১। তকবিরে-তাহরিমা একটি ফরজ, দাঁড়াইয়া তকবির পড়া ফরজ। যদি কেহ বসিয়া 'আল্লাহো আকবার' পড়িয়া পরে দাঁড়াইয়া যায়, তবে নামাজে দাখিল হইবে না। যদি এমামকে রুকু অবস্থায় পাইয়া 'আল্লাহো আকবার' বলিতে বলিতে রুকুতে যায়, অর্থাৎ তকবিরের শেষ অক্ষর এই সময় খতম হয় যে, হাত লম্বা করিলে হাঁটু ধরিতে পারে, তবে নামাজ জায়েজ হইবে না। দাঁড়াইয়া নফল নামাজ পড়ার ইচ্ছা করিয়া রুকুতে গিয়া তকবির পড়িলে, নামাজ বাতীল হইবে। যদি বসিয়া নফল নামাজ পড়ার ইচ্ছা করিয়া বসিয়া তকবির বলে, তবে নামাজ জায়েজ হইবে।
মোক্তাদী 'আল্লাহ্' শব্দকে এমামের সঙ্গে বলিল, কিন্তু "আকবার” শব্দকে এমামের পূর্বে খতম করিল। নামাজ জায়েজ হইবে না। মোক্তাদী এমামের পূর্বে তকবির বলিল, কিন্তু যদি এক্তেদার নিয়ত করে, তবে এমামের নামাজের মধ্যে দাখিল হইবে না। অবশ্য নিজের পৃথক নামাজে দাখিল হইবে।
২। কোয়াম একটি ফরজ। কেয়ামের নিম্ন দরজা এই যে, যদি হাত লম্বা করে, তবে যেন হাঁটুতে ধরিতে না পারে। আর উহার পূর্ণ দরজা এই যে, তীরের ন্যায় সোজাভাবে দাঁড়ান।
যে পরিমাণ কেরাত ফরজ, সেই পরিমাণ দাঁড়ন ফরজ এবং যে পরিমাণ কেরাত ওয়াজেব, সেই পরিমাণ দাঁড়ান ওয়াজেব। আর যে পরিমাণ কেরাত ছুন্নত কিংবা মোস্তাহাব, সেই পরিমাণ দাঁড়ান ছুন্নত কিংবা মোস্তাহাব। এক আয়াত পরিমাণ দাঁড়ান ফরজ, ছুরা ফাতেহা ও অন্য একটি ছুরা পরিমাণ দাঁড়ান ওয়াজেব। তেওয়ালে মোফাছছাল, আওছাতে মোফাছছাল ও কেছারে মোফাছছাল, যে যে নামাজে ছুন্নত, সেই সেই নামাজে সেই পরিমাণ দাঁড়ান ছুন্নত। তাহাজ্জোদ নামাজে তদপেক্ষা অধিক কোরআন পড়া মোস্তাহাব, কাজেই সেই পরিমাণ দাঁড়ান মোস্তাহাব।
৩। কোরআন পড়া ফরজ। কোরআনের প্রত্যেক অক্ষরকে মাব্রেজ হইতে এমন ভাবে বাহির করিবে যে, অন্য অক্ষর হইতে পৃথক ভাবে শুনা যায়। চুপে চুপে পড়িলে, এরূপ ভাবে পড়িতে হইবে, যেন নিজে শুনিতে পায়। যদি অক্ষরগুলি শুদ্ধ উচ্চারণ করে, কিন্তু এত আস্তে পড়ে যে, নিজে শুনিতে না পায়, তবে নামাজ জায়েজ হইবে না। অবশ্য যদি কোন প্রকার আওয়াজ হওয়ার কিংবা বধিরতার জন্য উহা শুনিতে না পায়, তবে নামাজ জায়েজ হইবে। ফরজ নামাজের দুই রাকয়াতে, বেতের ও নফল নামাজের প্রত্যেক রাকয়াতে বড় এক আয়াত পড়া বা ছোট তিন আয়াত পড়া এমাম ও একা নামাজীর জন্য ফরজ। মোক্তাদীর পক্ষে কোন নামাজে ছুরা ফাতেহা বা অন্য কোন আয়াত পড়া জায়েজ নহে।
৪। রুকু করা ফরজ। ইহার নিম্ন দরজা এই যে, মস্তক এইরূপ ঝুকাইবে যে, হাত লম্বা করিলে, যেন হাঁটু ধরিতে পারে। উহার পূর্ণ অবস্থা এই যে, পিঠ সোজা বিছাইবে। যেন উহার উপর একটি পানির পেয়ালা রাখিলে, পড়িয়া না যায়। বারজান্দি বলেন, যদি বসিয়া নামাজ পড়ে, তবে রুকুতে যেন ললাট দুই হাঁটুর অগ্রভাগের বরাবর হয়। আল্লামা শামী বলেন, ইহা রুকুর কামেল অবস্থা। নচেৎ মস্তক ও পিঠ ঝুকাইলে, রুকু আদায় হইয়া যাইবে।
0 Comments