রসূলুল্লাহ (সাঃ) নামাযে যেসব বিষয় নিষিদ্ধ করেছেন সেগুলো এই : নামাযে করজোড়ে দণ্ডায়মান হওয়া এক পায়ে জোর দিয়ে অপর পা ঘোড়ার মত বাঁকা করে রাখা। কুকুরের মত বসা; অর্থাৎ, নিতম্বে বসে উভয় হাঁটু খাড়া করে উভয় হাত মাটিতে রেখে দেয়া। এমনভাবে চাদর ইত্যাদি জড়িয়ে নামায পড়া যেন হাত ভেতরেই থাকে এবং রুকু সেজদায়ও হাত বাইরে না আনা। ইহুদীরা এরূপ করত, তাই তাদের মত করতে নিষেধ করা হয়েছে। রুকু সেজদা করার সময় হাত কোর্তা ইত্যাদিতেও হাত ভেতরে রাখা উচিত নয়। সেজদা করার সময় পরিধেয় বস্ত্র পেছনে অথবা সামনে দিয়ে তুলে নেয়া। ইমাম আহমদ কোর্তার উপর লুঙ্গি বেঁধে নামায পড়া মাকরূহ বলেছেন। কোমরে হাত রাখা, দাঁড়ানো অবস্থায় বাহু শরীর থেকে আলাদা রেখে কোমরে হাত রাখা, ইমামের জন্যে আল্লাহু আকবার বলার সাথে সাথেই কেরাআত শুরু করে দেয়া এবং কেরাআত খতম হতেই রুকুর তকবীর বলা, মুক্তাদীর জন্যে নিজের শুরুর তকবীরকে ইমামের তকবীরের সাথে এবং সালামকে ইমামের সালামের সাথে মিলিয়ে দেয়া, এছাড়া প্রথম সালামকে দ্বিতীয় সালামের সাথে মিলিয়ে দেয়া ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ের জন্যে নিষিদ্ধ। উভয় সালাম আলাদাভাবে বলতে হবে। প্রস্রাব অথবা পায়খানার চাপ নিয়ে নামাযে পড়া, মোজা পরিধান করে নামায পড়া- এগুলো খুশুর পরিপন্থী। তেমনি ক্ষুধা-পিপাসা নিয়ে নামায পড়াও মাকরূহ। রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: রাতের খানা এসে গেলে এবং নামাযের তকবীর হলে আগে খানা খেয়ে নাও; কিন্তু নামাযের সময় সংকীর্ণ হলে অথবা মন স্থির থাকলে আগেই নামায পড়বে। অন্য এক হদীসে ক্ষুব্ধ ও রাগান্বিত অবস্থায় নামায পড়তে নিষেধ করা হয়েছে। হযরত হাসান বসরী (রঃ) বলেন: যে নামাযে মন উপস্থিত না থাকে, সেই নামায দ্রুত আযাবের দিকে নিয়ে যায়। এক হাদীসে আছে- নামাযের মধ্যে সাতটি কাজ শয়তানের পক্ষ থেকে হয়- নাক দিয়ে রক্ত আসা, নিন্দা, কুমন্ত্রণা, হাই তোলা, চুলকানো, এদিক ওদিক দেখা এবং কোন কিছু নিয়ে খেলা করা। কেউ কেউ ভুল সন্দেহকেও এর সাথে যোগ করেছেন। জনৈক মনীষী বলেন: নামাযের মধ্যে চারটি কাজ অন্যায়- এদিক ওদিক তাকানো, মুখ মোছা, কংকর সমান করা এবং মানুষের চলার পথ সামনে রেখে নামায পড়া।
অঙ্গুলিসমূহকে পরস্পরের ফাঁকে ঢুকানো এবং অঙ্গুলি ফুটানো, মুখ আবৃত করা, রুকুতে হাতের এক তালু অপর তালুর সাথে মিলিয়ে উভয় হাঁটুর মাঝখানে রাখাও এর অন্তর্ভুক্ত। জনৈক সাহাবী বলেন: আমরা প্রথমে এরূপ করতাম; এরপর এটা নিষিদ্ধ হয়েছে। সেজদা করার সময় মাটিতে ফুঁক দেয়া অথবা হাতে কংকর সমান করা। কেননা, নামাযে এসব কর্মের প্রয়োজন নেই। দাঁড়ানো অবস্থায় প্রাচীরে হেলান দেয়া, যদি এমনভাবে হেলান দেয় যে, হেলানের বস্তু সরিয়ে নিলে সে নির্ঘাত পড়ে যাবে, তবে নামায নষ্ট হয়ে যাবে।
0 Comments