মসআলা- শরীরে অথবা কাপড়ে নাপাক বস্তু লাগিলে পানি দ্বারা ধৌত করিলে পাক হইবে, যদিও নাপাক বস্তুর দাগ দূরীভূত না হয়।
মসআলা- যদি নাপাক কাপড়ের দাগ সাবান ইত্যাদি দ্বারা না উঠে যেমন নাপাক তৈল ইত্যাদি, তবে উহা তিনবার যৌত ফরিলে ও প্রতিবারে ভাল করিয়া নিংড়াইলে পাক হইবে।
মসআলা- চাটাই, পাটী, কাঁথা, বালিশ, লেপ, তোষক প্রভৃতি নাপাক হইলে প্রথমবার ধৌত করিয়া কোন উচ্চস্থানে রাখিবে ধীরে ধীরে পানি সম্পূর্ণ ঝরিয়া গেলে এবং ঝরা বন্ধ হওয়ার পর দ্বিতীয়বার ধৌত করিয়া ঐরূপে পানি ঝরাইয়া ফেলিবে, এই প্রকার তৃতীয়বার করিলে উক্ত বস্তু পাক হইবে।
মসআলা যদি কোন স্থানে নাপাক বস্তুর চিহ্ন না থাকে, তাহা হইলে ঐস্থানে নামায দুরস্ত হইবে কিন্তু তাইয়াম্মুম দুরস্ত হইবে না। যে নাপাকী দেখা যায় না, যেমন প্রস্রাব, মদ ইত্যাদি শুষ্ক হইবার পর যাহার কোন চিহ্ন দেখা যায় না, এই প্রকার নাজাসাত শরীরে লাগিলে তিনবার ধৌত করিলেই পাক হইবে। আর কাপড় ইত্যাদিতে লাগিতে তিনবার ধৌত করিবে এবং প্রতিবারে নিংড়াইতে হইবে। শেষ বারে উত্তমরূপে নিংড়াইবে। আর যে বস্তু নিংড়ান সম্ভব নহে উহা ধৌত করিয়া রাখিয়া দিবে যেন সমস্ত পানি ঝরিয়া যায়। এইরূপ তিনবার করিলে উহা পাক হইবে।
মসআলা- চামড়ার মোজা অথবা জুতার নাপাকী গোবর, পায়খানা, রক্ত ইত্যাদি লাগিয়া শুকাইয়া গেলে মাটিতে এমন ভাবে মুছিয়া ফেলিবে যেন নাপাকীর কোন চিহ্ন বাকী না থাকে তাহা হইলে উহা পাক হইবে, এবং খোঁচাইয়া ফেলিলেও পাক হইবে। আর যদি শুকনা না হয় তবুও এত রগড়াইবে ও ঘষিবে যেন নাপাকীর চিহ্ন বাকী না থাকে, তবে পাক হইয়া যাইবে।
মসআলা- যদি এমন কোন নাপাকী কাপড়ে লাগে যাহা কয়েকবার ধৌত করার পর কিংবা নাপাকী দূর হওয়ার পরও দুর্গন্ধ না যায় অথবা কিছু দাগ থাকে তবুও কাপড় পাক হইবে। সাবান লাগাইয়া দাগ উঠানো অথবা দুর্গন্ধ দূর করার প্রয়োজন নাই।
মসআলা- যদি প্রস্রাবের মত কোন নাপাক বস্তু যাহা গাঢ় নয়, জুতা বা চামড়ার মোজায় লাগিয়া যায় তবে বিনা ধোওয়ায় পাক হইবে না।
মসআলা পানির মত পাতলা কোন পাক জিনিষ দ্বারা নাপাকী ধৌত করা দুরস্ত। গোলাপ পানি অথবা কোন আরক অথবা সিরকা দ্বারা ধৌত করিলেও উহা পাক হইবে, কিন্তু ঘি, তৈল এবং দুধ প্রভৃতি এমন জিনিষ দ্বারা ধৌত করা দূরস্ত নহে যাহাতে চর্বি জাতীয় জিনিষ থাকে, উহার ধারা ধৌত করিলে উক্ত বস্তু নাপাক থাকিয়া যাইবে।
মসআলা আয়না, গ্লাস বা কাঁচ, ছুরি, চাকু, স্বর্ণ রৌপ্যের অলঙ্কার তামা, . লোহা ও সীসা প্রভৃতি বস্তু যদি নাপাক হয় তবে খুব মুছিয়া ফেলিবে, বগড়াইলে অথবা মাটির দ্বারা মাজিলে পাক হইবে। কিন্তু যদি নক্সা করা বস্তু হয় তবে বিনা ধোওয়ায় পাক হইবে না।
মসআলা কোন জায়গায় নাপাকী পড়িসা এরূপ ভাবে শুকাইরা গেল যে, নাপাকীর চিহ্ন পর্যন্ত চলিয়া গেল এবং নাপাকীর কোন দাগ বা গন্ধ বাকী রহিল না, তবে উক্ত জায়গা পাক হইবে। কিন্তু এমন জায়গায় তাইয়াম্মুম কর। দুরস্ত নয়। নামায পড়া নিঃসন্দেহে দুরস্ত হইবে। যদি পাথর, চুন, সুরকী দ্বারা মাটিতে জমাট করা হইয়া থাকে যাহা না খুদিয়া মাটি হইতে আলগা করা যায় না তাহারও এই একই হুকুম। অর্থাৎ নাপাকীর চিহ্ন দূরীভূত হইলেই পাক হইবে।
মসআলা যে ইট কেবল মাটিতে বিছাইয়া রাখা হইয়াছে, চুন, সুরকী দ্বারা জমাট করা হয় নাই উহা শুকাইলে পাক হইবে না বরং ধুইতে হইবে।
মসআলা- জমিনের অকর্তিত ঘাসের নাপাকী শুকাইয়া গেলেও নাপাকীর চিহ্ন দূরীভূত হইলে উহা পাক হইবে। কিন্তু কাটা ঘাস বিনা ধোওয়ায় পাক হইবে না।
মসআলা- চাকু, ছুরি এবং মাটি ও তামা প্রভৃতির বাসন প্রজ্বলিত অগ্নিতে ফেলিয়া দিলে পাক হইয়া যায়।
মসআলা- যদি কোন নূতন বাসন নাপাক হয়, আর উহা নাপাকী শোষণ করিয়া লয়, তবে শুধু ধুইলেই পাক হইবে না বরং উহাতে পানি ভরিয়া দিবে, তারপর যখন নাপাকীর আছর উক্ত পানিতে আসিয়া যাইবে তখন পানি ফেলিয়া দিয়া আবার পানি ভরিয়া রাখিবে। এইরূপে বার বার করার পর যখন নাপাকীর চিহ্ন সম্পূর্ণ চলিয়া যাইবে রং বা দুর্গন্ধ বাকী থাকিবে না তখন উহা পাক হইবে।
মসআলা- নাপাক মাটি দ্বারা যদি কোন কুম্ভকার বাসন তৈয়ার করে তবে যতক্ষণ কাঁচা থাকে ততক্ষণ নাপাক, যখন আগুনে পোড়ান হইবে তখন উহা পাক হইয়া যাইবে।
মসআলা- মধু, চিনির শিরা, ঘি অথবা তৈল নাপাক হইলে, উহা যে পরিমাণ নাপাক হইয়াছে উহার সঙ্গে ঠিক সেই পরিমাণ বা বেশী পানি মিশাইয়া জ্বাল দিবে। যখন পানি বাষ্প হইয়া যাইবে তখন আবার পানি মিশাইয়া জ্বাল দিবে, এইরূপ তিন বার করার পর উক্ত দ্রব্য পাক হইবে। অন্যথায় উক্ত দ্রব্যের সঙ্গে পানি মিশাইয়া নাড়াচাড়া করিতে থাকিতে। যখন উহা পানির উপরে আসিবে তখন কোন প্রকারে উহাকে উঠাইয়া লইবে। এইরূপ তিনবার পানি মিলাইয়া নাড়াচাড়ার পর উঠাইয়া লইলে পাক হইবে। আর যদি ঘি জমিয়া গিয়া থাকে তবে উহার সহিত পানি মিশাইয়া আগুনের উপর রাখিয়া গলাইবার পর উঠাইয়া লইবে।
মসআলা নাপাক রং দ্বারা কাপড় রঙ্গাইলে কাপড় খুব ধৌত করার পর যখন পরিষ্কার পানি বাহির হইবে তখন কাপড়ে রং থাকিলেও পাক হইবে।
মসআলা যে স্থানে গোবর দ্বারা লেপা হইয়া থাকে তাহা নাপাক, উহার উপর কোন পাক বস্তু না বিছান পর্যন্ত নামায দুরস্ত নয়।
মসআলা নাপাক বিছানায় শুইলে যদি ঘামের দ্বারা শরীর ও কাপড় ভিজিয়া যায় তবে যে পর্য্যন্ত বিছানা হইতে কিছু নাপাকী আসিয়া শরীরে বা কাপড়ে না লাগে সে পর্যন্ত উক্ত শরীর ও কাপড় নাপাক হইবে না যদি লাগিয়া যায় নাপাক হইবে।
মসআলা- নাপাক মেহদি হাতে পায়ে লাগাইলে তিনবার ভালমত ধুইলে পাক হইবে। যদিও হাতে পায়ে রং লাগিয়া থাকে।
মসআলা নাপাক তৈল মাথায় বা শরীরে মাখিলে রীতিমত তিন বার ধুইয়া ফেলিলেই পাক হইবে। সাজিমাটি বা সাবান লাগাইয়া তৈল উঠান ওয়াজেব নহে।
মসআলা- যদি কুকুরের ছানা আটায় মুখ দেয় অথবা বানরে ঝুটা করিয়া দেয়, তবে উহার যে অংশে মুখ লাগাইয়াছে ঐ অংশ ফেলিয়া দিবে, বাকী খাওয়া দুরস্ত। আর যদি শুকনা আটা হয় তবে আটার যেখানে উহার মুখের লালা লাগিয়াছে সেইটুকু ফেলিয়া দিবে বাকী সবটুকু পাক হইবে।
মসআলা যদি কোন তক্তা এক দিক পাক আর অপর দিক নাপাক হয় তবে উহা চিরিবার যোগ্য হইলে উহার অপর পৃষ্ঠে নামায পড়িতে পারিবে। আর যদি ততটা মোটা না হয় তবে দুরস্ত হইবে না।
মসআলা ঢেলা দ্বারা এস্তেনজা করার পর পানি দ্বারা যৌত করা ভুন্নত। কিন্তু নাপাকী হাতের তালু অর্থাৎ এক টাকা পরিমাণের বেশীহইলে ধৌত করা ওয়াজেব। আর যদি নাপাকী ছড়াইয়া না পড়ে, তবে কেবল কুলুখ (ঢেলা) দ্বারা পাক (এস্তেনজা) করিয়া নামায পড়িলে দূরস্ত হইবে তবে ছুন্নতের খেলাফ হইবে।
মসআলা দাঁড়াইয়া প্রস্রাব করা নিষেধ।
মসআলা প্রস্রাবের পর কুলুখ লওয়া সুন্নাতে মোয়কাহ।
মসআলা প্রস্রাব পায়খানার সময় কেবলার দিকে মুখ ও পিঠ করা নিষেধ।
মসআলা ছোট ছেলেমেয়েদিগকেও কেবলার দিকে বসাইয়া পায়খানা ও প্রস্রাব করানো মাহ এবং নিষেধ।
মসআলা এস্তেনজার অবশিষ্ট পানি দ্বারা অজু দুরস্ত এবং অজুর অবশিষ্ট পানিও এস্তেনজায় ব্যবহার করা দুরস্ত কিন্তু না করাই ভাল।
মসআলা যখন পায়খানায় যাইবে তখন দরজার বাহিরে বিস্মিল্লাহ বলিয়া আল্লাহুমা ইন্নী আউজুবেকা মিনাল খোবসে ওয়াল্ খাবায়েস পড়িবে। খালি মাথায় পায়খানায় যাইবে না। যদি কোন আংটি প্রভৃতিতে আল্লাহ ও রসুলের নাম থাকে তবে উহা খুলিয়া রাখিয়া যাইবে। পায়খানায় প্রথমে বাম পা রাখিবে এবং ভিতরে থাকা কালীন আল্লাহর নাম লইবে না। যদি হাঁচি আসে, তবে মনে মনে "আলহামদুলিল্লাহ" বলিবে। মুখে কিছু বলিবে না। ওখানে কোন কথা বলিবে না। বাহির হইবার সময় ডাহিন পা আগে বাহির করিবে এবং দরওয়াজার বাহিরে আসিয়া গুফরানাকা আল্হামদুলিল্লা হিল্লাযি আযহাবা আন্নীল আযাওয়া আফানী, পড়িবে। এন্তেজার পর বাম হাত মাটিতে ঘসিয়া বা রগড়াইয়া ধুইয়া ফেলিবে।
0 Comments