স্ত্রীলোকের এহরাম কেমন হবে


প্রঃ     স্ত্রীলোককিরূপে এহরাম বাধিবে?

উঃ     স্ত্রীলোকেরা ১২টা বিষয় ব্যতীত সমস্ত কার্য্য পুরুষের ন্যায় এহরাম বাঁধিবে।

প্রঃ    উক্ত ১২টা বিষয় কি কি?

উঃ     ১) স্ত্রীলোকেরা এহরাম অবস্থায় সেলাই করা কাপড় ব্যবহার করিতে পারিবে, কিন্তু কুসুম, জাফেরাণ ইত্যাদি রঙ্গে রঞ্জিত কাপড় পরিধান করিবে না। 

২) মোজাদ্বয় ব্যবহার করিতে পারিবে।

৩) দুই হাতে 'দস্তানা' ব্যবহার করিতে পারিবে।

৪) নিজের মস্তক ঢাকিতে পারিবে, একটি পৃথক বস্ত্র দ্বারা মুখ ঢাকিয়া রাখিতে পারিবে, বরং উহা ওয়াজেব।

৫) উচ্চ শব্দে লাব্বায়কা বলিবে না।

৬) তাওয়াফ কালে দৌড়বে না।

৭) তাওয়াফ করা কালে পুরুষের ন্যায় চাদর পরিধান করিবেন না।

৮) ছাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী দুই মিলের মধ্যে দৌড়বেন না।

৯) মস্তক মুণ্ডন করিবে না, বরং চুল ছাটিয়া ফেলিবে।

১০) পুরুষ দিগের জনতার মধ্যে 'হাজারে আছওয়াদ' চুম্বন করিবে না।

১১) উক্ত অবস্থায় ছাফা পবর্বতের উপর উঠিবে না।

১২) উক্ত অবস্থায় মাকামে এবরাহিমে নামাজ পড়িবে না।

(মসলা) যদি স্ত্রীলোকের হায়েজ অথবা নেফাজের ওজরে তাওয়াফে জিয়ারত করিতে বিলম্ব করে কিম্বা বিদায় কালের তাওয়াফে জিয়ারত করিতে বিলম্ব করে কিম্বা বিদায় কালে তাওয়াফ ত্যাগ করে, তবে তাহাদের উপর কোরবাণি করা ওয়াজেব হইবে না। লোবাবের টিকা-৫০।

প্রঃ     যদি কেহ হজ্জ করিতে গিয়া অচৈতন্য বা পীড়া বশতঃ নিদ্রিত হইয়া পড়ে, তবে কি হইবে?

উঃ     যদি তাহার সঙ্গী বা অন্য কোন লোক তাহার নিজের হজ্জের নিয়ত করার পূর্ব্বে হউক বা পরে হউক, তাহার হুকুমে হউক, আর নিজের ইচ্ছায় হউক, বা পরের ইচ্ছায় হউক, তাহার পক্ষ হইতে হজ্জের নিয়ত করিয়া লাব্বায়কা বলে, তবে তাহার নিজের এবং উক্ত অচৈতন্য বা পীড়ত ব্যক্তির উভয় এহরাম জায়েজ হইবে।

        উক্ত পীড়িতের সেলাই কাপড় খুলিয়া না ফেলিলেও এহরাম জায়েজ হইবে এবং ইহাতে তাহার ফরজ হজ্জ আদায় হইয়া যাইবে।

        যদি উক্ত অচৈতন্য ব্যক্তি এহরামের কোন নিষিদ্ধ কাৰ্য্য করিয়া ফেলে, তবে তাহার উপর কোরবানি বা ছক্কা ওয়াজেব হইবে।

        যদি উক্ত এহরামকারি এহরামের কোন নিষিদ্ধ কার্য্য করে তবে তাহার নিজের উপর কোরবাণি ওয়াজেব হইবে, কিন্তু অচৈতন্যের পক্ষ হইতে অন্য কোরবানি করা ওয়াজেব হইবে না।

        এই এহরামকারি বদলা হজ্জ আদায়কারির ন্যায় দোয়া পড়িবে এবং নিয়ত করিবে।

        যদি উক্ত অচৈতন্য বা পীড়া বশতঃ নিদ্রিত ব্যক্তি তাহার পক্ষ হইতে অন্যের এহরাম বাঁধার পরে চৈতন্য লাভ করে বা জাগরিত হয়, তবে হজ্জের অবশিষ্ট কার্য্যগুলি তাহার নিজে করাও নিষিদ্ধ বিষয়গুলি ত্যাগ করা ওয়াজেব হইবে।

        আর যদি সে চৈতন্য লাভ না করে, একদল বিদ্বান্ বলেন তাহার সঙ্গীরা তাহার পক্ষ হইতে তাওয়াফ করিলে এবং আরফাতে দাঁড়াইলে উহার হজ্জ আদায় হইয়া যাইবে। মবছুত ও এনায়া প্রণেতা ইহা সমধিক সহিহ্ মত বলিয়াছেন।

        আর কাজিখান ও বাদায়ে প্রণেতা বলিয়াছেন, তাহার সঙ্গি দিগের পক্ষে তাহাকে পৃষ্ঠে করিয়া তাওয়াফ করান এবং এক নিমেষের জন্যে আরফাতে হাজির করা ওয়াজেব, কি মোজদালেফাতে হাজির করা, কঙ্কর নিপেক্ষ স্থলে ও মারওয়ার স্থলে হাজির করা ওয়াজেব নহে, ইহা এমাম মোহাম্মদের মত। মোল্লা আলি কারি ইহা উৎকৃষ্ট মত বলিয়াছেন।

        আর যদি কেহ এহরাম বাঁধার পরে অচৈতন্য হইয়া পড়ে, তবে সকলের মতে তাহাকে তাওয়াফ করান ও আরফাতে হাজির করা ওয়াজেব হইবে। লোবাবের টীকা, ৪৭/৪৮।

Post a Comment

0 Comments