ওজুর মোস্তাহাবগুলি কী কী

ওজুর মকরূহগুলি

        ১। মুখমণ্ডলে বা অন্যান্য অঙ্গে সজোরে পানি পৌঁছান, মকরূহ তাঞ্জিহি।

        ২। এরূপ কম পানিতে ওজু করা মকরূহ-যাহাতে অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ হইতে পানি নির্গত হওয়া স্পষ্টভাবে প্রকাশ না হয়।

        ৩। শরিয়তের নিরূপিত পরিমাণ অপেক্ষা বেশী পানি ব্যয় করা মকরূহ, কেহ কেহ উহা মকরূহ তাঞ্জিহি বলিয়াছেন, অপরে উহা মকরূহ তাহরিমি বলিয়াছেন।

        8| পৃথক পৃথক পানি দ্বারা তিনবার মস্তক মছহ করা মকরূহ।

        ৫। স্ত্রীলোকের ওজু ও গোছলের অবশিষ্ট পানি দ্বারা ওজু করা মকরূহ, উহা মকরূহ তাহরিমি কিংবা তাঞ্জিহি, ইহাতে মতভেদ আছে।

    ৬। অপহৃত জমির মৃত্তিকা ও পানি দ্বারা ওজু ও তায়াম্মোম 'করা মকরূহ।

    ৭। নাপাক স্থানে বসিয়া ওজু করা মকরূহ।

    ৮। মাছজেদের মধ্যে ওজু করা মকরূহ, কিন্তু যদি কেহ কোন পাত্রে কিংবা ওজুর জন্য নির্মিত স্থানে ওজু করে, তবে মকরূহ হইবে না।

    ৯। কোন পানিতে থুথু কিংবা কফ নিক্ষেপ করা মকরূহ। ইহা মকরূহ তাঞ্জিহি।

    ১০। বিনা ওজরে বাম হস্তে কুল্লী করা ও ডাহিন হস্তে নাক ঝাড়া মকরূহ।

    ১১। নিজের জন্য কোন ওজুর পাত্র খাস করা মকরূহ।

\    ১২। ওজুর পানিতে ফুৎকার করা মকরূহ।

    ১৩। ওজুকালে মুখ ও চক্ষুদ্বয় বন্ধ করিয়া রাখা মকরূহ।

 ওজুর মোস্তাহাবগুলি

    ১। দুই হাত, দুই পা ধৌতকালে প্রথমে ডাহিন হাত ও ডাহিন পা ধৌত করা।

    ২। দুই হস্তের পৃষ্ঠদেশ দ্বারা ঘাড় মছহ্ করা।

    ৩। পশ্চিম দিকে মুখ করিয়া ওজু করা।

    8। কর্ণদ্বয় মছহ করার সময় ভিজা কনিষ্ঠা অঙ্গুলিদ্বয়কে দুই কর্ণের মধ্যে দাখিল করা।

    ৫। মা'জুর ব্যতীত অন্য লোকের ওয়াক্তের পূর্বে ওজু করা।

    ৬। ঢিলা আঙ্গুটিকে ওজুকালে নাড়াইয়া দেওয়া, এইরূপ কসা আঙ্গুটিরও ব্যবস্থা হইবে, কিন্তু উহার মধ্যে পানি পৌঁছিয়া না থাকিলে, নাড়াইয়া দেওয়া ফরজ।

        এইরূপ কর্ণের বালি নাড়াইয়া দেওয়া মোস্তাহাব।

    ৭। ওজু করিতে বিনা ওজোরে অন্যের সাহায্য না লওয়া।

    ৮। জরুরী কারণ ব্যতীত কাহারও সঙ্গে কথা না বলা।

    ৯। উচ্চস্থানে বসিয়া ওজু করা।

    ১০। অন্তরের নিয়তের সহিত মৌখিক নিয়ত সংক্রান্ত শব্দ উচ্চারণ করা।

    ১১। ওজু শুরু করাকালে বিছমিল্লাহ্ পড়া ও প্রত্যেক অঙ্গ ধৌত করাকালে 'শাহাদত কলেমা' পড়া।

    ১২। প্রত্যেক অঙ্গ ধৌত বা মছহ্ করাকালে দোওয়া পড়া, 

    ১৩। প্রত্যেক অঙ্গ ধৌত বা মছহ্ করাকালে 'দরূদ শরিফ' পড়া।

   ১৪। অজু শেষ হইলে নিম্নোক্ত দোওয়া পড়া:-

اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِي مِنَ الْمُتَطَهِّرِينُ 

    উচ্চারণ:-"আল্লাহোম্মাজ য়া'লনি মিনাত্তাওয়াবিনা অ্যা'লনি মিনাল মুতাতাহহিরিন।"

        অর্থ:-"হে  আল্লাহ, তুমি আমাকে তওবাকারী ও পাক লোক- দিগের অন্তর্গত করা। 

    উহার সঙ্গে নিম্নোক্ত দোওয়া যোগ করিবে:-

وَاجْعَلْنِي مِنْ عِبَادِكَ الصَّالِحِيْنَ وَاجْعَلْنِي مِنَ الَّذِينَ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ 

        উচ্চারণ :- "অজ্যা'লনি মিন এ'বাদিকাহ্ ছালিহিন অজয়া'লিন মিনাল্লাজিনা লা-খাওফুন আলায়হিম অলা-হুম ইয়াহজানুন।"

    অর্থঃ- "আর তুমি আমাকে তোমার নেক বান্দাদিগের অন্তর্গত কর ও উক্ত ব্যক্তিদিগের অন্তর্গত কর-যাহাদের কোন ভয় হইবে না এবং যাহারা দুঃখিত হইবেন না।"

    ১৫। ওজু শেষ করার পরে ওজুর অবশিষ্ট পানি সম্পূর্ণ কিংবা আংশিক দাঁড়াইয়া পান করা। উক্ত পানি পান করার পরে নিম্নোক্ত দোওয়া পাঠ করিবে:-

اللَّهُمَّ اشْفِنِي بِشِفَائِكَ وَدَاوِنِي بِدَوَائِكَ وَاعْصِمُنِي مِنَ الْوَهْلِ وَالْأَمْرَاضِ وَالْأَوْجَاعِ 

        উচ্চারণ:- "আল্লাহুম্মাশ-ফিনি বিশিফায়েকা অ-দাবিনি বিদা- ওয়ায়িকা অ'ছিনি মিনাল অহলি অল্ আমরাদি অল্ আওজায়ি।”

        অর্থ:- "হে আল্লাহ্ তুমি নিজের শেফা দ্বারা আমাকে আরোগ্য প্রদান কর এবং তোমার দাওয়া দ্বারা আমাকে ঔষধ প্রদান কর এবং দুর্বলতা, পীড়া ও বেদনা সমূহ হইতে আমাকে রক্ষা কর।"

    ১৬। চক্ষু কোণদ্বয়, গোড়ালীর উপরিস্থ পেশীদ্বয়, পায়ের গাঁইট- দ্বয়ে ও পায়ের তালুদ্বয়ে পানি পৌঁছাইতে সাবধানতা অবলম্বন করা।

    ১৭। হস্ত, পদ ও মুখমণ্ডল ধৌত করার যে সীমা নির্দ্ধারিত হইয়াছে, তদপেক্ষা অধিক পরিমাণ ধৌত করা।

    ১৮। বাম হাত দ্বারা দুই পা মর্দ্দন করা।

    ১৯। শীতকালে ওজু শুরু করার সময় দুই পা ভিজাইয়া লওয়া।

    ২০। এস্তেঞ্জার স্থানটি রুমাল দ্বারা মুছিয়া ফেলা।

    ২১। ওজুর পরে হাত ঝাড়িয়া না ফেলা।

    ২২। ওজুর পরে আকাশের দিকে মস্তক উত্তোলন করিয়া 'ছুরা ক্বদর' পড়া।

    ২৩। মকরূহ ওয়াক্ত ব্যতীত অন্য সময় ওজু করিয়া দুই রাকয়াত 'তাহিয়্যাতোল ওজু' নামাজ পড়া।

    ২৪। অপহৃত জমির মৃত্তিকা ও পানি দ্বারা তায়াম্মোম বা ওজু না করা।

    ২৫। স্ত্রীলোকের ওজুর অবশিষ্ট পানি দ্বারা ওজু না করা।

    ২৬। ওজুর পানি খুব কম না লওয়া।

    ২৭। এস্তেঞ্জার পরে অতিত্রস্তভাবে গুপ্তাঙ্গ ঢাকিতে চেষ্টা করা।

    ২৮। এস্তেঞ্জাকালে খোদার নাম কিংবা তাঁহার নবীর নাম অঙ্কিত অঙ্গুটি খুলিয়া রাখা।

    ২৯। ওজুর পাত্র মৃত্তিকা নির্মিত হওয়া।

    ৩০। বদনার হ্যান্ডেল তিনবার ধৌত করা।

    ৩১। উক্ত বদনা বামদিকে রাখা।

    ৩২। যদি পানির পাত্র এরূপ বড় হয় যে, গণ্ডুষ করিয়া পানি তুলিয়া লওয়া হয়, তবে উহা ডাহিন দিকে রাখা।

    ৩৩। ধৌতকালে উক্ত বদনার শিরোভাগে হাত না রাখিয়া উহার হ্যাণ্ডেলে হাত রাখা।

    ৩৪। ওজুর সমস্ত কার্য্যে ওজু করার নিয়ত স্মরণ রাখা।

    ৩৫। মুখমণ্ডল ধৌতকালে উপরের দিক হইতে শুরু করা।

    ৩৬। ওয়াক্তের পূর্বে ওজুর আয়োজন উদ্দেশ্যে উক্ত পাত্রটি পূর্ণ করিয়া রাখা।

    ৩৭। বাম হস্তে নাক ঝাড়িয়া ফেলা।

    ৩৮। ধীরে ধীরে ওজু করা।

    ৩৯। ভ্রু ও গোঁফের নীচে পানি পৌঁছান।

    ৪০। পাক স্থানে ওজু করা।

    ৪১। মস্তক ঢাকিয়া পায়খানায় প্রবেশ করা।

    ৪২। রৌদ্রের তাপে উত্তপ্ত পানি দ্বারা ওজু না করা।

    ৪৩। একটি পানি পাত্রকে নিজের জন্য খাস না করা।

    ৪৪। গুপ্ত অঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত না করা।

    ৪৫। পানিতে থুথু ও কফ নিক্ষেপ না করা।

    ৪৬। ওজুর পানি এক 'মদ' অপেক্ষা কম না হওয়া, এক 'মদ' সাড়ে তিন পোয়ার কিছু অধিক।

    ৪৭। ওজু থাকিতে ওজু করা।

    ৪৮। চেহারা ধৌত করাকালে পানিতে ফুৎকার না করা।

    ৪৯। এস্তেঞ্জার সময় কথা না বলা।

    ৫০। পায়খানাকালে কেবলার দিকে মুখ কিংবা পশ্চাৎ না করা।

    ৫১। পায়খানাকালে চন্দ্র ও সূর্য্যের দিকে মুখ কিংবা পশ্চাৎ না করা।

    ৫২। পায়খানার পরে লিঙ্গ স্পর্শ না করা।

    ৫৩। বাম হাত দ্বারা এস্তেঞ্জা করা।

    ৫৪। এস্তেঞ্জা করার পরে বাম হস্তকে প্রাচীরের ন্যায় কোন

    ৫৫। বস্তুর উপর কিংবা মাটিতে ঘর্ষণ করা। তৎপরে উক্ত হস্ত ধৌত করা।

   ৫৬ । লিঙ্গের উপর পানি ছিটাইয়া দেওয়া।

    ৫৭। ওজুর পরে পায়জামার উপর পানি ছিটাইয়া দেওয়া।

    ৫৮। সাধারণ লোকে যে স্থানে ওজু করে, সেই স্থানে ওজু করা।

    ৫৯. ডাহিন হাত দ্বারা পানি ঢালিয়া দেওয়া।

    ৬০। প্রত্যেক মকরূহ কার্য্য ত্যাগ করা।

    ৬১। নিজে পানি উঠাইয়া রাখা।

Post a Comment

0 Comments