মসআলা- সন্তান পয়দা হওয়ার পর স্ত্রীলোকের পেশাবের দ্বার দিয়া যে রক্ত আসে তাহাকে নেফাস বলে। নেফাসের উর্দ্ধ সময় চল্লিশদিন, কমের কোন নিদ্দিষ্ট সংখ্যা নাই। সুতরাং যদি কাহারো এক বা অর্দ্ধ ঘণ্টা রক্ত আসিয়া বন্ধ হইয়া যায় তবে উহা নেফাস হইবে না।
মসআলা যদি কোন স্ত্রীলোকের দুইটি সন্তান পয়দা হয় তবে, প্রথমটি হইতে নেফাস গণনা করা হইবে। কোন স্ত্রীলোকের গর্ভপাত হইলে যদি সন্তানের শরীরের কোন অংশ জন্মিয়া থাকে, যেমন অঙ্গুলী, হাত ও পা ইত্যাদি এমতাবস্থায় রক্তপাত হইলে উহা নেফাসের মধ্যে গণ্য হইবে। (শরহে বেকায়া দ্রঃ)
মসআলা কোন স্ত্রীলোকের দশ দিবস পরে হায়েজ বন্ধ হইল অথবা চল্লিশ দিবস পর নেফাস বন্ধ হইল, এমতাবস্থায় গোসল করার পূর্বেই তাহার সঙ্গে সহবাস করিতে পারিবে কিন্তু এতটুকু সময় বিলম্ব করা প্রয়োজন যাহাতে গোসল অথবা নামাযের তাহরীমা বাঁধিতে পারে।
মসআলা- কোন স্ত্রীলোক সন্তান পয়দা হওয়ার দশ দিবস পর পাক হইলে গোসল করিায়া নামায পড়িবে ও রোজা রাখিবে। চল্লিশ দিবস পর্যন্ত অপেক্ষা করিবে না। কতক স্ত্রীলোক এমন আছে যাহারা চল্লিশ দিনের কম পাক হইলেও নামায পড়ে না বা রোজা রাখে না ইহা অত্যন্ত ভুল।
মসআলা কোন স্ত্রীলোকের তিন দিনের কম হায়েজ আসিলে অথবা চল্লিশ দিনের উর্দ্ধে নেফাস আসিলে উহা রোগ বলিয়া গণ্য হইবে। ঐ অবস্থায় নামায রোযা ইত্যাদি আদায় করিতে হইবে।
মসআলা- হায়েজের সময় ইহা মুসতাহাব যে, প্রতি নামাজের ওয়াক্তে অযু করিয়া কোন পাক জায়গায় বসিয়া কিছুক্ষণ সুবহানাল্লহ বা "আল্লাহ" "আল্লাহ্” করিবে তাহা হইলে নামাযের অভ্যাস নষ্ট হইবে না এবং পাক হইলে নামায পড়িতে মন লাগিবে।
মসআলা- প্রসবের পর যদি কাহারও এক বা অর্দ্ধ দিন সময় রক্ত বাহির হওয়ার পর উহা বন্ধ হয় তাহাও নেফাস। যদি সন্তান প্রসবের পর মোটেই রক্ত বাহির না হয় তবুও গোসল করা ওয়াজেব।
মসআলা- যদি কাহারও গর্ভপাত হয় এবং সন্তানের এক বা আধ অঙ্গ সৃষ্টি হইয়া থাকে তবে গর্ভপাতের পর যে রক্ত বাহির হইবে তাহাও নেফাস হইবে। আর যদি কোন অঙ্গই তৈয়ার না হইয়া থাকে, শুধু গোস্তের টুকরা হয় তবে উহা নেফাস নহে। বরং উহাতে যদি হায়েজের নিম্নতম সংখ্যা অর্থাৎ তিন দিবা রাত্রি রক্ত নির্গত হয় তবে হায়েজ ধরিবে আর যদি হায়েজ না হয় যেমন তিন দিনের কমে রক্ত আসে বা পাকীর সময় এখনও পুরো পনেরো দিন হয় নাই তবে উহ্য রোগ ধরিবে।
মসআলা- যদি চল্লিশ দিনের পূর্ব্বেই নেফাসের রক্ত বন্ধ হয় তবে তৎক্ষনাৎ গোসল করিয়া নামায পড়া শুরু করিবে। যদি গোসল করিলে ক্ষতি হয় তবে তাইয়াম্মুম করিয়া নামায শুরু করিবে। কখনও কোন নামায কাজা হইতে দিবে না।
মসআলা- হায়েজ বা নেফাস অবস্থায় কুর্তা বা কাপড়ের আঁচল দিয়া কোরআন শরীফ ধরা উঠান দুরস্ত নয়। অবশ্য শরীর হইতে সম্পূর্ণ পৃথক কোন কাপড় যেমন, রুমাল ইত্যাদি দ্বারা ধরিয়া উঠান জায়েয।
মসআলা যদি কোন হায়েজ বা নেফাস ওয়ালী স্ত্রীলোক বালিকাদিগকে কোরআন শরীফ পড়ায় তাহা হইলে বানান শিক্ষা দেওয়া দূরস্ত। আর টানা পড়াইবার সময় পুরা আয়াত পড়িবেনা বরং দুই এক শব্দ বলিয়া নিশ্বাস ছাড়িয়া দিবে এবং পূর্ণ আয়াতকে ছোট ছোট করিয়া বলিয়া দিবে।
মসআলা- কাহারও ফরয গোসলের দরকার ছিল এবং এখন গোসল না করা অবস্থায়ই হায়েজ আসিলে তাহার প্রতি গোসল করা ওয়াজেব হইবে না। বরং হায়েজ হইতে পাক হওয়ার পর এক গোসল দ্বারাই উভর গোসলের কাজ হইবে।
পুরুষ ও স্ত্রীলোকের বালেগ হওয়ার চিহ্ন
মসআলা- স্ত্রীলোকের হায়েজ হওয়া, গর্ভ হওয়া, পুরুষের সঙ্গে সঙ্গম করিতে লজ্জত পাওয়া, বীর্যপাত হওয়া, স্বপ্নদোষ হওয়া ইত্যাদি অবস্থায় বাগেলা বুঝিতে হইবে। শরীয়তের সমস্ত হুকুম তাহার উপর জারী হইবে। যদি উল্লিখিত লক্ষণ প্রকাশ না পায় এবং পনর বৎসর বয়স হয়, পুরুষ হউক বা স্ত্রী তখন তাহাকে বালেগ গণ্য করিবে। পুরুষদিগের স্বপ্নদোষ হওয়া, বগলে চুল উঠা, দাড়ী ও মোচ উঠা ও গলার স্বর মোটা হওয়া ইত্যাদি বালেগ হওয়ার লক্ষণ।
0 Comments