বিশ্ব নবী সঃ পঞ্চম আকাশে কি কি দেখেছিলেন

পঞ্চম আকাশে অবস্থান

        মহানবী (সঃ) ইরশাদ করেন- চতুর্থ আকাশ সফর শেষে হযরত জিব্রাইল (আঃ) আমাকে সাথে করে যখন পঞ্চম আকাশের দরজায় এসে পৌঁছলেন তখন আমাদের সাথে বড় বড় উলুল আযম এবং নিকটতম ফেরেশতাদের একটি দলও উপস্থিত ছিলেন। এ আকাশের দ্বার রক্ষীর নাম হল আজরাঈল (আঃ) এখানকার দ্বার রক্ষীও পূর্বের ন্যায় প্রশ্ন করল- "আপনি কে?"

        হযরত জিব্রাইল (আঃ) পূর্বের ন্যায় জবাব দিলেন, ফেরেশতার সাথে পূর্ববর্তী আকাশের দ্বার রক্ষীর সাথে যেমনটি হয়েছিল এখানেও তাই হল। অতঃপর আকাশের দরজা খুলে দেয়া হল। এখানেও আরো অগণিত ফেরেশতা মহানবীর অপেক্ষাতে ছিল। তারা মহানবী (সঃ)-এর আগমনে আনন্দ মিছিল করছিল এবং মহানবী (সঃ)-এর দর্শন লাভে তারা সকলেই ধন্য হচ্ছিল।

        অতঃপর পঞ্চম আকাশে মহানবী (সঃ)-কে উপঢৌকন হিসেবে একটি আলিশান নূরানী বস্ত্র পরিধান করানো হয় যার উপর নূরানী হরফে লিখা রয়েছে-

أنَّ اللهَ وَمَلَئِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ .

        অর্থাৎঃ "নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর উপর দরূদ ও সালাম প্রেরণ করেন।"

হযরত হারুন (আঃ)-এর সাক্ষাত লাভ

        মহানবী (সঃ) ৫ম আকাশের এক জায়গায় গিয়ে দেখতে পেলেন যে, জনৈক সুদর্শন মহাপুরুষ মহা আড়ম্বরে বসে আছেন। তার চারদিকে বহু জন তাকে ঘিরে রেখেছে। তিনি আল্লাহর যিকর করছেন আর সবাই তা মন্ত্র-মুগ্ধের মতো শ্রবণ করছেন।

        মহানবী (সঃ) সাথী আল্লাহর দূতকে জিজ্ঞেস করলেন- "ভাই, ঐ লোকটিও তার চারদিকে উপবিষ্ট লোকজন কারা? তাদের পরিচয় দিন।"

        আল্লাহর দূত জিব্রাইল উত্তর দিলেন- "যিনি আল্লাহর বাণী শুনাচ্ছেন তিনি হচ্ছে হযরত মূসা (আঃ)-এর ভাই হযরত হারুন (আঃ)। আর যারা তার চারদিকে সমবেত হয়ে আল্লাহর বাণী একাগ্র চিত্তে শুনছেন। তারা হচ্ছেন আল্লাহর বাণীর শ্রোতা। যারা দুনিয়াতে আল্লাহর কথা, নবীর কথা ও সৎ উপদেশ বাণী শুনতেন, তাদেরই আত্মা মৃত্যুর পরও তাদের আত্মাদের আল্লাহর কথা শুনানো হচ্ছে এসব আত্মা বনী ইসরাইলের। হে আল্লাহর প্রিয় সুহৃদ। আপনি হযরত হারুন (আঃ)-কে সালাম করুন।

        সুতরাং মহানবী (সঃ) হযরত হারুন (আঃ)-কে সালাম করলেন এবং তার মুসাফার করলেন। হযরত হারুন (আঃ) অত্যন্ত মহব্বতের সাথে সালামের জবাব দিলেন-

مرحباً بِالنَّبِيِّ الصَّالِحِ وَالابْنِ الصَّالِح 

. অর্থাৎ: "নেককার নবী ও নেককার ভাইয়ের জন্য মারহাবা।"

পঞ্চম আকাশের দর্শনীয় বস্তুসমূহ

        মহানবী (সঃ) বলেন- "আমি পঞ্চম আকাশে একটি আগুনের সমুদ্র দেখতে পাই। যার চর্তুদিকে কতিপয় উগ্র মেজাজের ফেরেশতা রয়েছে। জিব্রাইল (আঃ) বললেন- এ সমুদ্রটির নাম হল বাহরুস সাআক! এখান থেকেই সামুদ্রিক সাইক্লোন সৃষ্টি হয়ে থাকে। যার দ্বারা বিভিন্ন এলাকা ধ্বংস প্রাপ্ত হয়ে থাকে।"

        অন্যত্র মহানবী (সঃ) বর্ণনা করেন- "পঞ্চম আকাশের দ্বার রক্ষী দরজা খুলে দিলে আমি দেখতে পেলাম এখানকার নাজ নেয়ামত ও বরকত পূর্বেকার আকাশগুলো থেকে আরো অনেক বেশি বেশি মনে হচ্ছে। আমি আরো দেখতে পেলাম এখানে একদল ফেরেশতা দাঁড়ানো অবস্থায় স্বীয় পায়ের পিঠের দিকে দৃষ্টি রেখে একাগ্রচিত্তে তসবীহ পাঠে রত আছে।

سبْحانَ الْقَاضِ الأكبر ، سُبْحَانَ الْعَدْلِ الَّذِي لَا يَجُورُس .

        হযরত জিব্রাইল আরজ করলেন- "হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করুন, আপনার উম্মতের জন্য এরূপ কেয়াম বিশিষ্ট নামাজ ফরজ হওয়ার জন্য।" আমি তাই করলাম।

Post a Comment

0 Comments