মুহররম মাসের আমল ও ফযীলত

 

        মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বছরের বার মাসের নাম এবং কোন মাসে কি করতে হবে তা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এই ১২ মাসের মধ্যে ৪টি মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ ইত্যাদি কাজকর্ম করতে হারাম বলে ঘোষণা করেছেন।

        মুহররম মাসে আশুরার ফযীলত সম্পর্কে হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পাঁচটি হাদীস উদ্ধৃত করেছেন। আর আশুরার দিন মানুষেরা যে সব বিদআত ও গুনাহের কাজ করে সে সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন।

        আশুরার দিন নিকটবর্তী হয়েছে, এদিনে লোকদের জন্য যেমন নেক আমলসমুহ রয়েছে, তেমনি অন্ধকার যুগের অপছন্দনীয় কাজসমূহও রয়েছে। অতএব প্রথম প্রকারের নেক কাজ হল ঐ দিন মুস্তাহাব নিয়তে রোযা রাখা।

        আর দ্বিতীয় প্রকার অপছন্দনীয় কাজগুলো হচ্ছে ঐদিনকে উৎসব ও মেলার দিন হিসেবে পালন করা অথবা ঐদিন রাসূল পরিবারের ওপর (কারবালায়) যে দুঃখ ও বিপদ এসেছিল তা স্মরণ করে মাতম, মরসিয়া ও বিলাপ করা, ঝান্ডা ও তাজিয়া বহন করা যা অনর্থক খেল-তামাশা, শিরক ও গোনাহর কাজের অন্তর্ভুক্ত।

এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে ইরশাদ হচ্ছে-

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ منرمضُنَ شَهْرُ اللَّهِ الْمُحَرَّمَ

    * উচ্চারণ: ক্বালা রাসূলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা আফদ্বালুছ ছিয়ামি বাদা রামাদ্বানা শাহরুল্লাহিল মুহাররম।

    অর্থঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রমযান মাসের ফরয রোযার পর আল্লাহর মাস মুহাররম মাসের রোযা সর্বোত্তম। (মুসলিম)

        উচ্চারণ : ওয়া ক্বালা রাসূলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা ছিযামু ইয়াওমি আ'শূরাআ আহতাসিবু আলাল্লাহি আইয়্যুকাফফিরাস সানাতিল্লাতী কাবলাহু।

        অর্থঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন যে, আমি আল্লাহর নিকট আশা করি, যেন আশুরার দিনের রোযা তার পূর্ববর্তী এক বছরের গোনাহের কাফফারা হয়।

  . وقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّىاللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صُومُوا عَاشُورًاوَخَالَفُوا فِيهِ الْيَهُودَ وَصُومُوا قَبْلَهُ يَوْمًا أَوْ بَعْدَهُ يَوْمًا 

        উচ্চারণ : ওয়া ক্বালা রাসূলুল্লাহি সাল্লাল্লাহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছুমু আশুরাআ ওয়া খালিফু ফীহিল ইয়াহুদা ওয়াছুম্ ক্বাবলাহু ইয়াওমান আও বা'দাহু ইয়াওমান। 

অর্থঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, তোমরা আশুরার দিনে রোযা রাখ এবং তাতে ইয়াহুদীদের বিপরীত কর, ঐদিনের আগে একদিন অথবা পরে একদিন রোযা রাখ। (কেননা, তারা মাত্র একদিন রোযা রাখত।)

 . وَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ عَاشُورًا بُصَامُ قَبْلَ رَمَضَانَ فَلَمَّا نَزَلَ رَمَضَانَ كَانَ مَنْ شَاءَ صَامَوَمَنْ شَاءَ أَقْطَرْ *

    উচ্চরণ: ওয়া ক্বালা রাসূলুল্লাহি সাল্লাল্লাহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম  কানা আশুরাআ ইউছামু ক্বাবলা রামাদ্বানা ফালাম্মা নাযালা রামাদ্বানা কানা মান শাআ ছামা ওয়া মান শাআ আফত্বারা।।

    অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, রমযান মাসের রোযা ফরয হবার আগে আশূরার রোযা ফরয হিসেবে রাখা হত। অতঃপর যখন রমযান মাসের রোযার হুকুম অবতীর্ণ হল, তখন যার ইচ্ছা সে আশরার রোযা (নফল) রাখতে পারে, আর যার ইচ্ছা সে নাও রাখতে পারে।

وَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ وَضَعَ عَلَى عَمَالِهِ فِي النَّفَقَةِ يَوْمَ عَاشُورًا ، وَتَعَ اللَّهُ عَلَيْهِ سَائِرَسنته *

        উচ্চারণঃ ওয়া ক্বালা রাসূলুল্লাহি সাল্লাল্লাহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম মান ওয়াসাআ আলা আইয়ালিহী ফিন্নাফকাতি ইয়াওমি আশুরাআ ওয়াসাআল্লাহু আলাইহি সায়িরা সানাতিহী।

        অর্থঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আশূরার দিন নিজ পরিবার পরিজনের জন্য মুক্ত হস্তে ব্যয় করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে সারা বছর স্বচ্ছলতা দান করবেন।

        আমরা বর্তমান জামানায় দেখতে পাচ্ছি যে, এ মহা ফযীলতপূর্ণ মাস মুহররমের ১০ তারিখকে অর্থাৎ আশুরাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরণের আচার- অনুষ্ঠান হচ্ছে। যে অনুষ্ঠানের কোন শরয়ী দলীল বা ভিত্তি নেই। সত্যি কথা বলতে কি অধিকাংশ মুসলমান এ মহান মুহররম মাসের এ দিবসটি যে কি সে সম্পর্কে সঠিক কোন ধারণা রাখে না। আশুরা দিবসে আমাদের কি করণীয় সে বিষয়ে কোন জ্ঞানই তারা রাখেন না। অধিকাংশ লোকে শুধুমাত্র কারবালার হৃদয় বিদারক ঘটনাকে আশুরার মূল ঘটনা বলে মনে করে বক্তৃতা বিবৃতি প্রদান করে থাকেন। দুঃখজনক হলেও সত্য আমরা যেন ইদানিং বিজাতীয় কৃষ্টি কালচার, পথভ্রষ্ট ধর্মীয় ফেরকার আচার অনুষ্ঠানের দিকে বেশী ঝুঁকে পড়ছি। কিন্তু কিছু ইসলামী অনুষ্ঠান রয়েছে এ বিশেষ দিবসে, যা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে নির্ধারণ করে দিয়েছেন ইবাদত ও নেক আমল করার জন্য। বছর ঘুরে এ সব দিবসগুলো ইসলামী উম্মাহর দ্বারে বার বার উপস্থিত হয়। যাতে তারা ইসলামী চেতনা ও অনুভূতিতে জাগ্রত হয়ে পবিত্রতা, আত্মশুদ্ধি নিষ্কলুষ চরিত্রের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাকের দিকে ধাবিত হতে পারে। আমাদের কাছে উপস্থিত হতে যাচ্ছে পবিত্র মাস মুহাররম। যা মুসলমান জাতিকে রোযা পালন করার জন্য আহ্বান জানায়। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রমযানের পর সর্বোত্তম রোযা হল মহররম মাসের রোষা। (মুসলিম)

        ফযীলতের দিক দিয়ে আশুরা দিবসটি মহান আল্লাহ পাকের নিকট খুবই প্রিয়, তাই তিনি এ বিশেষ দিনে রোযা রাখার সওয়াব অনেকগুন বৃদ্ধি করে দিয়ে থাকেন। কিন্তু এ দিনে কি করণীয় সে সম্পর্কে মানুষ বিভিন্ন তরীকা ও পন্থা অবলম্বন করে থাকে। যে সব আমল এ দিনে নেই তাও তারা করে থাকে। বিভিন্ন বিদআতী অনৈসলামী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে পড়ে। আর এগুলো করে কল্যাণকর কাজের প্রতি আগ্রহের বশবর্তী হয়ে বা পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কিংবা কৃ-প্রবৃত্তির দ্বারা তাড়িত হয়ে। তাই এ দিনের ফযীলত ও শরীয়ত অনুমোদিত আমলসমূহ বর্ণনা করা প্রয়োজন মনে করছি এবং সাথে সাথে এটাও বর্ণনা করতে চেষ্টা করব, মানুষ এদিনের সম্মান দেখাতে গিয়ে যে সব কাজকর্ম করে থাকে ও এর ক্ষতিকর দিকগুলো যা রয়েছে সে সম্পর্কে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা তিনি আমাদের সত্য সঠিক সরল পথে পরিচালিত করুন এবং এ লেখার দ্বারা সকলকে উপকৃত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আলোচ্য বিষয়গুলো কয়েকটি ভাগে উপস্থাপন করা হল-

        আল্লাহ তায়ালা কোরআন শরীফে এরশাদ করেন-

إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ  يَوْمَ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمذالك الدينالقيمُ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ 

        উচ্চারণ: ইন্না ইদ্দাতাশুহুরি ইন্দাল্লাহি ইছনা আশারা শাহরান ফী কিতাবিল্লাহি ইয়াওমা খালাক্বাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বা, মিনহা আরবাআতুন হুরুমুন, যালিকাদ্দীনুল ক্বাইয়িমু, ফালা তাযলিম্ ফীহিন্না আনফুসাকুমু।

        অর্থ: আল্লাহ তাআলা আসমান যমীন সৃষ্টি করার দিন হতেই মাসের সংখ্যা বার বলে নির্ধারিত করে রেখেছেন। তন্মধ্যে চারটি মাস অধিক সম্মানিত। ইহা একটি অকাট্য ও অপরিবর্তনীয় ব্যাপার। সুতরাং তোমরা এই সম্মানিত মাস সমূহের মধ্যে (ঝগড়া বিবাদ ও খুন-খারাবী করে) নিজেদের উপর জুলুম করো না।

        সেই চারটি মাস কোন কোনটি তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে দিয়েছেন।

        قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَلْقَةٌ مُتَوَالِيَّةٌذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمِ وَوَاحِدٌ فَرْدُهُمْ رَجَب

        উচ্চারণঃ ক্বালা রাসূলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা ছালাছাতুন মুতাওয়ালিইয়াতুন যুল ক্বা'দাতি ওয়া যুলহিজ্জাতি ওয়াল মুহাররামি ওয়া ওয়াহিদুন ফারুদুন হুওয়া রাজাবুন।

        অর্থঃ চার মাসের তিনটি উপর্যুপরি, সেগুলো হল জিলকাদাহ, জিলহজ্জ ও মুহররম আর একটি এগুলো হতে পৃথক তা হল রজব।

        উপরোল্লিখিত হাদীস হতে একথা প্রমাণিত হয় যে, মুহররম মাসটি ফযীলত ও বরকত ওয়ালা মাসসমূহের মধ্যে অন্যতম সেরা মাস। এই মাসে গুনাহ্ করলে যখন অন্যান্য মাসের তুলনায় অধিক গুনাহ হবে, তখন নেক কাজ করলেও স্বাভাবিক ভাবেই অন্য সময়ের তুলনায় অধিক সওয়াব পাওয়া যাবে।

        হাদীস শরীফে এরশাদ হচ্ছে-

عَنْ عُثْمَانُ بْن عَفَّانَ رَضِيَ الله الله : عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اكْرِمُوا شَهْرَ اللَّهِ الْمُحَرَّمِ فَمَنْ أَكْرَمَالمُحرم اكْرَمَهُ اللَّهُ يَا الْجَنَّةِ وَنَجَاهُ مِنَ النَّارِ 

        উচ্চারণ : আন উসমান ইবনে আফফান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ক্বালা জ্বালা রাসূলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা আকরিমু শাহরাল্লাহিল মুহাররামা ফামান আকরামাল মুহাররামা আকরামাহুল্লাহু বিলজান্নাতি ওয়া নাজাহু মিনান্নারি।

        অর্থঃ তোমরা খোদার মাস মুহররমের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করো। কেননা যে ব্যক্তি মুহররমের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাত দান করে সম্মানিত করবেন এবং তাকে দোযখের আগুন হতে নাজাত দিবেন। (ইবনে মাজা)

        হাদীস : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, রমযানের রোযার পরেই আর সকল রোযার চেয়ে আল্লাহর (প্রিয়) মাস মুহররমের রোযা উত্তম। (মুসলিম)

    হাদীস শরীফে এরশাদ হচ্ছে-

        উচ্চারণ: ক্বালা রাসূলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা মান ছামা আশারাতা আইয়্যামিন মিন আওয়্যালিল মুহারামি ফাকাআল্লামা আবাদাল্লাহা আশারাতা আলাফা সানাতিন ক্বামা লায়ালীহা ওয়া ছামা নাহারিহা।

        অর্থঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি মহররম মাসের প্রথম ১০দিন রোযা রাখে, সে ব্যক্তি যেন দশ হাজার বছর যাবত দিনে রোযা রাখল এবং ইবাদতে রাত জাগরণ করল। (অর্থাৎ সে বিপুল সওয়াবের অধিকারী হবে)।

        হাদীস: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, মহররম মাসে জুমার রাতে ইবাদতকারী ব্যক্তি যেন শবে কদরের ইবাদত করার ফযীলত লাভ করল।

        জালীছুন্নাছিহীন নামক কিতাবে বর্ণিত আছে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মুহররমের ১লা তারিখ দিনে দুই রাকআত নফল নামায আদায় করে এবং নামাযের সালাম ফিরায়ে একীনের সাথে নিম্নলিখিত দোআ পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা তার হেফাজতের জন্য একজন ফেরেশতা মোতায়েন করেন। সে ফেরেশতা সারা বছর সেই ব্যক্তিকে শয়তানের উপদ্রব হতে রক্ষা করার চেষ্টা করেন এবং তার ইবাদতের কাজে সহায়তা করেন। দোআটি এই

اللهم أَنتَ انت الأسر القديم وَهُذِهِ وهذه . سنة جديدة إني اسألك فِيهَا الْعِصْمَةَ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّحِيمِ وَأَوْلِيَاءَ الشَّيْطَانِ وَمِنْشَرِّ الْبَلَايَاوَالاشْتِغَالِ بِمَا يُقَرِّ بَنِي البَكَ يَادَ الْجَلَالِ وَالإِكْرَامُ 
 وَالْأَفَاتِ وَالْعُوْنَ عَلَى هُدو النفس الأمارة بالسوء

  
  উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আনতাল আবারুল ক্বাদীমু ওয়া হা যিহী সানাতুন জাদীদাহ, ইন্নী আসআলুকা ফীহাল ইছমাতা মিনাশ শাইতানির রাজীমি ওয়া আউলিয়া ইশ শাইতানি ওয়ামিন শাররিল বালায়া ওয়াল আফাতি ওয়াল আউনা আলা হাযিহিন্নাফসিল আম্মারাতি বিস্সুয়ি ওয়াল ইশতিগালা বিমা ইউকাররিবুনি ইলাইকা, ইয়া যালজালালি ওয়াল ইকরাম।

        অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি চির পূণ্যময় চিরস্থায়ী ও অপরিবর্তনশীল। ইহা নুতন বছর। আমি তোমার দরবারে এই প্রার্থনা করছি যে, তুমি আমাকে এ বছর শয়তান ও তার চেলা-চামুন্ডাদের প্রলোভন ও ওয়াস-ওয়াসা হতে নিরাপদে রাখিও, যাবতীয় বালা মুছিবতের অনিষ্টকারিতা হতে রক্ষা করিও, আমার নিজের নফসে আম্মারার (অর্থাৎ কু-প্রবৃত্তির) সাথে লড়াই করে জয়ী হওয়ার জন্য আমাকে সাহায্য করো এবং যে কাজের দরুণ আমি তোমার নৈকট্য লাভ করতে পারব আমাকে সেই কাজে লিপ্ত রাখিও।

        উক্ত কিতাবে আরও বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি নিজের জন্য দোযখের আগুনকে হারাম করতে চায় (অর্থাৎ নিজকে পরকালের শাস্তি হতে মুক্ত রাখার আশা করে) সে ব্যক্তি যেন মুহররম মাসে নফল রোযা রাখে।

        অপর এক রেওয়ায়েতে আছে, যে ব্যক্তি মুহরম মাসের জুমআর রাত সমূহে জেগে ইবাদত করে, সে ব্যক্তি যেন শবে কদর উপলক্ষে ইবাদত করল। উপরন্তু তার আমলনামায় সমগ্র জিনজাতি এবং মানবজাতির ইবাদতের সমান সওয়াব লিপিবদ্ধ হবে। (অর্থাৎ সে অসীম সওয়াবের অধিকারী হবে)।

        হাদীসঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি মুহররম চাঁদের প্রথম রাতে দুই দুই রাকআত করে আট রাকআত নফল নামায পড়ে এবং প্রতি রাকআতে সূরা ফাতিহার পর দশবার সূরা এখলাছ (কুলহু ওয়াল্লাহ সুরা) পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা সারা বছর তাকে তার ধন দৌলত এবং আওলাদ ফরজন্দকে সকল প্রকার বালা মুছিবত হতে নিরাপদে রাখেন এবং স্বীয় সন্তুষ্টির পথে তাকে পরিচালিত করেন। উপরন্তু তার গত বছরের সকল (ছগীরা) গুনাহ মাফ করে দেন।

Post a Comment

0 Comments