পাঠক-পাঠিকা। জেনে রাখ, অসৎ স্বভাবের দাওয়াই ইলম ও আমল বা জ্ঞান ও আনুষ্ঠানিকতার সমন্বয়। প্রত্যেক রোগের যে মূল কারণ থাকে, তার বিপরীত কাজ করাই হল তার প্রতিকার। আমরা এখন রোগের কারণ ও তার প্রতিকারের বিষয় বর্ণনা করব। পরনিন্দা হতে রসনা সংযত করার দ্বিবিধ দাওয়াই আছে। যথাঃ সাধারণ দাওয়াই এবং বিশেষ দাওয়াই। সাধারণ দাওয়াই এই যে, মানুষের এই জ্ঞান ও বিশ্বাস থাকা দরকার যে, পরনিন্দা করলে আল্লাহর ক্রোধের শিকার হতে হয়। হাদীস এবং বুযর্গদের বাণীর দ্বারা তা-ই প্রতীয়মান হয়। আর এটাও জানা দরকার যে, এজন্য রোজ কিয়ামতে সমস্ত পুণ্যই ভন্ডুল হয়ে যাবে। কেননা পরনিন্দার দ্বারা যে ব্যক্তির সম্মান নষ্ট করা হয় সে তার বিনিময়ে নিন্দুকের পুণ্য পেয়ে যাবে। যাদি তার পুণ্য না থাকে, তার বিপক্ষ লোকের পাপ তার উপর চলে যাবে। এ ছাড়াও আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টি ও ক্রোধের মধ্যে তার কাল কাটাতে হবে। পরনিন্দাকে মৃত প্রাণী ভক্ষণের সাথে তুলনা করা হয়েছে; বরং পরনিন্দুক দোযখে প্রবেশ করবে। কেননা তার পাপের পাল্লা পুণ্যের পাল্লার চেয়ে ভারী হবে। অনেক সময়ে নিন্দিত ব্যক্তির একটি পাপ তার উপর গিয়ে পাপের পাল্লা ভারী করে দিতে পারে এবং সে তজ্জন্য দোযখে যেতে হবে। এর সর্বনিম্ন স্তর তার ইবাদাতের পুণ্য হ্রাস হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ তা' হিসাব ও সুয়াল জওয়াবের পরে হবে। হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, পরনিন্দা কোন লোকের পুণ্যকে যত দ্রুত অগ্নিও শুষ্ক কাঠকে ভস্মীভূত করতে পারে না।
বর্ণিত আছে যে, এক ব্যক্তি হযরত হাসান বছরী (রহঃ) কে বলেছিল, আমি শুনেছি যে, আপনি আমার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেলেন, আমার দৃষ্টিতে তোমার এতটুকু মর্যাদা হয় নি যে, আমি (ঐ কাজ করে) তোমাকে আমার সমস্ত পুণ্য দিয়ে দেব। পরনিন্দা সম্বন্ধে হাদীসে যে সব সতর্কবাণী রয়েছে, তা' যদি কোন লোক বিশ্বাস করে, তা' হলে ভয়ে সে রসনা খুলবে না। তাতে আরও উপকার আছে। নিজের মধ্যে অনুসন্ধান করে যদি নিজের দোষ দেখতে পায়, তখন সে সেই নিজের দোষ সংশোধনে ব্যস্ত থাকে এবং হুযুরে পাক (দঃ) এর এই হাদীস স্মরণ করে যে, "নিজের দোষ অনুসন্ধানে ব্যস্ত থাকার জন্য যে অন্যের দোষ দেখে না, সে-ই ধন্য। যখন মানুষ নিজের মধ্যে দোষ দেখতে পায় তখন তার একথা জেনে নেয়া চাই সে, যে নিজে যেমন নিজের দোষ দূর করতে অসমর্থ, তস্তুপ অন্য লোকও তার দোষ দূর করতে অসমর্থ এবং তার নিজের মত অন্যের মধ্যেও দোষ থাকা বিচিত্র নয়। আর যদি নিজের মধ্যে নিজের দোষ দেখতে না পায় তবে বুঝে নেবে যে, নিজের দোষ দেখতে না পাওয়াই অন্যতম দোষ। নিজের ইচ্ছে ও কার্যের সাথে এই দোষ সম্পৃক্ত।
কিন্তু যদি কারও স্বভাবের মধ্যে এমন দোষ থাকে যা' পরিহার করা তার ক্ষমতার বাইরে। তখন তজ্জন্য তাকে নিন্দা করলে স্বয়ং স্রষ্টাকেই নিন্দা করা হয়। কেননা যে ব্যক্তি কোন শিল্পকে নিন্দা করে, সে সেই শিল্পের শিল্পীকেই নিন্দা করে থাকে। এক ব্যক্তি কোন এক বিজ ব্যক্তিকে হে কুশ্রী ব্যক্তি বলে সম্বোধন করলে তিনি বললেন, শ্রী বা আকৃতি নির্মাণ ক্ষমতা আমার হাতে থাকলে আমি শ্রী সুন্দর করে নিতাম। যদি তুমি নিজের মধ্যে কোন দোষ দেখতে না পাও তা' হলে মহান আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। কিন্তু পরনিন্দা করে নিজেকে মহাদোষে দোষী করো না। কেননা পরনিন্দা করে নিন্দিত ভ্রাতার পচা মাংস ভক্ষণ করার ন্যায় জঘন্যতম ঘৃণিত দোষ আর নেই। যদি তুমি মনে কর যে, তুমি সম্পূর্ণ দোষ শূন্য, তা' তোমার অবজ্ঞার পরিচয়। কেননা নিজের দোষ না জানাই চরম অজ্ঞতা। তোমার একথাও অবগত হওয়া তোমার জন্য পরম উপকারী যে, অন্য লোকে তোমার নিন্দা করলে যেরূপ তুমি মনে কষ্ট পাও, তুমিও অন্যের নিন্দা করলে সেও তদ্রূপ মনে কষ্ট পায়। যদি নিন্দা না করে সন্তুষ্ট থাকতে না পার, তাহলে নিজের জন্য যা' ভালবাস না, পরের জন্যও তা' ভালবাসবে না। এটাই পরনিন্দার মূল প্রতিকার।
পরনিন্দার বিশেষ দাওয়াইঃ এই দাওয়াই প্রয়োগ করতে হলে পরনিন্দার মূল কারণের দিকে লক্ষ্য করতে হবে। কোন রোগের কারণকে নষ্ট করে দেয়াই সেই রোগের প্রকৃত দাওয়াই। এই প্রকার আটটি কারণের বিষয় আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি।
প্রথম কারণ-ক্রোধঃ ক্রোধের দাওয়াই ক্রোধ দমনের অনুচ্ছেদে উল্লেখ করেছি। ক্রোধ দমনই ক্রোধের দাওয়াই। যদি তুমি কারও উপর ক্রোধ করে প্রতিশোধ গ্রহণে বদ্ধপরিকর হও তাহলে জানবে যে পরনিন্দার কারণে আল্লাহতায়ালা তোমার উপর ক্রোধ হয়ে প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন। কেননা তিনি তা' তোমাকে নিষেধ করেছেন। তুমি সেই নিষেধ অমান্য করতে সাহসী হয়েছ এবং তার শাস্তির বিষয়ে নির্ভয় রয়েছ। হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, দোযখের একটি দরজা আছে, যে ব্যক্তি পাপকার্য করে আল্লাহর ক্রোধকে উত্তেজিত করে সে লোক ব্যতীত অন্য কেউই ঐ দরজা দিয়ে দোযখে প্রবেশ করবে না। তিনি আরও বলেছেন, যে তার প্রভুকে ভয় করে, তার রসনা সংযত হয় এবং তার ক্রোধ দমন হয়। তিনি আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি ক্রোধ প্রকাশের সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তা' দমন করে, করুণাময় আল্লাহ তাকে রোজ কিয়ামতে সমস্ত সৃষ্ট জীবের সামনে ডেকে বলবেন, যে হুরকে তোমার পছন্দ হয় তুমি তাকেই গ্রহণ কর। আল্লাহতায়ালা নবীদের উপর প্রেরিত তাঁর কোন এক ধর্মগ্রন্থে বলেছেন, হে আদম সন্তান। তোমার ক্রোধের সময় আমাকে স্মরণ করবে। তাহলে আমার ক্রোধের সময় আমি তোমাকে স্মরণ করব। অর্থাৎ আমি যাদেরকে ধ্বংস এসে করব, তাদের সাথে তোমাকে ধ্বংস করব না।
দ্বিতীয় কারণঃ বন্ধুদের দের মত সমর্থন করা। বন্ধুদের। দেখাদেখি যদি তুমি পরনিন্দার শরীক হ০. তবে জেনে নেবে যে, যখ নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা যখন তুমি মানুষের সন্তুষ্টির ষ্টির জন্য আল্লাহর অসন্তুষ্টি অন্বেষণ কর তখন তোমার উপর ক্রোধান্বিত হবেন; সুতরাং কিরূপে তোমার প্রভুকে অবজ্ঞা করে অন্যকে সম্মান দেখাবে এবং তাঁর সন্তুষ্টি ত্যাগ করে তাদের অসন্তুষ্টিকে গ্রহণ করবে? তবে আল্লাহর জন্য ক্রোধ হলে তা' জায়েয হবে। তাতেও অভিশপ্ত ব্যক্তিকে নিস্তা করা অসংগত; বরং তোমার বন্ধুগণ যখন তার নিন্দা করে তখন আল্লাহর জন্য তাদের উপর ক্রোব প্রকাশ করা উচিত। কেননা তারা তোমার প্রভুকে গীবতরূপ জগন্যতম পাপ করে অমান্য করছে।
তৃতীয় কারণঃ অন্যের নিন্দাকরতঃ নিজের পবিত্রতা প্রদর্শন। অন্যের ঘাড়ে বিশ্বাসভঙ্গের দোক চাপিয়ে নিজের নিষ্কলঙ্ক এবং পবিত্র থাকার প্রচেষ্টার দাওয়াই এই যে, তোমার জ্ঞান থাকা চাই যে, লোকের অসন্তুষ্টির সামনে উপস্থিত হবার চেয়ে সৃস্টিকর্তার অসন্তুষ্টির সামনে উপস্থিত হওয়া অধিক কঠোর। অথচ তুমি নিশ্চয়ই পরনিন্দা করতঃ আল্লাহর অসন্তুষ্টির সম্বণীন হচ্ছ। তাতে তুমি মানুষের বিরাগভাজন হচ্ছ না তাদের সন্তুষ্টি উৎপাদন করছ তা' তোমার জানা নেই। সুতরাং ভ্রান্ত ধারণাবশতঃ তুমি দুনিয়া থেকেও মুক্ত হচ্ছ, আখেরাতেও নিজেকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছ এবং প্রকৃতপক্ষে তোমার সমস্ত নেকী হারাতে বসছ। তজ্জন্য আল্লাহর নিন্দাও তুমি অর্জন করতে যাচ্ছ এবং মানুষের বিরাগ ভবিষ্যতে দূর করবার জন্য আপেক্ষা করছ। এটাই চরম মূর্খতা। কেননা তুমি এমন লোকের অনুসরণের ওজর দিচ্ছ তাঁকে অনুসরণ করা জায়েয নেই। যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশের বিরোধিতা করে সে যেখানেই থাকুক না কেন সে অনুকরণযোগ্য নয়। যদি অন্য লোক অগ্নিকুন্ডে প্রবেশ করে তাতে প্রবেশ করবার শক্তি থাকা সত্ত্বেও তুমি তার দেখাদেখি তা' করতে পার না। যদি তা' কর তুমি তোমার বুদ্ধিকে খর্ব করবে। নিজে পরনিন্দা করে একবার পাপ করেছ আবার তার ওজর দেখিয়ে অন্য পাপ করছ? এ গুনাহ করবার ওজর জঘন্যতম পাপ। পাপ করে কেন পাপের আগুনে পুড়ে মরতে চাও? এটাই তোমার নির্বুদ্ধিতা ও বোকামী। এরূপ ব্যক্তি ঐ বকরীর ন্যায়, যে অন্য একটি বকরীকে পাহাড় থেকে লাফিয়ে পড়তে দেখে সে নিজেও সেই পাহাড় থেকে লাফিয়ে পড়ে নিজেকে ধ্বংস করে। যদি এই কার্যের ওজর দেখাবার জন্য সেই বকরীর কথা বলার রসনা থাকত তাহলে বলত, ঐ বকরী আমাদের থেকে অনেকটা বুদ্ধিমান এবং সে প্রথমে নিজেকে ধ্বংস করেছে; সুতরাং তাকে অনুসরণ করে আমি একাজ করেছি। একথা শুনে তুমি হাস্য সংবরণ করতে পারবে না। তোমার অবস্থাও তার অবস্থার ন্যায়।
চতুর্থ কারণঃ আত্মগৌরব ও আত্মমর্যাদা প্রকাশ এবং নিজেকে পবিত্র মনে করা। এর দাওয়াই এই যে, তোমার জেনে নেয়া উচিত, যে বিষয়ে তুমি গৌরব কর তাতে আল্লাহর নিকট তোমার গৌরব চলে যেতে পারে এবং মানুষের ধারণা অনুসারেও তোমার মর্যাদা কমে যেতে পারে: বরং তাও হলে যেতে পারে। যখন তারা বুঝতে পারে যে, এ ব্যক্তি এইভাবে পরনিন্দা করে বেড়ায়। সুতরাং তাতে সৃষ্টিকর্তার নিকটও বিরাগভাজন হবে এবং মানুষের নিকটও সমান হারাবে। দুর্বল লোকের নিকট থেকে বাহাদুরী নিতে গিয়ে এ দু' ক্ষতির সমুখীন হতে হবে।
পঞ্চম কারণঃ ঈর্ষা। ঈর্ষার কারণে যে পরনিন্দা হয়, তাতে দুটো শাস্তির সমন্বয় থাকে। কেননা কারও সংসারের ধন ও মান সম্ভ্রম দেখে তুমি যদি তাকে ঈর্ষা কর, তাহলে ইহলোকে স্বর্ণার অনলে দন্দ্বীভূত হবে। অধিকন্তু পরলোকেও পাপানলে দগ্ধ হতে থাকবে; সুতরাং এই শাস্তির সমন্বয়ে তুমি ইহলোকেও ক্ষতিগ্রস্ত হলে এবং পরলোকেও ভীষণ ক্ষতির মধ্যে পড়ে থাকবে। ঈর্ষা করতে গিয়ে নিজেই শাস্তি বহন করে নিলে এবং তোমার পুণ্যরাশি তাকে দিয়ে দিলে। সে তোমার বন্ধু হয়ে গেল এবং তুমি তোমার আত্মার শত্রু হলে। কেননা তোমার নিন্দা। তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না কিন্তু তা' তোমার আত্মার ক্ষতি করবে; বরং তা' তার উপকার করবে। কেননা তোমার পুন্যসমূহ তার নিকট চলে যাবে অথবা তার পাপসমূহ তোমার নিকট চলে আসবে। তাতে তোমার কোনই উপকার হবে না। কেননা হিংসা-বিদ্বেষের। তোমার নির্বুদ্ধিতা ও মূর্খতা মিশ্রিত করেছ। কখনও কখনও এরূপ তোমার ঈর্ষা-বিয়ের নিন্দিত লোকের পুণ্যের কারণ হয়।
ষষ্ঠ কারণঃ উপহাস উপহাসের কারণে যে পরনিন্দা হয়, তদ্বারা তোমার উদ্দেশ্য আল্লাহ, তাঁর ফিরেশতাগণ এবং তাঁর নবীগণের নিকট তোমার আত্মাকে হেয় ও অসম্মানিত করে অন্যকে লোকের নিকট হেয় ও অপমানিত করা। যদি রোজ কিয়ামতে তোমার অনুতাপ, অসম্মান, লাঞ্ছনা ও গঞ্জনার বিষয় চিন্তা কর, যাকে উপহাস করেছ, তার পাপসমূহ তোমার ঘাড়ে যে দিন পড়বে এবং তজ্জন্য তোমাকে দোযখে তাড়িয়ে নেয়া হবে। যদি এ বিষয় চিন্তা কর, তা হলে তুমি নিশ্চয়ই তোমার সঙ্গীকে উপহাস করা হতে বিরত হবে, যদি তুমি তোমার প্রকৃত অবস্থা জানতে, তবে তুমি নিজেকে নিয়ে নিশ্চয়ই পরিহাস করতে। কেননা তুমি তাকে অল্পসংখ্যক লোকের মধ্যে পরিহাস করেছ, কিন্তু রোজ কিয়ামতে তোমার হাত ধরে সমস্ত সৃষ্টজীবের সম্মুখে তোমাকে উপস্থিত করা হবে এবং তার পাপের নিম্নে তোমাকে তাড়িয়ে নেয়া হবে, যেরূপ গর্দভকে অগ্নির দিকে তাড়িয়ে নেয়া হয়। তখন তোমাকে পরিহাস করা হবে এবং তোমার অপমানে তারা আনন্দ করতে থাকবে। তোমার বিরুদ্ধে তাকে আল্লাহর সাহায্য করার কারণে এবং তোমার উপর তার প্রতিশোধ নেয়ার কারণে তারা আনন্দিত হবে।
সপ্তম কারণঃ পাপের কারণে তোমার করুণা প্রদর্শন। কারও পাপের কারণে তুমি তার প্রতি করুণা প্রদর্শন করে তার নিন্দাবাদ কর, কিন্তু জেনে রাখ যে, তোমাদের উপর ইবলীসের হিংসার কারণে সে তোমাকে তদ্বারা পথভ্রষ্ট করে এবং তোমার পুণ্য তাকে দিয়ে সে সন্তুষ্ট হয়; সুতরাং তুমি তাতে যে পাপ কর, তা' তোমার পাপ থেকে অধিক। বাধ্য হয়ে যার পাপের জন্য দয়া দেখিয়েছ, তার পাপ তোমার নিকট এসে পড়বে। তখন সে দয়ার পাত্র না হয়ে তুমিই দয়ার পাত্র হবে। কেননা তোমার পুণ্য নষ্ট এবং হ্রাস হবে। আল্লাহর জন্য ক্রোধের কারণে যে পরনিন্দা হয় তাও তদ্রূপ। তাতে অন্যকে নিন্দা করা ওয়াজিব হয় না। কিন্তু শয়তান তোমার উপর পরনিন্দাকে প্রিয় করে দেয়। তোমার ক্রোধের পুণ্য দূর হয়ে যায় এবং তৎপরিবর্তে পরনিন্দার কারণে আল্লাহর অসন্তুষ্টি এসে পড়ে।
অষ্টম কারণঃ অন্যের প্রতি আশ্চর্যান্বিত হওয়া। এর দাওয়াই হল, যখন শয়তান তোমাকে পরনিন্দার দিকে বের করে নিয়ে যায়, তখন তুমি নিজে নিজেই, আশ্চর্যান্বিত হবে যে, তুমি নিজের আত্মাকে কিরূপে ধ্বংস করেছ। তা' সত্ত্বেও তুমি সংসারের শান্তি থেকে নিরাপদ হতে পারনি। তা' এই যে, আল্লাহ হয়ত তোমার গোপন কথা প্রকাশ করে দেবেন, যেরূপ তুমি তোমার ভ্রাতার গোপন কথা আশ্চর্যান্বিত হওয়ার রূপে প্রকাশ করেছ।
পাঠক-পাঠিকা। এক্ষণে তোমরা পরনিন্দার দাওয়াইর বিষয় জানতে পারলে। এসব বিষয়ে যাদের ঈমান দৃঢ়, তারা নিশ্চয়ই পরনিন্দা থেকে তাদের রসনাকে সংযত করে।
0 Comments