয়গম্বরে- খোদা (সাঃ) এর আছরের নামাজ কাজা হইয়া গিয়াছিল, তিনি বলিয়াছিলেন, কাফেরেরা আমার মধ্যম নামাজ অর্থাৎ আছরের নামাজ নষ্ট করিয়া দিয়াছে, আল্লাহ তায়ালা তাহাদের গৃহ ও গোরকে অগ্নিতে পরিপূর্ণ করুন।

        পীর আবুবকর অরকি হজ্জের জন্য রওনা হইয়াছিলেন, তৎপরে তিমি এক মন্ত্রেল গমন করিয়া আপন শিষ্যগণকে বলিয়া ছিলেন আমাকে ফিরাইয়া লইয়া চল, কেননা আমি একই মঞ্জেলে সাত শত গোনাহ কবিরা করিয়াছি।

        মন ইয়ার হাশিয়ায় লিখিত আছে যে, নামাজের জামাত ত্যাগ করার জন্য তিনি এইরূপ কথা বলিয়াছেন, আর জামায়াত ত্যাগ করা অপেক্ষা নামাজ কাজা করা বড় গোনাহ ইহাতে সন্দেহ নাই।

        আর অনেক পুরুষ ও স্ত্রীলোক বিনা প্রসিদ্ধ ওজরে চুতস্পদ জন্তুর উপর নামাজ পড়িয়া থাকে, (ইহাত জায়েজ নহে)। কতক সাধারণ লোক ধারণা করে যে, উট ঢালকেরা নীচে নামাজ পড়িতে রাজি হয় না, ইহা তাহাদের অনভিজ্ঞতা ও দ্বিনী কার্য্যে অসাবধানতার লক্ষণ, কেননা, হাজিদিগের পক্ষে উক্ত উট চালক দিগের সহিত নামিয়া নামাজ পড়িয়া লওয়ার শর্ত করা ওয়াজেব আর শর্ত না করিলেও ইহা করাই একান্ত আবশ্যক কেননা উহা ছিনি কার্য্যগুলির মধ্যে একটি জরুরি কার্য্য, কাজেই উহা ত্যাগ করার কাহারও আপত্তি গ্রহ্য হইতে পারে না এবং কেহ উহার এনাকর করিতেও পারে না।

        অবশ্য যদি চোরের কিম্বা হিংস্র জন্তুর ভয় হয় কিম্বা যদি চতুস্পদ জন্তুটি এরূপ দূরস্ত হয় যে অন্য লোকের সাহায্য ব্যতীত উহার উপর আরোহণ কিম্বা উহা হইতে অবতরণ করা সম্ভব না হয় এবং তথায় এরূপ সাহায্যকারী কেহ না থাকে, তবে উটের উপর ফরজ নামাজ পড়া জায়েজ হইতে পারে। লোবাবের টীকা, ১৯/২০।

Post a Comment

0 Comments