সুন্নত গোছলের বিবরণ
১। জুম্মার নামাজের জন্য গোছল করা ছুন্নত।
২। দুই ঈদের নামাজের জন্য গোছল করা ছুন্নত।
৩। হজ্জ এবং ওমরার এহরাম বাঁধাকালে, গোছল করা ছুন্নত।
৪। হজ্জের দিবস হাজিগণের আরফাত ময়দানে দণ্ডায়মান হওয়ার জন্য সূর্য গড়িয়া গেলে, গোছল করা ছুন্নত।
যদি একই দিবসে জুয়া ও ঈদ কিম্বা জুময়া ও হজ্জ হয়, তবে এক গোছলে উভয় গোছলের নিয়ত করিলে, উভয় ছুন্নত আদায় হইবে। এইরূপ জুম্ম্মা ও নাপাকির গোছল, কিংবা নাপাকি ও হায়েজের গোছল, অথবা ঈদ, জুয়া, সূর্য গ্রহণ ও এস্তেস্কা এই চারি গোছলের একত্রে নিয়ত করিলে, এক গোছলে উহা আদায় হইবে।
মোস্তাহাব গোছলের বিবরণ
১। কাফের পাক শরীরে মুছলমান হইলেও গোছল করা।
২। বালক কিংবা বালিকাদের ১৫ বৎসর বয়সের মধ্যে বালেগ হওয়ার চিহ্ন না পাওয়া গেলে, বালেগ ও বালেগা হওয়ার হুকম পাইয়া গোছল করা।
৩। উন্মাদের চৈতন্য প্রাপ্ত হইয়া গোছল করা।
৪। পীড়া অথবা আঘাত বশতঃ অচৈতন্য হইলে, চৈতন্য পাইয়া গোছল করা।
৫। নেশাখোরের নেশা হইতে চৈতন্য পাইয়া গোছল করা।
৬। শিঙ্গা লাগাইয়া শরীরের কোন অংশ হইতে রক্ত মোক্ষণ করার পরে গোছল করা।
৭। মৃতকে গোছল দেওয়ার পরে গোছল করা।
৮। শবে বরায়াতের (শাবানের ১৫ই রাত্রে) গোছল করা।
৯। শবে কদরের কয়েক রাত্রে (২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯) গোছল করা।
১০। আরাফাতের (৯ই জেলহজ্জের) রাত্রে গোছল করা।
১১। মদীনা শরীফে দাখেল হওয়ার সময়।
১২। ১০ই জেলহজ্জের অতি প্রত্যুষে সূর্য উদয়ের পূর্বে হাজিদের মোজদালেফাতে দাঁড়ানোর পূর্বে।
১৩। উক্ত (১০ই জেলহজ্জের) দিবসে মিনাতে দাখিল হওয়ার সময়।
১৪। তথায় (মিনাতে) প্রথম কঙ্কর মারার সময়।
১৫। মক্কা শরীফে দাখিল হওয়াকালে।
১৬। তাওয়াফে জিয়ারতের জন্য।
১৭। ১১/১২/১৩ই জিলহজ্জ এই তিন দিবসে কাঁকর মারা কালে।
১৮। চন্দ্র গ্রহণের সময়।
১৯। সূর্য গ্রহণের সময়।
২০। এস্তেস্কা নামাজের জন্য।
২১। কোন ভয়াবহ ঘটনা উপস্থিত হইলে।
২২। দিবাভাগে অন্ধকার হইয়া গেলে।
২৩। ভীষণ ঝড় তুফান হইলে।
২৪ । গোনাহ হইতে তওবা কালে।
২৫। বিদেশ হইতে গৃহে আসা কালে।
২৬। পীড়ার জন্য স্ত্রীলোকের রক্তস্রাব হইয়া বন্ধ হইলে।
২৭। কাহারও প্রাণ বধ হওয়া কালে।
২৮। লোকের মজলিসে উপস্থিত হওয়া কালে।
২৯। নূতন কাপড় পরাকালে।
৩০। স্বপ্নদোষ হওয়ার পরে স্ত্রীসঙ্গম করার ইচ্ছা করিলে।
গোছল করার ধারা
প্রথমে প্রস্রাব পায়খানার আবশ্যক হইলে, উহা করিয়া লইবে। তৎপরে উত্তর কিংবা দক্ষিণ দিকে মুখ করিয়া সম্ভব হইলে, নির্জন এবং উচ্চস্থানে বসিয়া মুখে 'বিছমিল্লাহ' পড়িবে, অন্তরে গোছলের নিয়ত করিবে, তৎপর পানি পাত্রে হাত ডুবাইবার পূর্বে দুই হাত কব্জা অবধি ধৌত করিবে। তৎপরে ডাহিন হাতে পানি ঢালিয়া বাম হাত দ্বারা লিঙ্গ এবং মলদ্বার ধৌত করিয়া লইবে। তৎপরে ঐ প্রকার শরীরের অন্যস্থানে নাপাকি লাগিয়া থাকিলে, ধৌত করিয়া বাম হাত দিয়া মাটিতে মর্দ্দন করিবে। পরে নামাজের ওজুর ন্যায় ফরজ, ছুন্নত ও মোস্তাহাবসহ ওজু করিবে। যদি গোছল করা পানি পায়ের নিকট সংগৃহীত হয়, তবে তখন পা ধৌত করিবে না। পরে তিনবার মস্তকে পানি ঢালিবে, পরে তিনবার ডাহিন কাঁধে, পরে তিনবার বাম কাঁধে, পরে তিনবার অবশিষ্ট শরীরে পানি ঢালিবে।
শরীরে পানি ঢালিবার সময় প্রথমবার প্রত্যেক স্থান মর্দ্দন করিবে। এই সময় নিয়মিত পানি ঢালিবার প্রতি লক্ষ্য রাখিবে। নিয়মিত পানি তিন সের আধপোয়া। তৎপরে রুমাল বা গামছা দ্বারা শরীর মুছিয়া ফেলিবে, পরে কাপড় পরিয়া পদদ্বয় না ধুইয়া থাকিলে, ধুইয়া লইবে। তৎপরে দুই রাকায়াত নামাজ পড়িবে।
0 Comments