প্রঃ এহরামের নিষিদ্ধ বিষয়গুলি কি কি?
উঃ ১) স্ত্রীসঙ্গমের কথা স্ত্রীলোক দিগের সাক্ষাতে বলা ফাহেশা কথা বলা, মিথ্যা কথা বলা।
২) প্রত্যেক প্রকার গোনাহ্ করা।
৩) ঝগড়া ফাছাদ করা, কিন্তু দ্বিনী বিষয়ের সমালাচনা করা নিষিদ্ধ নহে। শরিয়তের নিয়মের অধীন থাকিয়া ভাল কাৰ্য্য করিয়াছে বলা এবং মন্দ কার্য্য করিতে নিষেধ করা ওয়াজেব।
৪) স্ত্রীসঙ্গম করা স্ত্রীকে চুম্বন ও স্পর্শ করা।
৫) স্ত্রীলোকের আলিঙ্গন (মোয়ানাকা) করা।
৬) স্ত্রীলোকের দিকে কামভাবে দৃষ্টিপাত করা।
৭) বোগল, নাভীর নিম্নস্থ বা কোন স্থানের লোম ছিড়িয়া ফেলা বা মুণ্ডন করা।
৮) নিজের বা অনেক মস্তক মুণ্ডন করা বা ছাটিয়া ফেলা।
৯) গোঁফ দাড়ি বা ঘাড়ের চুল ছাটিয়া ফেলা।
১০) নখ কাটিয়া ফেলা।
১১) সেলাই করা চাপকান ইত্যাদি ব্যবহার করা।
১২) পিরহান ব্যবহার করা।
১৩) পায়জামা পরা।
১৪) কাবা (চোগা) ব্যবহার করা
১৫) টুপি পাগড়ি ব্যবহার করা।
১৬) বোরকা ব্যবহার করা।
১৭) মোজা কিম্বা পায়তাবা ব্যবহার করা।
১৮) পুরুষের দাস্তানা ব্যবহার করা।
১৯) কুসুম, জাফেরাণ ইত্যাদি সুগন্ধী রঙে রঞ্জিত ও কাপড় পরা, কিন্তু উক্ত কাপড় ধৌত করিলে, উহার সুগন্ধ দূরীভূত হইয়া যায় তবে উহা জায়েজ হইবে।
২০) পুরুষের মস্তক ঢাকা।
২১) তাহার মুখ কিম্বা থুৎনি ঢাকিয়া।
২২) সুগন্ধি বস্তু ব্যবহার করা।
২৩) কাপড়ে বা শরীরে তৈল লাগান।
২৪) সুগন্ধি দ্রব্য খাওয়া বা কাপড়ের কিনারায় বাধা।
২৫) স্থলচর প্রাণী শীকার করা হত্যা করা, ধরা, ধরিয়া রাখা, উহার দিকে ঈসারা করা, ব্যাধকে উহার সন্ধান বলিয়া দেওয়া, উক্ত সম্বন্ধে সাহায্য করা, উক্ত প্রাণীকে তাড়াইয়া দেওয়া, উহার 'দর' ছিঁড়িয়া লওয়া, উহার ডিম ভাজিয়া ফেলা, উহার পদসমূহ ও ডানা ভাঙ্গিয়া ফেলা, উহার দুধ দোহন করা, উক্ত শীকার করা পশুকে ভাজি করা, ক্রয় করা ও ভক্ষণ করা।
২৬) উকুণ মারিয়া ফেলা, রৌদ্রে ফেলিয়া দেওয়া, অন্যকে উহা সমপর্ণ করা, উহা মারিয়া ফেলাতে হুকুম করা, উহার দিকে ইশারা করিয়া দেখান, উকুন মারিয়া ফেলার উদ্দেশ্যে যে কাপড়ে উহা থাকে তাহা রৌদ্রে নিক্ষেপ করা বা ধুইয়া ফেলা।
২৭) মস্তক, দাড়ি বা কোন অঙ্গকে মেহদী দ্বারা রঙ করা, খতমী দ্বারা উহা ধৌত করা।
২৮) হেরম শরিফের বৃক্ষ কাটিয়া ফেলা বা তুলিয়া ফেলা এবং 'এজখার' নামক ঘাস ব্যতীত কোন তৃণলতা কোন পশুকে খাওয়ান।
(মসলা) যদি কেহ এহরাম অবস্থায় মরিয়া যায়, তবে তাহার মুখ কিম্বা মস্তক ঢাকা জায়েজ হইবে।
(মসলা) যদি কেহ এহরাম অবস্থায় মস্তকের উপর কাপড় বহন করে, তবে উহা ঢাকিয়া রাখার তুল্য হারাম হইবে। আর যদি একটি গাঠরি কিম্বা তাবাক মস্তকে বহন করে, তবে উহা জায়েজ হইবে।
(মসলা) যদি কেহ এহরাম অবস্থায় কা'বা শরিফের গেলাফের নীচে প্রবেশ করে, এজন্য তাহার মস্তক কিম্বা চেহারায় গেলাফলাগিয়া যায়, তবে উহা মকরুহ হইবে। আর যদি উহা না লাগে তবে মকরুহ হইবে না।
(মসলা) যদি কেহ কাবা'র (চোগার) দুই আস্তিনের মধ্যে দুই হাত দাখিল না করিয়া পরিধাণ করে, তবে উহা জায়েজ হইবে কিন্তু উহাকে ঘুন্টি কিম্বা কাঁটা লাগাইয়া দিলে' জায়েজ হইবে না।
(মসলা) যদি কেহ এহরাম অবস্থায় পিরহান কিম্বা জোব্বাকে চাদর রূপে ব্যবহার করে এবং নিদ্রাকালে উহা লেপের ন্যায় শরীরে ব্যবহার করে, কিন্তু যুখ ও মস্তক খুলিয়া রাখে, তবে উহা জায়েজ হইবে।
(মসলা) যদি কেহ গোনাহ্ এবং ঝগড়া ব্যতীত অন্য কোন হারাম কার্য করে তবে কোরবাণি করা বা ছদকা দেওয়া ওয়াজেব এইবে- শাঃ, ২/১৮৫/১৮৮ লোবাবের টীকা ৫১-৫৩।
প্রঃ এহরামের মকরুহ কি কি?
উঃ ১) ময়লা পরিস্কার করা।
২) ফুলের পাতা ইত্যাদি দ্বারা মস্তক বা শরীর যৌত করা।
৩) মস্তকের কেশ চিরুণী দ্বারা পরিস্কার করা।
৪) মস্তকের কেশ, দাড়ি ও শরীর সজোরে চুলকান।
৫) কাবা, আবা ইত্যাদি দুই আস্তিনের মধ্যে দুই হাত দাখিল না করিয়া দুই স্কন্ধের উপর রাখা।
৬) তহবন্দ ও চাদর একদিক্ অন্য দিকের সহিত বাঁধিয়া রাখা।
৭) রসি ইত্যাদি দ্বারা উভয়কে বাঁধিয়া রাখা।
৮) কোন সুগন্ধি বস্তুর বা সুগন্ধি ফলের বা তৃণের ঘ্রাণ লওয়া।
৯) উহা এরূপভাবে স্পর্শ করা যে, যেন শরীরে না লাগে।
১০) আতর বিক্রেতার দোকানে সুগন্ধি বস্তুর ঘ্রাণ লওয়ার উদ্দেশ্যে বসিয়া থাকা।
১১) কাপড়ের দ্বারা নাসিকা, থুৎনি কিম্বা চেহরার একপার্শ্ব ঢাকা।
১২) সুগন্ধ দায়ক খাদ্য ভক্ষণ করা।
১৩) অধোমুখে বালিশের উপর শয়ন করা, কিন্তু দুই গালকে বালিশের উপর রাখিলে কিম্বা মস্তককে বালিশের উপর রাখিলে, কোন দোষ হইবে না।
0 Comments