পাঠক-পাঠিকা। জেনে রাখ, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবাসে তার আল্লার উদ্দেশে। হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ না করে গত্যন্তর নেই। কেননা যদি তুমি কোন মানুষকে আল্লাহর বাধ্য এবং প্রিয় হবার কারণে তাকে ভালবাস, তখন যদি কেউ আল্লাহর অবাধ্য হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে ও ঘৃণার পাত্র হয়, তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা তোমার পক্ষে একান্তই জরুরী। কেউ যদি কোন কাজের জন্য কাউকে ভালবাসে, তবে তার বিরুদ্ধ কাজ যে করে, তার প্রতি তার ঘৃণা পোষণ স্বভাবতঃই প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বিষয় দু'টি ওতপ্রোতঃ ভাবে জড়িত, একটি থেকে অন্যটিকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। ভালবাসা এবং ঘৃণার এ রীতি সাধারণতঃ প্রত্যেকটি হৃদয়েই গুপ্ত থাকে। যখন এ দু'টো প্রবল হয়, তখন বাহ্যিক কার্যের মাধ্যমে এর নিদর্শন বা লক্ষণ প্রকাশ পায়। অর্থাৎ ভালবাসা বা আকর্ষণের প্রাবল্যে প্রিয়জনের নৈকট্য এবং মিলন প্রকাশ পায় এবং ঘৃণা বা বিদ্বেষের আধিক্যে দু' ব্যক্তির মধ্যে দূরত্ব এবং অমিল প্রকাশ পায়। তারপর এ দু'টো অবস্থাকে বলা হয় বন্ধুত্ব ও দুশমনি। এজন্যই আল্লাহতায়ালা হযরত মুসা (আঃ)কে বলেছিলেন, তুমি কি আমার উদ্দেশ্যে কাউকে বন্ধু বা শত্রু করেছ?
যে ব্যক্তির আনুগত্য বা বাধ্যতা ছাড়া আর কিছুই তোমার নিকট প্রকাশ পায় না, তুমি তাকে ভালবাস। আর যে ব্যক্তির অবাধ্যতা এবং গুনাহ ব্যতীত আর কিছুই প্রকাশ পায় না, তাকে তুমি ঘৃণা কর। কিন্তু যখন ধর্মকর্মগুলো মিশ্রিত হয়, তখন বিষয়টি জটিল হয়ে পড়ে। তখন তুমি বল যে, আমি কিরূপে ঘৃণা ও ভালবাসা একসাথে করব? যখন তারা পরস্পর বিপরীত, তাদের ফলও তদ্রূপ বিপরীত। অর্থাৎ মতের মিল এবং মতের অমিল এবং বন্ধুত্ব ও শত্রুতা। আমি বলব যে, এটা আল্লাহর প্রতি মানুষের কর্তব্যের বেলায় পরস্পর বিরোধী নয়। যেরূপ মানুষের ক্ষেত্রেও তা' বিরোধী নয়। কোন লোকের মধ্যে বিভিন্ন স্বভাবের সমন্বয় হয় এবং কতক স্বভাবের জন্য তাকে ভালবাসা যায় এবং কতক স্বভাবের জন্য তাকে ঘৃণা করা হয়। এক কারণে তাকে ভালবাসা যায় এবং অন্য কারণে ঘৃণা করা হয়। দু'টো অবস্থার মধ্যে এক অবস্থার উপর তার প্রতি মনে পূর্ণ ভালবাসারও উদ্রেক হবে না আবার তার প্রতি ঘৃণাও হবে না। এরূপ যদি কারও তিনটি সন্তান থাকে, তার একটি জ্ঞানী এবং পিতৃভক্ত, দ্বিতীয়টি নির্বোধ এবং অবাধ্য, তৃতীয়টি নির্বোধ এবং পিতৃভক্ত অথবা জ্ঞানী ও পিতার অবাধ্য। তখন সন্তানের পিতা এ তিনটি সন্তানের সাথে তিনটি অবস্থার মধ্যে থাকে। কেননা তাদের তিনটি প্রকৃতি আছে। যার মধ্যে অবাধ্যতা প্রবল, তার সঙ্গে তোমার অবস্থা এরূপই হওয়া চাই অর্থাৎ তোমার তাকে ঘৃণা করা চাই আর যার মধ্যে আনুগত্য আছে, তার সঙ্গে তোমার অবস্থাও তদ্রূপ হওয়া চাই অর্থাৎ তাকে ভালবাসা এবং স্নেহ করা প্রয়োজন। যার মধ্যে দু'টি স্বভাবই সমান বিদ্যমান, তারজন্য কিছু ভালবাসা এবং কিছু ঘৃণা থাকা চাই।
যদি বলা হয় যে, প্রত্যেক মুসলমানের ইসলাম গ্রহণ করাই তার ধর্ম। সুতরাং ইসলাম থাকা সত্ত্বেও তাকে ঘৃণা করা যায় কিরূপে? তার উত্তর এই যে, তার ইসলামের জন্য তাকে ভালবাসবে এবং তার গুনাহর জন্য তাকে ঘৃণা করবে। যদি সে এমন অবস্থার মধ্যে থাকে যে,তাকে কাফির বা গুনাহগার বলে অনুমান করা হয়, তখন এ দু'টো বিষয়ের তদারক করে তাকে ঘৃণা করবে। কোন ব্যক্তি যদি কোন এক উদ্দেশে। তোমার সঙ্গে শত্রুতা করে, তবে তার সাথে মধ্যম অবস্থার ব্যবহার করবে। অর্থাৎ তার সাথে সন্তুষ্ট হবে না এবং অসন্তুষ্টও হবে না। তার সাথে ভালবাসাও করবে না এবং শত্রুতাও করবে না। তাকে ঘৃণাও করবে না. তার সম্মানার্থে এতদূর বাড়াবাড়ি করো না, যতদূর ঐ ব্যক্তির সঙ্গে করবে যার সাথে মতের মিল। রয়েছে। যে ব্যক্তি, তোমার সাথে সব কাজে বিরোধিত্য করে, তাকে যেরূপ তুমি ঘৃণ্য কর, তদ্রূপ ঘৃণা ঐ ব্যক্তিকে কর না। যখন তার গুনাহ প্রবল হয়, তখন এই মধ্যম পন্থা তোমাকে ঘৃণার দিকে নিয়ে যাবে। যে আল্লাহকে মান্য করে, তার সাথে তদ্রূপ ব্যবহার করবে এবং যে আল্লাহকে অমান্য করে, তার সাথে ঠিক তদোপযোগী ব্যবহার করবে।
যদি প্রশ্ন কর যে, কোন জিনিস দ্বারা ঘৃণা করা যায়? তার উত্তরে বলব, বাক্যদ্বারা ঘৃণা প্রকাশ করা যায়, কার্যদ্বারাও তা' প্রকাশ করা যায়। বাক্যদ্বারা ঘৃণ্য প্রকাশ করলে কখনও কখনও গুনাহগারের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করবে আবার কখনও কখনও তাকে কড়া কথা বলবে। কার্যদ্বারা ঘৃণ্য প্রকাশ করার নিয়ম হল, কখনও কখনও তার অসৎ উদ্দেশ্য নষ্ট করে দেবে। তার পার্থিব মঙ্গল ও কল্যাণে বাধাদান করবে। তোমার এ কাজের একটি অপরটি হতে অধিক কঠোর হবে। কেননা তা' তার গুনাহ ও অবাধ্যতার পরিমাণ অনুপাতে হবে। যখন দেখবে যে, সে তার গুনাহর জন্য খুবই অনুতপ্ত, এবং তার সে গুনাহ পুনঃ পুনঃ করবার সম্ভাবনা নেই, এমতাবস্থায় তার দোষ গুপ্ত রাখাই উত্তম। গুনাহ ছোট হোক বড় হোক তা' যদি এমন ব্যক্তি বরাবর করে যার সাথে তোমার ভালবাসা, ভ্রাতৃত্ব এবং সংসর্গ রয়েছে। তবে তার অন্য ব্যবস্থা আছে। এ ব্যাপারে আলিমদের মধ্যে মতভেদ বিদ্যমান। এমতক্ষেত্রে যখন ভালবাসা এবং সংসর্গ তত গাঢ় না হয় তখন ঘৃণার লক্ষণ প্রকাশ করা দরকার। সেই লক্ষণগুলে এরূপঃ তার মন্দ কাজের প্রতিবাদ করা, তার নিকট থেকে দূরে থাকা, তার চোখের দিকে পারতপক্ষে দৃষ্টি না করা ইত্যাদি। তার সাথে কর্কশ কথা বলাও এর একটি লক্ষণ। এগুলোই তার কার্যের প্রতিবাদের ব্যবস্থা। অবশ্য এগুলো গুনাহর কাজের গুরুত্ব ও লঘুত্ব পরিমাপ করে করা উচিত। এরূপভাবে কার্যের মধ্যে ঘৃণারও দু'টো স্তর আছে। একটি হল, নিত্যাবশ্যকীয় সাহায্য, দয়া প্রদর্শন এবং সহানুভূতি-সহৃদয়তা বন্ধ করে দেয়া। এটা সর্বনিম্ন স্তর। দ্বিতীয় স্তর হল, তার আবশ্যকীয় বিষয়বস্তু নষ্ট করে দেয়ার চেষ্টা করা। যেমন শত্রু তার প্রতিপক্ষের বিষয়বস্তু নষ্ট করে দেয়। এর ফল এবং সার্থকতা হল, সে আর গুনাহর কার্য করতে পারবে না। কোন কোন ক্ষেত্রে গুনাহর পথ নষ্ট করে দিলেও যার কোন উন্নতি হয় না, তার পক্ষে এগুলো নষ্ট করে দেয়া অনর্থক। তার দৃষ্টান্ত ঠিক ঐ লোকের ন্যায়, যে মদ পান করে আল্লাহর নিকট গুনাহ করে। যদি তাকে কোন স্ত্রীলোকের সাথে বিবাহ দেয়ার ব্যাপারে সাহায্য কর, তাহলে সে তার ধন- সম্পদ সে ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যয় করবে বটে, কিন্তু তার মদ পান করে গুনাহ করার স্বভাব বন্ধ নাও হতে পারে। যদি তার উদ্দেশ্য এবং আবশ্যকীয় কাজ পূর্ণ করার জন্য তাকে সাহায্য কর তা' করতে পার। আর যদি তোমার ঘৃণা প্রকাশ করার জন্য তাকে তার গুনাহর উপর ছেড়ে দাও তাতেও কোন ক্ষতি নেই। তবে তাকে গুলাহর উপর ছেড়ে দেয়া ওয়াজিন সাধু। কেনন কখনও তাকে তোমার সাহায্য করার নিয়ত হতে পারে। তার প্রতি তোমার দয়া প্রকাশেরও নিয়ত হতে পারে, যেন তোমার ভালবাসার বন্ধন সুদৃঢ় হয় এবং তোমার উপদেশ সে গ্রহণ করে। এটাই উত্তম ব্যবস্থা। আর যদি তুমি সে মুসলমান বলে তার উদ্দেশ্যকে সাহায্য করা উত্তম মনে কর, তাও নিষিদ্ধ নয়। বরং তা' অধিক উত্তম। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, "তোমাদের মধ্যে যারা ধনবান এবং স্বচ্ছল অবস্থার অধিকারী তারা যেন আত্মীয়-স্বজন, দরিদ্র এবং মুহাজিরদেরকে আল্লাহর পথে দান না করার জন্য প্রতিজ্ঞা না করে, বরং তাদেরকে যেন তারা ক্ষমা করে। তোমরা কি ভালবাসনা যে আল্লাহতায়ালা তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেদা এ আয়াতের শানেনুযুল হল, মুস্তাহ বিন আছাছ। হযরত আয়েশা (রাঃ) এর অপবাদ রটনায় শরীক ছিল এবং হযরত আবুবকর (রাঃ) তাকে অর্থ দান করতেন। এ ঘটনার পর তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন যে, তিনি আর তাকে কিছু দান করবেন না। তখন এ আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছিল। যদিও মুস্তাহর গুনাহ অত্যন্ত বড় ছিল। কেননা সে হুযুরে পাক (দঃ) এর হেরেমের পবিত্রতার অপবাদ রটনা করেছিল এবং হযরত আয়েশা (রাঃ) এর চরিত্রে মানুষের সামনে কলঙ্কারোপ করেছিল। কিন্তু তা' সত্ত্বেও হযরত আবুবকর (রাঃ) তখন যেন নিজ অন্তরের মধ্যে উক্ত ঘটনার জন্য দোষীর ন্যায় ছিলেন। যে অত্যাচার করে তাকে ক্ষমা করা এবং যে অন্যায় করে তাকে উপকার করা সিদ্দিকীনদের স্বভাবধর্ম। যে তোমাকে অত্যাচার করে তার উপকার করা কত উত্তম। কিন্তু যে অন্যকে অত্যাচার করে এবং আল্লাহর নিকট গুনাহ করে তাকে উপকার করা উত্তম নয়। কেননা অত্যাচারীকে উপকার করলে অত্যাচারিত অর্থাৎ মজলুমের প্রতি অন্যায় করা হয়। অথচ মজলুমের স্বত্ব রক্ষা করা প্রয়োজন। অত্যাচারীর হৃদয়কে শক্তিশালী করার চেয়ে তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিজের হৃদয়কে শক্তিশালী করা আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়। তুমি নিজে যখন অত্যাচারিত অর্থাৎ মজলুম হও তখন তোমার পক্ষে অত্যাচারীকে ক্ষমা করা উত্তম। পূর্বকালের বুযর্গগণ গুনাহগারদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশে বিভিন্ন মত পোষণ করতেন। কিন্তু তাঁরা প্রত্যেকেই অত্যাচারী এবং বেদআত পন্থীদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশের ব্যাপারে একমত ছিলেন। যে ব্যক্তি নিজের ব্যাপারে আল্লাহর নিকট গুনাহ করত পূর্বকালের বুযর্গদের মধ্যে এমন লোকও ছিলেন যিনি তার হৃদয়কে কঠোর করে গুনাহগারদের প্রতি কিঞ্চিৎ করুণা প্রদর্শন করা ভালবাসতেন।
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) অনেক সামান্য ব্যাপারেও প্রধান প্রধান বুযর্গদের সাথে মতভেদ করেছেন। এমন কি তিনি হযরত ইয়াহইয়া বিন মুয়াইয়্যিন (রহঃ) কে বর্জন করেছিলেন। ব্যাপারটি খুবই সামান্য ছিল। তিনি বলেছিলেন, আমি কারও নিকট কিছু চাইব না, তবে যদি বাদশাহ আমাকে কিছু পাঠিয়ে দেন আমি তা' গ্রহণ করব। তিনি হযরত হারেছ মুহাসাবির সাথে সাক্ষাত করেছিলেন। কেননা তিনি মুতাজিলাদের ভ্রান্ত মতবাদ খন্ডনজনিত একখানা কিতাব লিখেছিলেন। তার মধ্যে প্রথমেই তিনি তাদের ভ্রান্ত মতবাদের বিষয় উল্লেখ করেছিলেন। ইমাম সাহেব হারেছ মুহাসাবিকে বললেন, আপনি প্রথম তাদের ভ্রান্ত মতবাদগুলো উল্লেখ করেছেন এবং মানুষকে সে বিষয় চিন্তা করার উৎসাহ দিয়েছেন। মতবাদগুলো উল্লেখ করার পর আপনি তা' প্রমাণ দ্বারা খন্ডন করেছেন ঠিকই কিন্তু এতে সেই ভ্রান্ত মতবাদগুলো পাঠকের মনে বদ্ধমূল হয়ে যাবার অবকাশ রয়েছে। তিনি হযরত আবু হুর (রহঃ) কে নিম্নোক্ত হাদীসের একরূপ ব্যাখ্যা করার কারণে বর্জন করেছিলেন। হাদীসাটি এইঃ "ইন্নাল্লাহা খালাক্কা আদামা আলা ছুরাতিহী" অর্থাৎ নিশ্চয়ই আল্লাহ হযরত আদম (আঃ) কে তাঁর আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন।
গুনাহ করার নিয়তের তারতম্যের এ ব্যাপারেও তারতম্য হয় এবং গুনাহর অবস্থার তারতম্যে নিয়তের তারতম্য হয়। মনে যদি এই ভাবনা প্রবল হয় যে, লোকের তাকদীরে যা লিখা রয়েছে তার বিপরীত কাজ করতে সে সম্পূর্ণ অক্ষম এবং সে তাকদীরের অধীন। তাহলে শত্রুতা এবং ঘৃণার বিষয় সহজ হয়ে যায় অর্থাৎ তাকে ঘৃণা করা কর্তব্য হয়। যদি সে নিজের কর্তব্যের বেলায় ত্রুটি করে গুনাহর কাজ করে এবং বলে যে, এটা তার তাকদীরের জন্য হয়েছে। তাকে সতর্ক করায় কোন ফলোদয় হবে না। তার প্রতি কর্তব্যের ত্রুটিতে যদি সে দয়া প্রদর্শন করে তাহলে তা' প্রবঞ্চনা ও শয়তানের কুমন্ত্রণা মাত্র।। এ বিষয়ের প্রতি সজাগ থাকতে হবে। যদি বলা হয় যে, ঘৃণা প্রকাশের সর্বনিম্ন স্তর যখন বর্জন, প্রতিবাদ, দয়া এবং সাহায্য কর্তন, তখন কেউ তা' ত্যাগ করলে তা' কি আল্লাহর নাফরমানী হয় না? এ প্রশ্নের উত্তরে আমি বলব, প্রকাশ্য বিদ্যা এ ব্যাপারে জড়িত করে না এবং তদ্বারা ওয়াজিব হবারও সাক্ষ্য পাওয়া যায় না। কেননা আমরা জানি যে, হুযুরে পাক (দঃ) এবং ছাহাবীদের যমানায় যারা মদ পান করত এবং নানারূপ অশ্লীল কাজে নিমগ্ন থাকত তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা হত না। তাদের বিভিন্ন শ্রেণী ছিল। এক শ্রেণীর গুনাহগার লোকদের উপর কর্কশ বাক্য ব্যবহার করা হত এবং তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা হত। আর এক শ্রেণীর গুনাহগার থেকে বিমুখ থাকা হত। অন্য আর এক শ্রেণীর গুনাহগারের প্রতি করুণার দৃষ্টিতে তাকানো হত। কিন্তু তাদেরকে বর্জন করা ও দূরে রাখা পছন্দ করা হত না। এটাই ধর্ম বিধানের সূক্ষ্ম তত্ত্ব। আখেরাতের পথের পথিকদের বিভিন্ন পথ চলার মধ্যে প্রভেদ রয়েছে। গুনাহর অবস্থানুযায়ী প্রত্যেকের সাথে ব্যবহারে তারতম্য আছে। কখনও কখনও গুনাহগারকে বর্জন করা নিন্দনীয় এবং কখনও কখনও তা' প্রশংসনীয়। ফজীলতের স্তরসমূহের মধ্যে এর বিশদ বর্ণনা দেয়া হবে। অবশ্য কোনক্রমেই এগুলো হারাম বা ওয়াজিবের স্তরে পৌঁছবে না।
0 Comments