নারীর সৌন্দর্য প্রকাশে বিধি-নিষেধ ও তার সীমারেখা

        দৃষ্টি সংযমের নির্দেশাবলী নারী-পুরুষের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। আবার কতক নির্দেশ নারীদের জন্য নির্দিষ্ট। তার মধ্যে প্রথমটি হলো, একটি নির্দিষ্ট সীমারেখার বাইরে নিজের সৌন্দর্য প্রদর্শন করা চলবে না।

         এই নির্দেশের উদ্দেশ্য সম্পর্কে চিন্তা করার পূর্বে একবার ঐসব নির্দেশ স্বরণ করা দরকার, যা ইতিপূর্বে পোশাক ও সতরের অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে। মুখমণ্ডল ও হস্তদ্বয় ব্যতীত গোটা দেহ (সতর) যা পিতা, চাচা, ভ্রাতা ও পুত্রের নিকটেও খোলা বৈধ নয়। এমন কি কোন নারীর সতর অপর নারীর সামনে খোলাও মাকরূহ। এ সত্যকে সামনে রেখে সৌন্দর্য প্রকাশের সীমারেখা আলোচনা করা আবশ্যক।

    ১. নারীকে তার সৌন্দর্য স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, সৎ পুত্র, ভ্রাতা, ভাইপো ও ভাগিনার সম্মুখে প্রকাশের অনুমতি দেয়া হয়েছে।

    ২. তাকে আপন গোলামের সম্মুখে সৌন্দর্য প্রদর্শনের অনুমতিও দেয়া হয়েছে।

    ৩. সে এমন লোকের সম্মুখেও সৌন্দর্য সহকারে আসতে পারে, যে তার অনুগত ও অধীন এবং নারীদের প্রতি যার কোন আগ্রহ নেই।

    ৪. যে সকল বালকের মধ্যে এখনও যৌন অনুভূতির সঞ্চার হয়নি, তাদের সম্মুখেও সে সৌন্দর্য প্রদর্শন করতে পারে। কুরআনে আছে:

أو الطفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاءِ .

        অর্থাৎ, "এমন বালক যে নারীদের গোপন কথা সম্পর্কে এখনও বুঝে ওঠেনি।

        ৫. সব সময় মেলামেশা করা হয় এরূপ মেয়েদের সামনে মেয়েদের সৌন্দর্য প্রদর্শন জায়েয। আল কুরআনে "সাধারণ নারীরা শব্দের পরিবর্তে আপন নারীরা ব্যবহার করা হয়েছে। এর দ্বারা আপন মহিলা আত্মীয়-স্বজন অথবা আপন শ্রেণীর মহিলাদেরকেই বুঝানো হয়েছে। এমন নারী যাদের চালচলন সন্দেহযুক্ত অথবা যাদের চরিত্রে কলংক ও লাম্পট্যের ছাপ আছে, এ ধরনের সকল নারীর সম্মুখে নারীর সৌন্দর্য প্রদর্শনের অনুমতি নেই। কেননা এরাও অমঙ্গলের কারণ হতে পারে। শামদেশে মুসলমানদের যাওয়ার পর মুসলমান মহিলারা ইহুদী-খৃষ্টান ম-ি হলাদের সাথে মেলামেশা আরম্ভ করলে হযরত ওমর (রা)-কে লিখে জানালেন, যেন মুসলমান মহিলাদেরকে আহলে কিতাব মহিলাদের সাথে হাম্মামে (স্নানাগারে) প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়। (তাফসীরে ইবনে জারীর)

        হযরত ইবনে আব্বাস (রা) ব্যাখ্যা করে বলেন যে, মুসলমান মহিলারা কাফির ও যিম্মি নারীদের সামনে ততটুকুই প্রকাশ করতে পারে, যতটুকু অপরিচিত পুরুষের সামনে করতে পারে। (তাফসীরে কবীর)

        কোন ধর্মীয় স্বাতন্ত্র বজায় রাখা এসবের উদ্দেশ্য ছিল না, বরং যে সক নারীর স্বভাব-চরিত্র ও তাহযীব-তমদ্দুন জানা ছিল না, অথবা জানা থাকলে তা ইসলামের দৃষ্টিতে আপত্তিজনক ছিল-এই ধরনের নারীর প্রভাব হতে মুসলমান নারীদেরকে রক্ষা করাই এর উদ্দেশ্য ছিল। এখন অমুসলমান নারীদের মধ্যে। যারা সম্ভ্রান্ত ও লজ্জাশীলা, তারা কুরআনের অশুঃজন্টশুশুত্র 'আপন নারীদের মধ্যেই শামিল। এ সকল সীমারেখা সম্পর্কে চিন্তা করলে দুটি বিষয় জানতে পারা যায়ঃ

     ১. সে সৌন্দর্য প্রকাশের অনুমতি এই সীমাবদ্ধ গণ্ডির মধ্যে দেয়া হয়েছে তা আওরাতের আওতাবহিভূর্ত অংগাদির অর্থাৎ অলংকারাদি পরিধান করা, সুন্দর বেশভূষায় সজ্জিত হওয়া, সুগন্ধি ব্যবহার করা, কেশ বিন্যাস করা এবং অন্যান্য বেশভূষা, যা নারীরা নারীসুলভ চাহিদা মোতাবেক আপন গৃহে পরিধান করতে। অভ্যস্ত হয়।

    ২. এই ধরনের বেশভূষা ঐ সকল পুরুষের সামনে প্রদর্শনের অনুমতি দেয়া হয়েছে, যাকে নারীদের জন্য চিরতরে নিষিদ্ধ করা হয়েছে অথবা ঐ সকল পুরুষের সম্মুখে, যাদের মধ্যে কোন যৌন-বাসনা নেই অথবা ঐ সকল লোকের সামনে যারা কোন অনাচার-অমঙ্গলের কারণ হবে না। নারীদের ক্ষেত্রে আপন নারীরা শর্ত আরোপ করা হয়েছে অধীনস্থদের জন্য যৌন বাসনাহীন এবং বালকদের জন্য নারীদের গোপন বিষয় সম্পর্কে অপরিজ্ঞাত শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এর দ্বারা জানা গেল যে, শরীয়ত-প্রণেতার উদ্দেশ্য হলো নারীদের সৌন্দর্য প্রদর্শন এমন গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা, যাতে তাদের বেশভূষার দ্বারা কোন প্রকার অবৈধ উত্তেজনা সৃষ্টি হতে এবং উচ্ছৃঙ্খলতার আশংকা হতে পারে না।

         এ গণ্ডির বাইরে যত পুরুষ আছে তাদের সম্পর্কে এ নির্দেশ করা হয়েছে যে, তাদের সম্মুখে সৌন্দর্য ও বেশভূষা প্রদর্শন চলবে না, উপরন্ত পথ চলার সময় এমনভাবে চলবে না, যাতে গোপন সৌন্দর্য ও বেশভূষা পদধ্বনির দ্বারা প্রকাশিত হয়। ফলে পুরুষের দৃষ্টি উক্ত নারীর প্রতি নিবদ্ধ হয়। এ আদেশ দ্বারা যে সৌন্দর্য পরপুরুষ থেকে গোপন করতে বলা হয়েছে, তা ঠিক তাই, যা উল্লেখিত সীমাবদ্ধ গণ্ডির মধ্যে প্রকাশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য অতি স্পষ্ট। মহিলারা যদি বেশভূষা করে এমন ব্যক্তির সম্মুখে আসে যারা যৌন-লালসা রাখে এবং মুহ- াররাম না হওয়ার কারণে যাদের মনের যৌন-লালসা পবিত্র ভাবধারায় পরিবর্তিত হয়নি, তাহলে নিশ্চিতরূপে এর প্রতিক্রিয়া মানবিক চাহিদা অনুযায়ীই হবে। ইহ কেউই বলে না যে, এরূপ সৌন্দর্য প্রকাশের ফলে প্রত্যেক নারী চরিত্রহীনা হবে এবং প্রত্যেক পুরুষ কার্যত পাপী হয়ে পড়বে। কিন্তু ইহাও কেউ অস্বীকার করতে পারে না যে, সুন্দর বেশভূষা সহকারে নারীদের প্রকাশ্যে চলাফেরা এবং জনসমাবেশে অংশগ্রহণের ফলে অসংখ্য প্রকাশ্য ও গোপন, মানসিক ও বৈষয়িক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। আজকাল ইউরোপ-আমেরিকার নারী সমাজ নিজেদের ও স্বামীর উপার্জিত অধিকাংশ অর্থ বেশভূষায় ব্যয় করছে। তাদের এই ব্যয়ভার দৈনন্দিন এতই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, তা বহনের আর্থিক সঙ্গতি তাদের নেই। যে সকল যৌন-লোলুপ দৃষ্টি বাজারে, অফিস-আদালতে এবং সমাবেশে যোগদানকারী নারীদেরকে স্বাগত জানায়, তা-ই কি এই উন্মাদনা সৃষ্টি করেনি? ভেবে দেখুন, নারীদের মধ্যে সাজ-সজ্জার এত প্রবল আকাঙ্খা সৃষ্টি হওয়ার এবং তা দ্রুতবেগে বর্ধিত হওয়ার কি কারণ থাকতে পারে? কারণ এটিই কি নয় যে, তারা পুরুষের প্রশংসা কুড়াতে এবং তাদের চক্ষে মানানসই সাজতে ইচ্ছা করে? এটি কিসের জন্য? এটি কি একেবারে নিষ্পাপ আকাঙ্খা? এর অভ্যন্তরে কি যৌন-বাসনা নেই, যা স্বীয় স্বাভাবিক গণ্ডির বাইরে বিস্তার লাভ করতে চায় এবং যার দাবি পূরণের জন্য অপর প্রান্তেও অনুরূপ বাসনা রয়েছে? যদি আপনি এটা অস্বীকার করেন তাহলে হয়ত আগামী দিন আপনি এই দাবি করতে দ্বিধা করবেন না যে, আগ্নেয়গিরিতে যে ধূম্ররাশি দেখা যায়, তার ভেতর থেকে কোন লাভা বের হতে উন্মুখ নয়।

         আপনি আপনার কাজের স্বাধীনতা রাখেন এবং যা ইচ্ছা তা করুন। কিন্তু সত্যকে অস্বীকার করবেন না। এ সত্য এখন আর গোপনও নেই। সূর্যালোকের ন্যায় এর ফল প্রকাশিত হয়ে পড়েছে। আর এটা আপনি জ্ঞাতসারে গ্রহণ করছেন। কিন্তু যে স্থান হতে এর প্রকাশ সূচিত হয়, ইসলাম ঐ স্থানেই তাকে বন্ধ করে দিতে চায়। কারণ তার সৌন্দর্য প্রকাশের বাহ্যত আপাত নিষ্পাপ সূচ- নার উপরে নিবদ্ধ নয়, বরং যে ভয়াবহ পরিণাম কিয়ামতের অন্ধকারের ন্যায় গোটা সমাজে ছড়িয়ে পড়ে, তারই ওপর নিবন্ধ রয়েছে।

হাদীসঃ

مثَلُ الرَّافِلَةِ فِي الزِّينَةِ غَيْرِ أَهْلِهَا كَمَثَلِ ظُلْمَةِ يَوْمٌالْقِيمَةِ لَا نُورَ لَهَا 

        অর্থাৎ, "পর-পুরুষের সামনে সাজ-সজ্জা বিচরণকারী নারী আলোকবিহীন কিয়ামতের অন্ধকারের মত।” (তিরমিযী)

        কুরআনে যে অপরিচিত পুরুষের সম্মুখে সৌন্দর্য প্রকাশ হারাম করা হয়েছে সেখানে একটি ব্যতিক্রমও আছে। যেমন- لا ما ظهر منها। এর অর্থ হলো

        যে সৌন্দর্য বা বেশভূষা আপনা-আপনি প্রকাশ হয়ে পড়ে, তাতে কোন দোধ নেই। লোকে এই ব্যতিক্রম হতে কিছু সুবিধা লাভের চেষ্টা করেছে। কিন্তু বিপদ হলো, এ শব্দগুলো হতে বেশী সুবিধা লাভের কোন সুযোগ নেই। শরীয়তপ্রণেতা এই কথা বলেন যে, স্বেচ্ছায় অপরের সম্মুখে সৌন্দর্য প্রকাশ করো না। কিন্তু যে বেশভূষা আপনা-আপনি প্রকাশ হয়ে পড়ে তার জন্য কেউ দায়ী হবে না- এর অর্থ অতি সুস্পষ্ট। তোমার নিয়ত যেন সৌন্দর্য ও বেশভূষা প্রকাশের না হয়। তোমার মধ্যে এই প্রেরণা, এই ইচ্ছা কিছুতেই হওয়া উচিত নয় যে, নিজের সাজ-সজ্জা অপরকে দেখাবে বা কিছু না হলেও অন্তত অলংকারাদির লুপ্ত ঝংকার শুনিয়ে তোমার প্রতি অপরের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। এর পর যদি কোনো কিছু অনিচ্ছা সত্ত্বেও প্রকাশিত হয়ে পড়ে, তাহলে এর জন্য আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন। তুমি যে বস্ত্র দ্বারা সৌন্দর্য ঢেকে রাখবে, তাতো প্রকাশ পাবেই। তোমার দেহের গঠন ও উচ্চতা, শারীরিক সৌষ্ঠব ও আকার-আকৃতি তো তাতে ধরা যাবে। কাজ-কর্মের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী তোমার হস্তদ্বয় ও মুখমণ্ডলের কিয়দংশ তো উন্মুক্ত করতে হবে।

        এরূপ হলে কোন দোষ নেই। তোমার ইচ্ছা তা প্রকাশ করা নয়; বরং তুমি তা করতে বাধ্য। এতে যদি কোন অসৎ ব্যক্তি আনন্দ ভোগ করে করুক, সে তার শাস্তি ভোগ করবে। তমদ্দুন ও নৈতিকতা যতটুকু দায়িত্ব তোমার ওপর অর্পণ করেছিল, তুমি সাধ্যানুযায়ী তা পালন করেছ।

        এ আয়াতের ইহাই প্রকৃত মর্ম। মুফাসসিরদের মধ্যে এ আয়াতের মর্ম নিয়ে যত মতভেদ আছে, তা নিয়ে গবেষণা করলে জানতে পারা যাবে যে, সকল মতান্তর সত্বে ও তাঁদের উক্তির মর্ম তা-ই দাঁড়াবে, যা উপরে বর্ণিত হলো।

        ইবনে মাসউদ, ইব্রাহীম নয়ী ও হাসান বসরীর মতে প্রকাশ্য সৌন্দর্যের অর্থ ঐসব বস্ত্র, যেগুলোর মধ্যে সৌন্দর্য ঢেকে রাখা যায়, যথা- বোরকা, চাঁদর ইত্যাদি।

        ইবনে আব্বাস, মুজাহিদ, আনাস, জাহহাক, সাঈদ বিন জুবাইর, আওযায়ী ও হানাফী মতাবলম্বী ইমামদের মতে এর অর্থ হলো-মুখমণ্ডল ও দু'হাত এবং এতে ব্যবহৃত সৌন্দর্য-উপাদানগুলো যেমন মেহেদী, আটিং এবং চোখের সুরমা।

        সাঈদ বিন মুসাইয়্যেবের মতে ব্যতিক্রম কেবল মুখমণ্ডল এবং অন্য এক বর্ণনামতে হাসান বসরীও এই মত সমর্থন করেছেন।

        হযরত আয়েশা (রা) মুখমণ্ডল ঢেকে রাখার পক্ষে। তাঁর মতে প্রকাশ্য সৌন্দর্যের অর্থ হচ্ছে দু'হাত, হাতের চুড়ি, আংটি, কংকন ইত্যাদি।

         মিসওয়ার বিন মাখরামা ও কাতাদাহ অলংকারাদিসহ হাত খোলার অনুমতি দের এবং তাঁর উক্তিতে মনে হয়, তিনি সেটা মুখমণ্ডলের দোলতে অনুমতি চোখদুটো খুলে রাখা বৈধ রাখেন।

        এসব মতভেদের উদ্দেশ্য চিন্তা করে দেখুন। এ সকল মুফাসসির  থেকে একথাই বুঝিয়েছেন যে, আল্লাহ পাক এমন লোখ। প্রকাশের অনুমতি দেন। যে এমনিতেই প্রকাশ হয়ে পড়ে। হাতের প্রদর্শনী করা অথবা কারও দৃষ্টির বিষয়বস্তু করা কারও উদ্দেশ্য নয়। প্রত্যেকে আপন আপন বোধশক্তি মোতাবেক নারীদের প্রয়োজনকে সামনে রেখে এটি বুঝার চেষ্টা করেছেন যে, প্রয়োজন হলে কোন অংগ আবশ্যকীয়ভাবে উন্মুক্ত করা যায়। আমরা বলি যে. إلا ما ظَهَرَ مِنْهَا -কে এর কোন একটিতেও সীমাবদ্ধ রাখবেন না। যে মু'মিন নারী আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশের অনুগত থাকতে চায় এবং অমঙ্গলে লিপ্ত হওয়া যার ইচ্ছে নয়, সে নিজেই নিজের অবস্থা ও প্রয়োজন মোতাবেক সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, মুখমণ্ডল ও দু'হাত খুলবে, কি খুলবে না। খুলতে চাইলে কোন সময়ে খুলবে, কি পরিমাণে খোলবে এবং কি পরিমাণে ঢেকে রাখবে। এই ব্যাপারে শরীয়তপ্রণেতা কোন স্পষ্ট নির্দেশ দেননি। অবস্থার বিভিন্নতা এবং প্রয়োজন দেখে কোন সুস্পষ্ট নির্দেশ নির্ধারণ করতে হবে, তাও বাস্তব বিচার-বুদ্ধির চাহিদা নয়। যে নারী নিজ প্রয়োজনে বাইরে যেতে এবং কাজকর্ম করতে বাধ্য, তাকে কখনও হাত এবং কখনও মুখমণ্ডল খোলা জরুরি হবে। এরূপ নারীর জন্য প্রয়োজন অনুসারে অনুমতি আছে। কিন্তু যে নারীর অবস্থা এরূপ নয়, তার বিনা কারণে হাত-মুখ অনাবৃত করা বৈধ নয়।

        অতএব শরীয়ত প্রবক্তার উদ্দেশ্য হলো, যদি নিজের সৌন্দর্য প্রদর্শনের লক্ষ্যে কোন অঙ্গ অনাবৃত করা হয়, তাহলে তাতে পাপ হবে। অনিচ্ছা সত্বেও কিছু প্রকাশ হলে তাতে কোন পাপ হবে না (প্রয়োজন যদি অনাবৃত করতে বাধ্য করে, তাহলে তা বৈধ হবে। এখন প্রশ্ন হলো, অবস্থার বিভিন্নতা হতে দৃষ্টি ফিরিয়ে কেবল মুখমণ্ডল সম্পর্কে কি নির্দেশ রয়েছে? শরীয়ত প্রবক্তা তা অনাবৃত রাখা পছন্দ করেন, না অপছন্দ করেন? কেবল প্রয়োজনের সময় চেহারা অনাবৃত করা যায় না, তা অপরের দৃষ্টি হতে লুকিয়ে রাখার বস্তুই নয়?

Post a Comment

0 Comments