পৃথিবীতে প্রেরিত অন্যান্য নবী-রাসূলদের মহান আল্লাহ তা'য়ালা স্বয়ং যেমন নাম উল্লেখপূর্বক সম্বোধন করেছেন, তেমনি তাদের নিজ জাতি, সম্প্রদায় ও গোত্রের লোকজন তাদেরকে নাম উল্লেখ করেই সম্বোধন করেছে। এ ব্যাপারে নবী-রাসূলের অনুসারীদের প্রতি কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিলো বলে প্রতীয়মান হয় না। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'য়ালা যে সকল নবী-রাসূলের ইতিহাস উল্লেখ করেছেন তাঁদেরকে মহান মালিক আল্লাহ তা'য়ালা কিভাবে নাম ধরে ডেকেছেন তা আমরা ইতোপূর্বে উল্লেখ করেছি। তাঁদের অনুসারী এবং দেশের লোকজন কিভাবে তাঁদেরকে ডাকতো এখন আমরা পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করবো ইনশাআল্লাহ।
হযরত নূহ (আ:) তাঁর জাতির লোকজনকে ইসলামের দিকে আহ্বান জানালেন। দীর্ঘ সাড়ে নয়শত বছরব্যাপী তিনি নানা পদ্ধতি অবলম্বনে লোকদেরকে দাওয়াত দিলেন। সামান্য সংখ্যক মানুষ ব্যতীত আর কেউই তাঁর দাওয়াত গ্রহণ করলো না। তিনি জাতিকে জানালেন, 'যদি তোমরা আমার দাওয়াত গ্রহণ না করো তাহলে আল্লাহ তা'য়ালা আযাব দিয়ে তোমাদেরকে ধ্বংস করে দিবেন'। তাঁর জাতির নেতৃস্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর নাম উল্লেখপূর্বক বলেছিলো-
قَالُوا يَا نُوحُ قَدْ جَادَلْتَنَا فَأَكْثَرْتَ جِدَالَنَا فَأْتِنَا بِمَا تَعِدُنَا إِنْ كُنْتَ مِنَ الصَّادِقِينَ
লোকেরা বললো, হে নূহ (এ বিষয়টি নিয়ে) তুমি আমাদের সাথে বাকবিতণ্ডা করছো এবং বিতন্ডা তুমি একটু অতিমাত্রায়ই করে ফেলেছো, তুমি যদি. সত্যবাদী হও তাহলে সে (আযাবের) জিনিসটাই আমাদের জন্যে নিয়ে এসো, যার ভয় তুমি আমাদের দেখাচ্ছো। (সূরা হৃদ-৩২)
হযরত হূদ (আ:) এর ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে মহান আল্লাহ উল্লেখ করেছেন, নিজ জাতিকে তিনি ইসলামের দাওয়াত দিলেন কিন্তু জাতি তাঁর দাওয়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো। আমরা ইতোপূর্বেই উল্লেখ করেছি, নবী-রাসূল প্রেরিত হবার অর্থই ছিলো সে জাতির ভাগ্যের ফয়সালা হয়ে যাওয়া। হয় তারা পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে যাবে নতুবা মর্যাদার উচ্চ আসনে আসীন হবে। এক পর্যায়ে হৃদ (আ:) নিজ জাতিকে স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন, 'আমি তোমাদেরকে ইসলামী জীবন ব্যবস্থার দিকে আহ্বান জানাচ্ছি, আর তোমরা আল্লাহর বিধানের সাথে বিদ্রোহ করছো। আমি আশঙ্কা করছি, তোমরা আল্লাহর গযবে ধ্বংস হবে এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর আযাব অবধারিত হয়ে যাবে'।
এসব লোকজন অবাধ্যতা প্রদর্শন করে আল্লাহর নবী হযরত হূদ (আ:) এর নাম ধরে ডেকে জানিয়ে দিলো-
قَالُوا يَا هُودُ مَا جِئْتَنَا بَيِّنَةٍ وَمَا نَحْنُ بتَارِكِي الهَتَنَا عَنْ قَوْلِكَ وَمَا نَحْنُ لَكَ بمُؤْمِنينَ -
হে হৃদ, তুমি তো আমাদের কাছে কোনো স্পষ্ট দলীল প্রমাণ নিয়ে আসোনি, শুধু তোমার মুখের কথায় আমরা কিন্তু আমাদের দেবতাদের ছেড়ে দেয়ার লোক নই, আমরা তোমার ওপর বিশ্বাস করে মুমিন হয়ে যাবো না! (সূরা হূদ-৫৩)
হযরত সালেহ (আ:) নিজ জাতিকে মহান আল্লাহর বিধান অনুসরণ করে শান্তি-স্বস্তির সাথে পৃথিবীতে জীবন যাপনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। নিজের রচনা করা বিধান ও নিজ হাতে গড়া মাবুদের দাসত্ব ত্যাগ করে একমাত্র আল্লাহর গোলামী করার আহ্বান তিনি জানালেন। তাঁর জাতির লোকজন তাঁর নাম ধরে ডেকে জানিয়ে দিলো-
قَالُوا يَا صَالِحُ قَدْ كُنْتَ فِينَا مَرْجُوا قَبْلَ هَذَا أَتَنْهَانَا أَنْ تَعْبُدَ مَا يَعْبُدُ آبَاؤُنَا وَإِنَّنَا لَفِي شَكٍّ مِّمَّا تَدْعُوْنَا إِلَيْهِ مُرِيبٍ
তারা বললো, হে সালেহ, এর আগে তুমি এমন একজন মানুষ ছিলে, যার ব্যাপারে আমাদের মধ্যে অনেক বড় বড় আশা করা হতো, আর এখন কি তুমি আমাদের সে সব মাবুদের দাসত্ব থেকে বিরত রাখতে চাও যাদের দাসত্ব আমাদের পিতা-মাতারা যুগ যুগ ধরে করে আসছে, আসলে তুমি যে জীবন ব্যবস্থার দিকে আমাদের ডাকছো সে ব্যাপারে আমরা সন্দেহে নিমজ্জিত আছি, এ ব্যাপারে আমরা খুব দ্বিধাগ্রস্তও বটে! (সূরা হৃদ-৬২)
মুসলিম মিল্লাতের পিতা হযরত ইবরাহীম (আ:) যখন নিজ পিতাকে সত্য পথের দিকে আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, 'আব্বা, তুমি কেনো এমন এক জিনিসের পূজা করো যা দেখতে পায় না, কিছু শুনতে পায় না, যা তোমার কোনো কাজেও আসবে না। আব্বা, আমার কাছে আল্লাহ তা'য়ালার সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে যে জ্ঞান এসেছে তা তোমার কাছে আসেনি। তুমি আমার কথা শোনো, আমি তোমাকে সঠিক পথ দেখাবো। আব্বা, সে জ্ঞানের মৌলিক কথা হচ্ছে, তুমি শয়তানের গোলামী করো না, কারণ শয়তান হচ্ছে পরম দয়ালু আল্লাহর প্রতি বিদ্রোহী। আব্বা, তুমি যদি শয়তানের গোলামী করতে থাকো, তাহলে আমার আশঙ্কা হচ্ছে, পরম দয়ালু আল্লাহর কোনো আযাব এসে তোমাকে স্পর্শ করবে আর তুমি জাহান্নামে শয়তানেরই সাথী হয়ে যাবে'।
হযরত ইবরাহীম (আ:) এর পিতা নিজ সন্তানের মুখ থেকে এসব কথা শুনে প্রচণ্ড ক্রোধে ধমকে উঠলো-
قَالَ أَرَاغِبٌ أَنْتَ عَنْ آلِهَنِي يَا إِبْرَاهِيمُ ج لَئِنْ لَّمْ تَنْتَهِ لَأَرْجُمَنَّكَ وَاهْجُرْنِي مليا -
সে বললো, হে ইবরাহীম, তুমি আসলেই আমার দেব-দেবীদের থেকে বিমুখ হয়ে যাচ্ছো। তবে শোনো, এখনো যদি তুমি এসব কিছু থেকে ফিরে না আসো তাহলে অবশ্যই আমি তোমাকে পাথর মেরে হত্যা করবো, আর যদি জীবিত থাকতে চাও তাহলে তুমি চিরতরে আমার কাছ থেকে পৃথক হয়ে যাও। (সূরা মারইয়াম-৪৬)
মূর্তি চূর্ণ-বিচূর্ণ হবার পরে নিজ জাতির লোকজন হযরত ইবরাহীম (আ:) এর নাম ধরে ডেকে জানতে চেয়েছিলো-
قَالُوا وَ أَنْتَ فَعَلْتَ هَذَا بِالهَتِنَا يَا إِبْرَاهِيمُ
তারা (তাকে) জিজ্ঞেস করলো, হে ইবরাহীম, তুমিই কি আমাদের মূর্তিগুলোর সাথে এ আচরণ করেছো! (সূরা আম্বিয়া-৬২)
বর্তমানে পাশ্চাত্য জগতে আইনের মাধ্যমে সমকামিতা বৈধ করা হয়েছে এবং যৌন বিকৃতি তাদের কাছে দোষের কিছু নয়। হযরত লূত (আঃ) এর জাতির মধ্যে এ ধরনের প্রবণতা ছিলো। সে জাতিকে ধ্বংস করার জন্যে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে যে সকল ফিরিশতা প্রেরিত হয়েছিলো তাঁরা হযরত লূত (আ:) এর নাম উল্লেখ পূর্বক ডেকে বলেছিলো-
قَالُوا يَا لُوْطُ إِنَّا رُسُلُ رَبِّكَ لَنْ يَصِلُوا إِلَيْكَ فَأَسْرِ بِأَهْلِكَ بِقِطْعٍ مِّنَ الَّيْلِ وَلَا يَلْتَفِتْ مِنْكُمْ أَحَدٌ إِلَّا امْرَأَتَكَ ط إِنَّهُ مُصِيبَهَا مَا أَصَابَهُمْ طَ إِنَّ مَوْعِدَهُمُ الصُّبْحُ ط أَلَيْسَ الصُّبْحُ بِقَرِيب
তারা বললো, হে দূত, (তুমি ভেবো না) আমরা তো হচ্ছি তোমার মালিকের (পাঠানো) ফিরিশতা, (আমাদের কথা দূরে থাক) এরা তো তোমার কাছেও পৌঁছতে পারবে না, তুমি (বরং এক কাজ করো,) রাতের কোনো এক প্রহরে তোমার পরিবার- পরিজনসহ (ঘর থেকে) বেরিয়ে পড়ো, তবে তোমাদের কোনো ব্যক্তিই যেন (যাবার সময়) পেছনে ফিরে না তাকায়, কিন্তু তোমার স্ত্রী ব্যতীত; (কেননা) যা কিছু (আযাবের তাণ্ডব) তাদের (ওপর) ঘটবে, তা তার (ওপর) ও ঘটবে; তাদের (ওপর আযাব আসার) ক্ষণ নির্ধারিত হয়েছে সকাল বেলা; সকাল হতে আর কতোই বা দেরী! (সূরা হূদ-৮১)
হযরত শুয়াইব (আ:) নিজ জাতিকে মহান আল্লাহর দাসত্বের দিকে আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, 'আল্লাহর দাসত্ব করো এবং এ দাসত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ তোমরা নামাজ আদায় করো'। নিজ জাতির লোকজন তাঁর নাম ধরে ডেকে জবাব দিয়েছিলো-
قَالُوا يَا شُعَيْبُ أَصَلاتُكَ تَأْمُرُكَ أَنْ نَّتْرُكَ مَا يَعْبُدُ آبَاؤُنَا أَوْ أَنْ تَفْعَلَ فِي أَمْوَالِنَا مَا نَشَاؤُا ط إِنَّكَ لَأَنْتَ الْحَلِيمُ الرَّشِيدُ
তারা বললো, হে শুয়াইব, তোমার নামাজ কি তোমাকে এই আদেশ দেয় যে, আমরা আমাদের দেবতাদের দাসত্ব ছেড়ে দিবো যাদের দাসত্ব আমাদের পিতৃপুরুষেরা করতো, আমরা আমাদের ধন-সম্পদ নিয়ে যা করতে চাই তা করতে পারবো না? (আমরা জানি) নিশ্চয়ই তুমি একজন ধৈর্যশীল নেককার মানুষ! (সূরা হূদ-৮৭)
এক পর্যায়ে আল্লাহর বিধানের প্রতি বিদ্রোহীরা হযরত শুয়াইব (আ:) কে হত্যা করার হুমকি দিয়ে নাম ধরে ডেকে বলেছিলো-
قَالُوا يَا شُعَيْبُ مَا نَفْقَهُ كَثِيْرًا مِّمَّا تَقُوْلُ وَإِنَّا لَنَرَاكَ فِيْنَا ضَعِيفًا جِ وَلَوْلَا رَهْطُكَ لَرَجَمْنَاكَ رَ وَمَا أَنْتَ عَلَيْنَا بِعَزِيزِ
তারা বললো, হে শুয়াইব, তুমি যা (ভালো ভালো কথাবার্তা) বলো তার অধিকাংশ কথাই আমাদের (ঠিকমতো) বুঝে আসে না (আসল কথা হচ্ছে), আমরা তোমাকে দেখতে পাচ্ছি, তুমি আমাদের মাঝে খুবই দুর্বল, (আমাদের মাঝে) তোমার (আপন) গোত্রের লোকজন না থাকলে আমরা (অবশ্যই) তোমাকে পাথর নিক্ষেপ (করে হত্যা) করতাম, (তা ছাড়া) তুমি তো আমাদের ওপর খুব শক্তিশালী নও (যে, অতপর আমাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারবে)। (সূরা হূদ-৯১)
হযরত ইউসুফ (আ:) কারাবন্দী থাকা অবস্থায় অন্য বন্দীদের দেখা স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলে দিয়েছিলেন। সে দেশের শাসক এক স্বপ্ন দেখে এর অর্থ জানার জন্যে অস্থির হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু কেউই তাঁর স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলতে পারেনি। অবশেষে শাসক জানতে পারলেন তাঁর কারাগারে এমন একজন বন্দী রয়েছেন যিনি স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা বলতে পারেন। সন্ধানদাতাকে শাসক কারাগারে পাঠালে তিনি হযরত ইউসুফ (আ:) এর নাম ধরে ডেকে বলেছিলেন-
يُوسُفُ أَيُّهَا الصِّدِّيقُ أَفْتِنَا فِي سَبْعِ بَقَرَاتٍ سِمَانٍ يَأْكُلُهُنَّ سَبْعٌ عِجَافٌ وَسَبْعِ سُبُلَاتِ خُضْرٍ وَأُخَرَ يَابِسَاتِ لَا لَّعَلَّى أَرْجِعُ إِلَى النَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَعْلَمُوْنَ
হে ইউসুফ, হে সত্যবাদী, তুমি আমাদের 'সাতটি মোটা গাভী সাতটি পাতলা গাভীকে খেয়ে ফেলছে এবং সাতটি সবুজ শ্যামল ফসলের শীষ অপর সাতটি শুকনো শীষ'- এ স্বপ্নটির ব্যাখ্যা বলে দাও, যাতে করে এ ব্যাখ্যা নিয়ে আমি মানুষদের কাছে ফিরে যেতে পারি, হয়তো এর ফলে তারা তোমার মর্যাদা সম্পর্কেও জানতে পারবে। (সূরা ইউসুফ-৪৬)
এ স্বপ্ন দেখেছিলো সে দেশের শাসক, রাজ-সভাষদদের মধ্যে কেউই এর অর্থ বলতে পারেনি। বন্দী থাকা অবস্থায় যে লোকটির দেখা স্বপ্নের ব্যাখ্যা হযরত ইউসুফ (আ:) বলে দিয়েছিলেন, তিনিই শাসককে জানিয়েছিলেন, আপনার কারাগারে বন্দী একজন আছেন যিনি এর সঠিক ব্যাখ্যা বলতে পারবেন। শাসক উক্ত ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠালে তিনি হযরত ইউসুফ (আ:) কে নাম ধরে ডেকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলে দেন।
ফিরআউন ধারণা করতো সে-ই সকলের মালিক ও প্রতিপালক। এ জন্যে সে হযরত মূসা (আ:) ও হযরত হারুন (আ:) কে লক্ষ্য করে নাম ধরে ডেকে প্রশ্ন করেছিলো তাঁদের মালিক সম্পর্কে-
قَالَ فَمَنْ رَّبُّكُمَا يَا مُوسَى -
ফিরআউন বললো, হে মূসা (বলো), কে (আবার) তোমাদের মালিক? (সূরা ত্বাহা-৪৯)
হযরত মূসা (আ:) এর অনুসারীদের আল্লাহ তা'য়ালা আকাশ থেকে খাদ্য অবতীর্ণ করতেন এবং তা আহার করে তারা জীবন ধারণ করতো। হতভাগাদের এ খাদ্য ভালো লাগলো না, তারা নিজেদের নবীকে নাম ধরে ডেকে বলেছিলো-
وَإِذْ قُلْتُمْ يَا مُوسَى لَن نَّصْبِرَ عَلَى طَعَامٍ وَاحِدٍ فَادْعُ لَنَا رَبَّكَ يُخْرِجْ لَنَا مِمَّا تُنبِتُ الْأَرْضُ مِنْم بَعْلِهَا وَقَتَائِهَا وَفُوْمِهَا وَعَدَسِهَا وَبَصَلِهَا طَ
হে মূসা, প্রতিদিন একই ধরনের খাবারের ওপর আমরা কিছুতেই আর ধৈর্য ধরতে পারবো না, তুমি তোমার মালিকের কাছে বলো তিনি কিছু ভূমিজাত দ্রব্য, তরিতরকারী, পিঁয়াজ, রসুন, ভুট্টা, ডাল উৎপাদন করেন। (সূরা বাকারাহ-৬১)
কিছু লোককে মূর্তি পূজা করতে দেখে এই হতভাগারা হযরত মূসা (আ:) এর নাম ধরে ডেকে দাবী জানালো-
يَا مُوسَى اجْعَل لَّنَا إِلَهَا كَمَا لَهُمْ آلِهَةٌ ط
হে মূসা, তুমি আমাদের জন্যেও এ ধরনের একটি দেবতা বানিয়ে দাও, যেমন এদের দেবতা রয়েছে।
(সূরা আল আ'রাফ-১৩৮)
এভাবে প্রত্যেক নবী-রাসূলকেই তাঁর অনুসারীরা নাম ধরে সম্বোধন করতো এবং বিষয়টি নিষিদ্ধ ছিলো না। মর্যাদাগত কারণে নবী করীম (সা:) এর ক্ষেত্রে বিষয়টি নিষিদ্ধ। নাম ধরে আহ্বান জানানো অনেক পরের বিষয়, নবী করীম (সা:) এর সম্মুখে সামান্যতম বেয়াদবিও সহ্য করা হতো না। মহান আল্লাহ তা'য়ালা কঠোরভাবে নিষেধ করতেন। সাহাবায়ে কেরাম তাঁকে ডেকেছেন, 'হে আল্লাহর রাসূল বা হে আল্লাহর নবী' বলে। হযরত খাদিজা (রা:) প্রাণপ্রিয় স্বামী নবী করীম (সা:) কে আহ্বান জানাতেন, 'ইয়া আবাল কাসেম' অর্থাৎ হে কাসেমের আব্বা' বলে। নবী করীম (সা:) এর এক পুত্র সন্তানের নাম ছিলো কাসেম, তিনি শিশু বয়সেই ইন্তেকাল করেন।
0 Comments