এহরাম বাঁধার নিয়ম কি

প্রঃ     এহরাম বাঁধার নিয়ম কি?

উঃ    যে ব্যক্তি এহরাম বাঁধার ইচ্ছা করে তাহার পক্ষে গোঁফ ছাটিয়া ফেলা, নখগুলি কাটিয়া ফেলা, বোগলের লোম ছিঁড়িয়া বা মণ্ডন করিয়া ফেলা, নাভির নীচের লোমগুলি মুণ্ডন করা, নিজের স্ত্রী সঙ্গে থাকিলে যদি হায়েজ ইত্যাদি স্ত্রীসঙ্গমের কোন বাধা না থাকে, তবে স্ত্রীসঙ্গম করিয়া লওয়া মোস্তাহাবঃ- লোবাবের টিকা, ৩৮। 

        বাহারোর-রায়েক নহরোল-ফায়েক ইত্যাদিতে আছে যে, যদি চুল মুণ্ডনের অভ্যাস থাকে, তবে উহা মুণ্ডন করা মোস্তাহাব, কিন্তু লোবাবের টিকায় আছে যে যত সময় অবধি এহরাম হইতে বাহির না হয়, ততক্ষণ চুল মুণ্ডন না করা মোস্তাহাব, কেননা এহরাম হইতে বাহির হওয়ার সময় যত অধিক পরিমাণ চুল মুণ্ডন করা হয় তত অধিক নেকি লাভ হইবে, আর হজরত আলি (রাঃ) ব্যতীত স্বয়ং হজরত নবি (সাঃ) ও তাঁহার সাহাবাগণ হজ্জ শেষ করিয়া চুল মুণ্ডন করিতেন। সাধারণ মক্কাবাসিগণ এহরাম বাঁধার নিয়ত করিয়া চুল মুণ্ডন করিয়া থাকে, ইহা গ্রহনযোগ্য বিষয় নহে। শাঃ ২/১৭০। লোঃ টিকা ৩৮।

        তৎপরে গরম পানি ইত্যাদি দ্বারা এহরামের নিয়ত গোসল করিবে, ওশনান (বা সাবান) ইত্যাদি দ্বারা শরীরে বা কেশের ময়লা ও ধুলি পরিস্কার করা মোস্তাহাব।

        যদি গোসল না করে, তবে ওযু করিয়া লইবে, কিন্তু গোসল করাই উত্তম বা সুন্নাতে মোয়াকাদাহ।

        গোসল বা ওজুর প্রথমে মেসওয়াক করিবে। গোসলের পরে চিরুনী দ্বারা কেশ পরিস্কার করিয়া লইবে। 

        উপরোক্ত গোসলটি পাকের জন্য নহে, বরং পরিস্কার ও পরিছন্নতার জন্য করিতে হয়, এই জন্য নাবালেগ এবং হায়েজ নেফাজ অবস্থায় স্ত্রীলোকেরা উক্ত গোসল করিবে এবং পানির অভাবে উক্ত গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মাম করিবে না, কেননা উহাতে অপরিচ্ছন্নতা হইয়া থাকে।

        গোসলের ওজু থাকিতে থাকিতে এহরাম বাঁধিবে, কেননা যদি গোসলের পরে তাহার ওজু ভঙ্গ হয়, তৎপরে এহরাম বাঁধে, অবশেষে ওজু করিয়া লয়, তবে একদল বিদ্বানের মতে উক্ত গোসলের ছওয়াব পাইবে না।

        যদি কেহ বিনা ওজু ও গোসলে এহরাম বাঁধে, তবে এহরাম জয়েজ হইবে, কিন্তু মকরহ হইবে।

        তৎপরে তৈল এবং সুগন্ধী বস্তু শরীরে লাগাইবে, ইহা মোস্তাহাব। যদি তাহার নিকট সুগন্ধী বস্তু না থাকে, তবে অন্যের নিকট চাহিবে না।

        কাপড়ে এরূপ সুগন্ধী বস্তু লাগাইবে না যাহার চিহ্ন বা রং বাকি থাকিয়া যায়।

        তৎপরে সেলাই করা বা কুসুমের বা অন্য কোন রঙের রঞ্জিত কাপড় খুলিয়া ফেলিবে।

        তৎপরে এরূপ একখানা তহবন্ধ এবং একখানা চাদর ব্যবহার করিবে যাহা সেলাই করা না হয়। উক্ত তহবন্দ ও চাদর নূতন হইতেও পারে বা পুরাতন পাক ধৌত করা হইতেও পারে।

        কাপড় দুইখানা শ্বেতবর্ণের হইলে ভাল হয়, কিন্তু কাল বা সবুজ বর্ণের হইলেও জায়েজ হইবে।

        তহবন্দটি নাভি হইতে জানু পর্যন্ত লম্বা হইবে, চাদরটি পৃষ্ঠ বক্ষ ও দুই স্কন্ধের উপর থাকিবে।

        তাওয়াফ করার সময় উক্ত চাদরটি পৃষ্ঠের উপর বাঁধিয়া উহার এক দিক ডাহিন হাতের দিকে বোগলের নীচে দিয়া তুলিয়া বাম স্কন্ধের উপর ছাড়িয়া দিবে।

        উক্ত প্রকার তহবন্দ ও চাদর ব্যবহার করা সুন্নত, কিন্তু যদি কেহ এরূপ একখানা তহবন্দ পরিয়া এহরাম বাঁধে যে, উহাতে তাহার গুপ্তাঙ্গ ঢাকিয়া যায়, তবে উহাতে এহরাম জায়েজ হইবে।

        এইররূপ যদি কেহ দুইখানা চাদর পর্যাক্রমে যা একখানার। উপর অন্য একখানা ব্যবহার করে তাহাও জায়েজ হইবে।

        যদি কেহ উক্ত চাদরে ঘুন্টি (বোতাম) বা কাঁটা অথবা গিরা লাগাইয়া দেয়, তবে উহাতে দোষ হইবে, কিন্তু ইহাতে কোরবানি করা ওয়াজেব হইবে না। লোবাবের টীকা, ৩৮/৩৯, শাঃ, ২/১৭০/১৭১।

        তৎপরে দুই রাকাত নামাজ পড়িবে,-

رَكَعَتَى صَلوةِ سُنَّةِ الأَحْرَامِ 

        "রাকায়াতাই ছালাতে সুন্নাতেল এহরাম" নিয়ত করিবে, উহার প্রথম রাকয়াতে সুরা কাফেরুন এবং দ্বিতীয় রাকয়াতে ছুরা এখলাছ পড়িবে।

        যদি মিকাতে কোন মছজিদ থাকে, তবে তথায় উক্ত দুই রাকয়াত নামাজ পড়া মোজতাহাব।

        যদি কেহ উক্ত দুই রাকয়াত নামাজ না পড়িয়া এহরাম বাঁধে, তবে এহরাম জায়েজ হইবে, কিন্তু মকরুহ হইবে।

        উক্ত দুই রাকয়াত নামাজ মকরুহ ওয়াক্তে পড়িবে না। উক্ত দুই রাকয়াত নামাজ ছালাম ফিরিয়া বসিয়া কেবলার দিকে মুখ করিয়া মুখ এবং অন্তরের ভক্তি ও নিয়ত সহ বলিবে।

اللهم إني أريدُ الْحَجَّ الْفَرْضَ فَيَسِرُهُ لِي وَتَقَبَّلُهُ مِنِّي نويتُ الحَجَّ الْقَرْضَ وَ أَحْرَمُتُ بِهِ لِلَّهِ تَعَالَى لَبَيْكَ بِحَقَّةٍ 

        আল্লা হোম্মা ইন্নি ওরিদোল হাজ্জাল-ফারদা, ফাইয়াছ- ছেরহো লি অতাকাব্বালহো মিন্নি। নাওয়ায়তোল হাজ্জাল-ফারজা অ-আহরামতো বেহি লিল্লাহে তায়া'লা লাব্বায়কা বেহাজ্জাতেন। অর্থঃ "ইয়া আল্লাহ, নিশ্চয় আমি ফরজ হজ্জের ইচ্ছা করিতেছি, তুমি আমার পক্ষে উহা, সহজ করিয়া দাও এবং আমার পক্ষ হইতে উহা কবুল করিয়া লও। আমি বিশুদ্ধ ভাবে আল্লাহতায়ালার জন্য ফরজ হজ্জের নিয়ত করিলাম এবং উহার জন্য এহরাম বাঁধিলাম। আমি হজ্জের জন্য তোমার দরবারে উপস্থিত হইয়াছি।"

        পাঠক, যিনি কেবল হজ্জের জন্য এহরাম বাঁধার নিয়ত করেন, তিনি ঐরূপ নিয়ত করিবেন। আর যিনি কেবল 'ওমরা' করার নিয়ত করেন, তিনি মুখে ও অন্তরের ভক্তি ও নিয়ত সহ বলিবেন-

اللَّهُمَّ إِنِّي أُرِيدُ الْعُمْرَةَ فَيَسْرُهَا لِي وَتَقَبَّلُهَا مِنْى نَوَيْتُ الْعُمُرةَ وَاحْرَمْتُ بِهَا لِلَّهِ تَعَالَى لَبَيْكَ بِعُمْرَهُ *

    'আল্লাহোম্মা ইন্নি ওরিদোল ওমরাতা ফাইয়াছছের হা- লি অতকাব্বালহা মিন্নি নাওয়ায়তোল ওমরাতা অ-আহরামতো বেহালিল্লাহে তায়ালা লাব্বায়কা বেওমরাতেন।

অর্থঃ 'ইয়া আল্লাহ, আমি ওমরার ইচ্ছা করিতেছি, তুমি আমার পক্ষে উহা সহজ করিয়া দাও এবং আমার পক্ষ হইতে উহা কবুল করিয়া লও। আমি বিশুদ্ধ ভাবে আল্লাহতায়ালার জন্য ওমরার নিয়ত করিলাম এবং উহার জন্য এহরাম বাঁধিলাম আমি ওমরার জন্য তোমার দরবারে উপস্থিত হইয়াছি।'

        আর যিনি হজ্জ এবং ওমরা এই উভয়ের ইচ্ছা করেন, তিনি এইরূপ নিয়ত করিবেন।

اللَّهُمَّ إِنِّي أُرِيدُ الْحَجَّ الْفَرْضَ وَ الْعُمْرَةَ فَيَسِّرُهُمَا لِي وَتَقَبَّلُهَا مِنِّي نَوَيْتَ الحَجَّ الْفَرْضَ وَ الْعُمْرَةَ وَ أَحْرَمُتُ بِهِمَا لِلَّهِ تَعَالَى لَبَّيْكَ بِحَجَّةٍ وَعَمْرَةٍ .

        আল্লাহোম্মা ইন্নি ওরিদোল হাজ্জাল ফারদা অল ওমরাতা ফাইয়াছছের হোমা লি অতাকাব্বালহা মিন্নি নাওয়ায়তোল হাজ্জাল ফারদা অল ওমরাতা অ-আহরামতো বেহেমা লিল্লাহে, তায়ালা লাব্বায়ক বেহাজ্জাতেন অ-ওমারাতেন।

অর্থঃ 'ইয়া আল্লাহ, নিশ্চয় আমি ফরজ হজ্জ ও ওমরার ইচ্ছা করিতেছি, তুমি আমার পক্ষে উভয় কার্য্য সহজ করিয়া দাও এবং আমার পক্ষ হইতে উভয় কার্য্য কবুল করিয়া লও। আমি বিশুদ্ধ ভাবে ফরজ হজ্জ এবং ওমরার নিয়ত করিলাম এবং উভয়ের জন্য এহরাম বাঁধিলাম। আমি হজ্জ ও ওমরার জন্য তোমার দরবারে উপস্থিত হইলাম।

        পাঠক যদি কেহ একবার হজ্জ না করিয়া থাকে, তবে তাহাকে ফরজ হজ্জের নিয়ত করা উচিত, কেননা কেবল হজ্জের নিয়ত করিলে, উহাতে ফরজ হজ্জ আদায় হয় কিনা, ইহাতে মতভেদ আছে, যদিও জাহেরে মজহাব অনুযায়ী উহাতে ফরজ আদায় হইতে পারে, অথচ ফরজ নিয়ত করাই এহতিয়াত। যদি দরিদ্র হজ্জ করিতে যায়, তবে সে যেন নফল হজ্জের নিয়ত না করিয়া ফরজ হজ্জের নিয়ত করে, কেননা যদি সে ব্যক্তি ইহার পরে হজ্জের উপযুক্ত হইয়া যায়, তবে তাহার পক্ষে দ্বিতীয়বার হজ্জ করা ফরজ হইবে। আরবের বিদ্বানগণ লিয়াছেন, দরিদ্র ব্যক্তি মিকাতে পৌঁছিলে তাহার উপর হজ্জ ফরজ হইয়া যায়, এক্ষেত্রে যদি সে নফল হজ্জের নিয়ত করে, তবে তাহার উপর হজ্জ ফরজ রহিয়া যাইবে।

        যদি কোন ব্যক্তি অন্যের বদলা হজ্জ করিতে যায়, তবে নিম্নোক্ত প্রকার নিয়ত করিবে-

اللهم إِنِّي أُرِيدُ الْحَجَّ الْفَرْضَ لِفُلَانِ فَيَسِّرُهُ لِي وَ تَقَبَّلُهُ مِنْهُ نَوَيْتُ الْجَجَّ الْفَرْضَ لِفُلَانِ وَأَحْرَمْتُ بِهَا لِفُلَانَ لِلَّهِتَعَالَى لِي لَبَّيْكَ بِحَجَّةٍ عَنْ فُلانٍ *

        "আল্লাহোম্মা ইন্নি ওরিদোল হাজ্জাল ফারদা লেফোলানেন ফাইয়াছছের-হো লি অতাকাব্বালহো মেনহো নাওয়ায়তোল হাজ্জাল ফারদা লাফোলানেন অ-আহরামতো বেহা লেফোলানেন লিল্লাহে তায়ালা লাকায়কা বেইজ্জাতেন আন ফোলালেন।"

    অর্থঃ "ইয়া আল্লাহ, আমি অমুকের জন্য ফরজ হজ্জের ইচ্ছা করিতেছি, তুমি উহা আমার জন্য সহজ করিয়া দাও এবং উক্ত ব্যক্তির পক্ষ হইতে উহা কবুল করিয়া লও আমি বিশুদ্ধ ভাবে আল্লাহতায়ালার উদ্দেশ্যে অমুকের জন্য ফরজ নিয়ত করিলাম এবং তাহার জন্য উহার এহরাম বাঁধিলাম। আমি হজ্জের জন্য অমুকের পক্ষ হইতে তোমার দরবারে উপস্থিত হইলাম।

        পাঠক, আরবী 'ফোলান' শব্দের স্থলে যে ব্যক্তির বদলা হজ্জ করা হইতেছে তাহার নাম লইতে হইবে। মনে ভাবুন, যদি তাহার নাম আব্দুল্লাহ হয়, তবে 'লেফোলানেন', স্থলে 'লে আবদেল্লাহ' বলিবে। এইরূপ তোমরা করার ইচ্ছা করিলে 'হাজ্জাল ফারদা' স্থলে 'ওমরাতা' শদ বলিবে, আর হজ্জ এবং ওমরা উভয় করিতে ইচ্ছা করিলে, "হাজ্জাল-ফারদা" শব্দের পরে 'অল ওমরাতা' শব্দ যোগ করিবে।

        তৎপরে নিম্নোক্ত 'লাব্বায়কা' দোয়া পড়িবে-

        লাব্বায়কা আল্লাহোম্মা লাব্বায়কা, লাব্বায়কা লাশরিকালাকা, লাব্বায়কা ইন্নাল হামদা অন্নে'মাতা লাকা, অল্লোলকা, লাশারিকা লাকা।

(১) 'ইয়া আল্লাহ আমি তোমার দরওয়াজায় বারম্বার উপস্থিত হইয়াছি।

২) আমি তোমার দরওয়াজায় উপস্থিত হইয়াছি। তোমার কোন শরিক নাই।

৩)- তোমার দরবারে উপস্থিত হইয়াছি, নিশ্চয় সমস্ত প্রসংসা

ও সমস্ত দানের শোকর (কৃতজ্ঞতা) তোমার জন্য।

8) এবং রাজ্য (বাদশাহি) তোমার জন্য।

৫) তোমার কোন শরিক নাই।

ইহার পরে জনাব নবি (ছাঃ) এর উপর দরুদ শরিফ পাঠ করিবে। আর যদি ইচ্ছা করে, তবে নিম্নোক্ত দোয়া পড়িতে পারে,-

        'আল্লাহোম্মা ইন্নি আছয়ালোকা রিদাকা ওয়াল-জান্নাতা অ-আউজো বেকা মেন গাঁদাবেকা আন্নার। আল্লাহোম্মা উহারেমো লাকা শা'রি অবাশারি অজাছাদি, অজামিয়া জাওয়ারেহি মেনাত্তিবে অন্নেছায়ে অকুল্লা শাইয়েন হারাম্মতাহু আলাল মোহরেমে আবতাগি বেজালেকা অজ হাকাল কারিম, ইয়া রাব্বাল আ'লামিন।

        (মসলা) যদি কেহ দাঁড়াইয়া কিম্বা গমন করিতে করিতে অথবা উটের উপর সওয়ার হইয়া কিম্বা কিছু পথ চলিয়া এহরাম বাঁধে তবে উহা জায়েজ হইবে।

        (মসলা) যদি কেহ অন্তরে নিয়ত করে কিন্তু মুখে উহা উচ্চারণ না করে তবে উহা জায়েজ হইবে। আর যদি কেহ উহা মুখে উচ্চারণ করে, কিন্তু অন্তরে নিয়ত না করে, তবে এহরাম জায়েজ হইবে না।

        (মসলা) যদি মুখে হজ্জের কথা উচ্চারণ করে, কিন্তু অন্তরে ওমরার নিয়ত করে, অথবা মুখে ওমরার উচ্চারণ করে কিন্তু অন্তরে হজ্জের নিয়ত করে, তবে অন্তরে যাহা নিয়ত করিয়াছে তাহাই হইবে।

        (মসলা) 'লাব্বায়কা' দোয়াটী মৌখিক উচ্চারণ করা ওয়াজেব, যদি কেহ মুখে উচ্চারণ না করে, বরং কেবল অন্তরে উহা ধারণা করে তবে এহরাম জায়েজ হইবে না। যে ব্যক্তি বোবা তাহার পক্ষে এসম্বন্ধে কি করা উচিত, ইহাতে মতভেদ হইয়াছে, এমাম মোহাম্মদ (রঃ) বলিয়াছেন, তাহার পক্ষে জিহবা নাড়ান ওয়াজেব কিন্তু মুহিত আছে যে, জিহবা নাড়ান মোস্তাহাব,

        (মসলা) যদি কেহ লাব্বায়কা দোয়া উচ্চারণ না করিয়া কলেমা, তছবিহ, তকবির কিম্বা আলহমদো লিল্লাহ পাঠ করে, তবে এহরাম জায়েজ হইবে। যদি কেহ লাববায়কা বা জেকর ফার্সি, তুর্কি, হিন্দি ইত্যাদি ভাষায় অনুবাদ করিয়া উচ্চারণ করে, তবে এহরাম জায়েজ হইবে।

        (মসলা) এহারাম বাঁধার সময় একবার লাববায়কা দোয়া উচ্চারণ করা ফরজ। প্রথম মজলিশে বা অন্যান্য মজলিশে কয়েক বার উহা উচ্চারণ করা ছুন্নত। অবস্থার পরিবর্তন কালে উহা পাঠ করা মোস্তাহাব।

        দাঁড়াইয়া, বসিয়া, সওয়ার অবস্থায়, সওয়ারি হইতে নামিবার সময় উটের দাঁড়ান অবস্থায়, ভ্রমণ করা অবস্থায়', বে- ওজু, নাপাক ও হায়েজ অবস্থায়, সূর্য্য উদয় ও অস্তমিত হওয়ার কালে, উচ্চস্থানে উঠিবার সময়, নিম্ন স্থানে নামিবার সময়, ছোবেহ ছাদেক হওয়ার সময়, ওয়াক্তিয়া নামাজগুলি শেষ করিয়া, প্রত্যেক ফরজ ওয়াজেব, ছুন্নত ও নফল নামাজ শেষ করিয়া, একে অন্যের সহিত সাক্ষাৎ করা কালে, নিদ্রা হইতে চৈতন্য লাভ করা কালে, উটকে এক পথ হইতে অন্য পথে ফিরাইবার সময় বেশী পরিমাণ
লাকবায়কা বলা মোস্তাহাব।

        লাব্বায়কা বলা শুরু করিয়া ধারাবাহিক ভাবে তিনবারবলা মোস্তাহাব।

        লাব্বায়কা বলিতে আরম্ভ করিয়া কোন কথা বলিবে না। উক্ত সময় অন্য ব্যক্তির পক্ষে তাহাকে সালাম করা মকরুহ। যদি সে কাহারও সালামের জওয়াব দেয়, তবে ইহা জয়েজ হইবে।

        দুইজন লোক একসঙ্গে সুর মিলাইয়া লাব্বায়কা বলিবে না মধ্যম ধরণের আওয়াজ লাব্বায়কা বলা মোস্তাহাব, কিন্তু যদি সে ব্যক্তি শহরের মধ্যে থাকে, তবে রিয়াকারির ভয়ের জন্য আওয়াজের সহিত উহা বলা মোস্তাহাব হইবে না। স্ত্রীলোকে চুপে চুপে লাব্বায়কা বলিবে, কেননা তাহার শব্দ আওরত (গোপনবস্তু) মক্কা শরিফের মসজিদে এরূপভাবে লাব্বায়কা বলিবে যেন কোন নামাজি বা তাওয়াফকারির মন চঞ্চল না হয়। মিনা, আরফাত, মোজাদালেফাতে লাব্বায়কা বলিবে। তাওয়াফ ও ওমরার জন্য ছাফা ও মারওয়ায় দৌড়ান কালে লাব্বায়কা বলিবে না।

        (মসলা) যদি কেহ কিসের জন্য এহরাম বাঁধিয়াছে ইহা ভুলিয়া যায়। তবে তাহার পক্ষে হজ্জ এবং এহরাম উভয় করা ওয়াজেব হইবে। লোবাবের টীকা, ৩৮/৪৪।

Post a Comment

0 Comments