এহরাম বাঁধিবার স্থান কোথায়

প্রঃ     ওমরা কাহাকে বলে?

উঃ     উহার নিয়ত করিয়া এহরাম বাঁধিয়া কা'বাগৃহের তাওয়াফ করিয়া এবং ছাফা মারওয়ার মধ্যে কয়েকবার গমন করিয়া চুল মণ্ডন করিলে কিম্বা চুল ছাটিয়া ফেলিলে, ওমরা আদায় হইয়া যাইবে দোঃ।

প্রঃ    ওমরা করা কি?

উঃ     কেহ কেহ বলিয়াছেন যে, উহা জীবনের মধ্যে একবার আদায় করা ওয়াজেব, কেহ কেহ উহা সুন্নতে মোয়াক্কাদাহ বলিয়াছেন, ইহাই মজহাবে গ্রহণীয় মত। -দোঃ।

প্রঃ    ওমরা কোন সময় করিতে হয়?

উঃ     বৎসরের কোন এক সময় করিলে, উহা জায়েজ হইয়া যাইবে। রমজান মাসে উহা আদায় করা মোস্তাহাব। আরফা এবং উহার পরে চারি দিবস পর্যন্ত ওমরা করা মকরুহ তহরিমি। দোঃ,

প্রঃ     হজ্জ কয় প্রকার?

উঃ     ওমরার নিয়ত না করিয়া কেবল হজ্জ করাকে 'এফরাদ' বলা হয়। এক এহরামে হজ্জ ও ওমরা করাকে কেরান বলা হয়। প্রথমে হজ্জের কয়েক মাসের মধ্যে ওমরার জন্য এহরাম বাঁধিয়া ওমরার কার্য্যগুলি শেষ করা, তৎপরে ৮ই জেলহাজ্জ তারিখে হজ্জের জন্য, দ্বিতীয়বার এহরাম বাঁধিয়া হজ্জের কার্য্যগুলি করা ইহাকে তামাত্তো বলা হয়। শরহে বেকায়া, ১/৩২৬/৩৪০/৩৪১।

প্রঃ     এহরাম বাঁধিবার স্থান কোথায়?

উঃ     মদিনাবাসিরা জোল-হোলায়ফা' নামক স্থানে এহরাম বাঁধিবেন কুফা বাসেরা ও পূর্ব্বদেশবাসিরা 'জাতো এরক' নামক স্থানে, শামবাসিরা এবং যে মিসর ও মগরেব বাসিরা তবুকের পথ দিয়া গমন করেন, তাহারা 'জোহফা' নামক স্থানে নজদবাসিরা 'কর্ণ' নামক স্থানে এবং ঈমন বাসিরা 'ইয়ালামাম' নামক স্থানে এহরাম বাঁধিবেন।

    উক্ত এহরাম বাঁধার স্থানকে আরবিতে 'মিকাত' বলা হইয়া থাকে যদি কোন শামবাসি লোক মদিনাবাসিদিগের 'মিকাত' দিয়া গমন করে, তবে সেই স্থানে তাহাকে এহরাম বাঁধিতে হইবে।

         যদি কেহ পর পর দুইটি 'মিকাত' দিয়া গমন করে, তবে মক্কা শরিফ হইতে যে 'মিকাতটি দূরবর্তী হয়, তথা হইতে এহরাম বাঁধা, উত্তম। আর যদি নিকটবর্তী 'মিকাত' হইতে এহরাম বাঁধে, তবে মজহাবের ফৎওয়া গ্রাহ্য মতে কোন দোষ হইবে না।

        যদি কেহ এরূপ কোন পথ দিয়া মক্কা শরিফে যায় যে, সেই পথ উপরোক্ত কোন 'মিকাত' না পাওয়া যায়, তবে যে স্থানটি কোন একটি মিকাতের বরাবর বলিয়া অনুমিত হয় সেই স্থানেই এহরাম বাঁধিবে। আর যদি এরূপ পথ দিয়া গমন করে যে সেই স্থানটি দুই মিকাতের বরাবর বলিয়া অনুমিত হয়, তবে দূরবর্তী মিকাতের বরাবর স্থানে এহরাম বাঁধা উত্তম। আর যদি এরূপ পথ দিয়া গমন করে যে, উক্ত স্থানটি কোন মিকাতের বরাবর বলিয়া অনুমান করিতে না পারে, তবে মক্কা শরিফের দুই মঞ্জেল দূর পথ হইতে এহরাম বাঁধিবে।

        বিদেশী যে কোন লোক যে কোন উদ্দেশ্যে মক্কা শরিফে যাওয়ার ইচ্ছা করে, তাহার পক্ষে বিনা এহরামে উক্ত মিকাত অতিক্রম করা হারাম হইবে।

        আর যদি কেহ জেদ্দা যাওয়ার ইচ্ছা করে, তবে বিনা এহরামে মিকাত অতিক্রম করিতে পারে।

        মিকাতে পৌঁছিবার অগ্রে এহরাম বাঁধা হারাম হইবে না, বরং যদি হজ্জের কয়েক মাসের মধ্যে হয় এবং এহরামের নিষিদ্ধ কার্য্যগুলি না করার ভরসা করিতে পারে, তবে উহা উত্তম।

        আর হজ্জের মাসের পূর্ব্বে অর্থাৎ সওয়ালের পূর্ব্বে কিম্বা এহরামের নিষিদ্ধ কার্য্যগুলি করার সন্দেহ হইলে, মিকাতের পূর্ব্বে এহরাম বাঁধা মকরুহ।

        যে ব্যক্তি মিকাতের সীমার মধ্যে থাকে, সে ব্যক্তি বিনা এহরামে মক্কা শরিফে দাখিল হইতে পারে। এইরূপ মক্কাবাসিগণ হেরম শরিফ ছাড়িয়া হালাল স্থানের মধ্যে কাষ্ঠ সংগ্রহ করিতে গেলে, যতক্ষণ না মিকাত অতিক্রম করিয়া যায়, ততক্ষণ তাহাদের বিনা এহরামে মক্কা শরিফে ফিরিয়া যাওয়া জায়েজ হইবে, কিন্তু মিকাত অতিক্রম করিয়া গেলে, তাহাদের বিনা এহরাম মক্কা শরিফে ফিরিয়া যাওয়া জায়েজ হইবে না।

        মক্কা শরিফের যে সীমার মধ্যে কোন প্রাণী শীকার করা জয়েজ নহে, সেই সীমা পর্যন্ত স্থানগুলিকে হেরেম শরিফ বলে। আর উক্ত সীমার বাহিরের এবং মিকাতের মধ্যবর্তী স্থানকে হালাল কিম্বা হল্প বলা হয়। যে ব্যক্তি জেদ্দা, হেদ্দা ইত্যাদি হালাল স্থানে থাকে, সে ব্যক্তি হজ্জরে ওমরার ইচ্ছা করিলে, হালাল স্থান হইতে এহরাম বাঁধিয়া মক্কা শরিফে দাখিল হইবে। আর যে ব্যক্তি হেরম শরিফে থাকে, হজ্জ করার ইচ্ছা করিলে উক্ত হেরেম শরিফে এহরাম বাঁধিতে হইবে, আর ওমরা করার ইচ্ছা করিলে, হালাল স্থান হইতে এহরাম বাঁধিয়া আসিত হইবে। যদি কোন বিদেশী ওমরার এহরাম বাঁধিয়া মক্কা শরীফে দাখিল হইয়া ওমরা আদায় করে, তৎপরে হজ্জের পূর্ব্বে হেরম শরিফ হইতে হজ্জ করিতে রওয়ানা হয়, তবে তাহার পক্ষে হেরম শরিফ হইতে এহরাম বাঁধিতে হইবে।

        যদি কেহ এহরাম না বাঁধিয়া 'মিকাত' অতিক্রম করে, তবে তাহার পক্ষে মিকাতে ফিরিয়া যাইয়া এহরাম বাঁধা ওয়াজেব, আর যদি সেই ব্যক্তি হেরম শরিফ বা হালাল স্থানে এহরাম বাঁধে, তবে তাহার পক্ষে একটি কোরবানি করা ওয়াজেব হইবে।

Post a Comment

0 Comments