উঃ যদি শহরবাসিদিগের হজ্জে রওয়ানা হওয়ার সময় ঐ পরিমাণ টাকার মালিক হইয়া থাকে, তবে হজ্জ করা তাহার উপর ফরজ হইবে। আর যদি ইহার পূর্ব্বে উহার মালিক হইয়া থাকে, তবে তন্দারা যাহা হয় খরিদ করিতে পারিবে, উহাতে কোন গোনাহ হইবে না। শাঃ, ২১৫৬/তাঃ,১/৪৮৩।
প্রঃ যে ব্যক্তির হজ্জের পরিমাণ টাকা থাকে, কিন্তু সে ব্যক্তি বিবাহ করিতে গেলে, তাহার হজ্জের পথ খরচ সঙ্কুলান হয় না, এক্ষেত্রে তাহার উপর হজ্জ ফরজ হইবে কি না?
উঃ আশবাহ কেতাবে আছে, যদি নিকাহ না করিলে, জেনা (ব্যাভিচার) করায় আসঙ্কা করে এক্ষেত্রে যদি সে ব্যক্তি শহর বাসিদিগের হচ্ছে রওয়ানা হওয়ার পূর্ব্বে উক্ত পরিমাণ টাকার মালিক হইয়া থাকে, তবে সে ব্যক্তি নিকাহ করিতে পারে, আর তাহাদের হচ্ছে রওয়ানা হওয়া কালে উক্ত পরিমাণ টাকার মালিক হইলে, তাহার উপর হজ্জ করা ফরজ হইবে।
এবনে আবেদীন শামী 'এবনে কামাল বাশা' হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, যদি সে ব্যক্তি নিকাহ না করার জন্য জেনা (ব্যাভিচার) কার্য্যে লিপ্ত হইয়া থাকে, তবে তাহার পক্ষে উপরোক্ত উভয় ক্ষেত্রে হজ্জ করা ফরজ হইবে না, বরং নিকাহ করা ফরজ হইবে। শাঃ ২/১৫৬। আঃ, ১/৪৮৩।
(মসলা) যদি কোন লোকের নিকট এক বৎসরের ধান্য চাউল অথবা গম থাকে, তবে উহাতে হজ্জ ফরজ হইবে না, আর যদি এক বৎসরের অধিক পরিমাণ খাদ্য বস্তু তাহার নিকট থাকে এবং এক বৎসরের খাদ্য বাদ দিয়া তদতিরিক্ত খাদ্য হজ্জের পথ খরচ হইলে, তাহার উপর হজ্জ ফরজ হইবে। লোঃ, ১২। শাঃ, ২/১৫৬।
(মসলা) কাজিখান কতক বিদ্বান হইতে উল্লেখ করিয়াছেন যদি কোন ব্যক্তি সওদাগর হয় এবং ব্যবসা বাণিজ্য দ্বারা দিনপাত করিয়া থাকে ও এরূপ অর্থ সংগ্রহ করিয়া থাকে যে, যদি সে ব্যক্তি নিজের যাতায়াতের পথ খরচ এবং তাহার ফিরিয়া আসা পর্যন্ত তাহার সন্তান সন্ততি ও পরিজনের খোরপোষ উক্ত মূলধন হইতে গ্রহণ করে, তবে হজ্জ করিয়া ফিরিয়া আসার পরে অবশিষ্ট টাকা উক্ত ব্যবসায়ের মূলধনের উপযুক্ত হইতে পারে, তবে তাহার উপর হজ্জ করা ফরজ হইবে। আর যদি অবশিষ্ট টাকা ব্যবসায়ের পক্ষে যথেষ্ট মূলধন না হয়, তবে তাহার উপর হজ্জ করা ফরজ হইবে না। আর যদি সে ব্যক্তি অন্য কোন পেশা অবলম্বন করিয়া থাকে, এক্ষেত্রে যদি সে ব্যক্তি হজ্জের পথ খরচ ও স্ত্রীপরিজনের খোরপোষ গ্রহণ করিলেও তাহার পেশার উপকরণ (অস্ত্র শস্ত্র) বাকি থাকে, তবে তাহার উপর হজ্জ করা ফরজ হইবে। আর উহা বাকি না থাকিলে, তাহার উপর হজ্জ করা ফরজ হইবে না।
যে ব্যক্তি জমির মালিক হয়, যদি সে ব্যক্তি জমি হইতে হজ্জের পথ খরচ ও স্ত্রীপরিজনের খোরপোষ পরিমাণ বিক্রয় করিলে, অবশিষ্ট জমির উপসত্ত্ব দ্বারা তাহার ও তাহার-পরিজনের জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব হয়, তবে তাহার উপর হজ্জ করা ফরজ হইবে নচেৎ উহা ফরজ হইবে না।
আর কেহ কৃষক হইলে, হজ্জের পথ খরচ এবং স্ত্রী পরিজনের খোরপোষ বাদ দিয়া যদি তাহার গরু ইত্যাদি কৃষিকার্য্যের উপকরণ গুলি বাকি থাকে, তবে তাহার উপর হজ্জ করা ফরজ হইবে, নচেৎ উহা ফরজ হইবে না। আঃ, ১/২৩১/২০২।
(মসলা) যদি কাহারও একটি বাটি থাকে, যাহার কতকাংশ তাহার পক্ষে যথেষ্ট হয়, তবে অতিরিক্ত অংশটুকু হজ্জ আদয়ের জন্য বিক্রয় করা ওয়াজেব হইবে না। (ইহা কাজিখানে আছে। - আঃ ১/২৩১। দোঃ, ১/৯৩/৯৪। শাঃ ২/১৫৬।
(মসলা) যদি কোন লোকের এইরূপ একটি বাটী থাকে যাহা বিক্রয় করিয়া তদ্দারা তদপেক্ষা একটি ছোট বাটী খরিদকরতঃ অবশিষ্ট মূল্য দ্বারা হজ্জ করিতে পারে, তবে তাহার পক্ষে এরূপ ক্রয় বিক্রয় করা ওয়াজেব হইবে না, ইহা মুহিত কেতাবে আছে, আর যদি যে ব্যক্তি ঐরূপ ক্রয় বিক্রয় করিয়া হজ্জ আদায় করে, তবে সমধিক উৎকৃষ্ট হইবে, ইহা ইজাহ কেতাবে আছে।
এইরূপ হজ্জ করণেচ্ছায় নিজের বাসগৃহ বিক্রয় করিয়া ভাড়া করা গৃহে বাস করা ওয়াজেব নহে, ইহা বাহরোর রায়েকে 'আছে। আঃ ১/৩৪১।
(মসলা) যদি একজন লোক অন্য একজনকে কিম্বা পিতা পুত্রকে অথবা পূত্র পিতাকে হজ্জের পরিমাণ টাকা মালিক বা মোবাহ করিয়া দেয় বা ছদকা ও হেবা করিয়া দেয়, তবে শেষোক্ত ব্যক্তির পক্ষে উহা কবুল করা ওয়াজেব হইবে না, আর যদি উক্ত টাকা গ্রহণ করে তবে সকলের মতে তাহার পক্ষে হজ্জ করা ওয়াজেব হইবে। লোঃ টীকা, ১৩।
0 Comments