নবী করীম (সা:) আল্লাহ তা'য়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ বান্দাহ্

        পবিত্র কুরআনে তিনটি শব্দ একাধিক স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে। একটি শব্দ 'মা'বুদ' দ্বিতীয়টি 'আব্দ' আর তৃতীয়টি হলো 'ইবাদাহ্' বা ইবাদাত। 'মা'বুদ' শব্দের অর্থ হলো মুনিব, মালিক, যিনি পূজা আরাধনা লাভের যোগ্য, যার কাছে আবেদন পেশ করা হয় বা যাঁর দাসত্ব করা হয় ইত্যাদি। 'আব্দ' শব্দের অর্থ হলো, যে দাসত্ব করে, চাকর, গোলাম, দাস, কারো আদেশে যে ব্যক্তি সকল কর্ম সম্পাদন করে ইত্যাদি। আর 'ইবাদাহ্ বা ইবাদাত' শব্দের অর্থ হলো, দাসত্ব করা, গোলামী করা, আদেশকৃত কর্ম সম্পাদন করা, দায়িত্ব পালন করা, মুনিবের নির্দেশে চাকর যে দায়িত্ব পালন করে বা মুনিব কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব সন্তুষ্ট চিত্তে পালন করা অথবা প্রতিপালককে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে তাঁর নির্দেশ অনুসারে সম্পাদিত কর্ম সমষ্টি। অর্থাৎ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হলেন সমগ্র সৃষ্টির মা'বুদ বা মুনিব, সৃষ্টি হলো তাঁর দাস বা আব্দ এবং স্রষ্টার নির্দেশে সৃষ্টি যে কর্ম সম্পাদন করে সে কর্মই হলো ইবাদাত।

        প্রশ্ন হলো, পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তা'য়ালা নবী করীম (সা:) এর ক্ষেত্রে যে 'আব্দ' শব্দ ব্যবহার করেছেন তা কোন্ অর্থে ব্যবহার করেছেন?

        এ প্রশ্নের জবাব কিছুটা ব্যাখ্যার দাবী রাখে। মহান আল্লাহ তা'য়ালা স্বয়ং 'ইলাহ্' এবং সমগ্র সৃষ্টিলোকের তিনিই একমাত্র ইলাহ্। তাঁর উলুহিয়াত সমগ্র সৃষ্টিব্যাপী বিস্তৃত এবং তা কোথাও সীমাবদ্ধ নয়। তাঁর উলুহিয়াতে কারো সামান্যতম অংশ নেই, তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই, কেউ ইচ্ছে করলে তাঁর উলুহিয়াতের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশও দাবী করতে পারে না। কেউ দাবী করলেও তা কার্যকর করার ন্যূনতম ক্ষমতাও দাবীকারী প্রয়োগ করতে সক্ষম নয়। আল্লাহ তা'য়ালা এমন এক অদ্বিতীয় ইলাহ্- যিনি তাঁর উলুহিয়াত যেমনভাবে এবং যখন খুশী তা প্রয়োগ করে থাকেন। তাঁর অনুমতি ব্যতীত কেউ তাঁর কাছে কোনো সুপারিশও করতে পারে না বা উলুহিয়াত প্রয়োগের ক্ষেত্রে কেউ তাঁকে প্রশ্ন করার কোনো অবকাশও পায় না।

        সকল কিছুর ক্ষেত্রে একমাত্র তিনিই নিরঙ্কুশ উলুহিয়াত প্রয়োগকারী এবং তাঁর সমপর্যায়ের কোনো কিছুর অস্তিত্ব সমগ্র সৃষ্টিলোকে নেই।

        মহান আল্লাহ তা'য়ালা যখন তাঁর সৃষ্টি কোনো মানুষকে 'আমার আব্ব্দ বা বান্দাহ্' বলে পরিচয় দেন তখন তা সাধারণ কোনো অর্থে ব্যবহৃত হয় না। অথবা আল্লাহর ব্যবহৃত 'আব্দ' শব্দ থেকে সাধারণ কোনো অর্থ গ্রহণ করা যায় না বা সাধারণ মানুষকে যে অর্থে 'আব্দ বা বান্দাহ্' বলা হয় সে অর্থেও তা প্রয়োগ হয় না। স্বয়ং আল্লাহ তা'য়ালা যাঁকে 'আমার আব্দ বা বান্দাহ' বলে পরিচয় দেন তখন সে বান্দাহ্ বা আব্দ-এর 'আবদিয়‍্যাত'-ও অদ্বিতীয় তুলনাহীন হয়ে যায়।

        মহান আল্লাহ তা'য়ালা যখন তাঁর কোনো বান্দাহকে 'আমার বান্দাহ্ বা আব্দ' বলে সমগ্র সৃষ্টির কাছে পরিচয় করিয়ে দেন, তখন বুঝতে হয় সে বান্দাহ্ 'আদিয়্যাত' এর সকল স্তর অতিক্রম করে মা'বুদ বা মহান মুনিবের সান্নিধ্যে নিজের অবস্থান করে নিয়েছেন। নবী করীম (সা:) মহান আল্লাহ তা'য়ালার সেই একক ও অদ্বিতীয় তুলনাহীন 'আব্দ' যিনি 'আদিয়্যাত' এর সকল সোপান অতিক্রম করে মহান মা'বুদ আল্লাহ তা'য়ালার সান্নিধ্যে পৌঁছে গিয়েছেন। 'আদিয়‍্যাত' এর পূর্ণতার সকল স্তর অতিক্রম করে তিনি আল্লাহ তা'য়ালার সান্নিধ্যে উপনীত হয়েছেন- যেখানে সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে তিনিই এক, অদ্বিতীয় ও তাঁর সমকক্ষ কেউই অতীতে ছিলেন না, বর্তমানেও নেই এবং ভবিষ্যতেও উক্ত স্তর কেউ অতিক্রম করতে সক্ষম হবে না।

        পবিত্র কুরআন হলো সৃষ্টির প্রতি স্রষ্টা মহান মালিক আল্লাহ তা'য়ালার আদেশ নিষেধ, পছন্দ অপছন্দ ও অন্যান্য নিয়ম পদ্ধতির সমষ্টি এবং এটি একটি অতি মর্যাদাবান কিতাব। আর নবী করীম (সা:) হলেন এ কিতাবের বাহক এবং জীবন্ত কুরআন। তিনি ছিলেন চলমান কুরআন এবং এরই বাস্তব প্রতিচ্ছবি। হযরত আয়িশা (রা:) এর কাছে কেউ কেউ জানতে চেয়েছিলেন, 'আল্লাহর রাসূলের জীবনধারা সম্পর্কে কিছু বলুন'। জবাবে তিনি বলেছিলেন, 'তোমরা কি কুরআন পড়ো না? কুরআনই তো তাঁর জীবনধারা'। অর্থাৎ সৃষ্টির প্রতি স্রষ্টার যে অধিকারসমূহ রয়েছে, স্রষ্টা তাঁর সৃষ্টিকে যেমন দেখতে চান এবং যে স্তরে তিনি সৃষ্টিকে উপনীত করতে চান, নবী করীম (সা:) সে অধিকারসমূহ এমনভাবে আদায় করেন যে, তিনি পূর্ণতার অতি উচ্চে উপনীত হয়েছেন।

        মহান আল্লাহ তা'য়ালা নবী করীম (সা:) এর প্রতি যে ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন এবং মর্যাদার সর্বোচ্চ সোপানে স্থান দিয়েছেন, এরই বাস্তব প্রকাশ হলো তিনি তাঁকে 'আবদ' বলে পরিচয় দিয়েছেন। যেমন-

وَإِنْ كُنتُمْ فِي رَيْبٍ مِّمَّا نَزَّلْنَا عَلَى عَبْدِنَا فَأْتُوا بِسُورَةٍ مِّنْ مِّثْلِهِ ص

        আমি আমার (আব্দ) বান্দার ওপর যে কিতাব অবতীর্ণ করেছি, তার (সত্যতার) ব্যাপারে যদি তোমাদের কোনো সন্দেহ থাকে তাহলে যাও, তার মতো (করে) একটি সূরা তোমরাও (রচনা করে) নিয়ে এসো। (সূরা বাকারা-২৩)

        নবী করীম (সা:) কে মহান আল্লাহ মিরাজে নিয়েছিলেন, নিয়ে যাবার সে বিষয়টি আল্লাহ তা'য়ালা এভাবে উল্লেখ করেছেন-

سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرى بعبده لَيْلاً مِّنَ الْمَسْجِد الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَا الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهِ مِنْ آيَاتِنَا طَ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ

        পবিত্র ও মহিমান্বিত (সেই আল্লাহ তা'য়ালা) যিনি তাঁর (এক) বান্দাকে রাতের বেলায় মাসজিদে হারাম থেকে মাসজিদে আকসায় নিয়ে গেলেন, যার পারিপার্শ্বিকতাকে আমি (আগেই) বরকতপূর্ণ করে রেখেছিলাম। যেনো আমি তাঁকে আমার (অদৃশ্য জগতের) কিছু নিদর্শন দেখাতে পারি, (মূলত) সর্বশ্রোতা ও সর্বস্রষ্টা তো স্বয়ং তিনিই। (সূরা বনী ইসরাঈল-১)

        কল্পনাও করা যায় না নবী করীম (সা:) কে মহান আল্লাহ তা'য়ালা মর্যাদার কোন্ উচ্চ সোপানে উঠিয়েছেন। সম্মানিত মেহমান যে পথ বেয়ে যাবেন বা যে পথে তাঁকে আনা হবে, সেই পথের পরিবেশ আল্লাহ তা'য়ালা কিভাবে নিয়ামতে পূর্ণ করেছিলেন, কেমন ছিলো দৃষ্টিনন্দন সেই দৃশ্য, যে সম্পর্কে আল্লাহ তা'য়ালা বলছেন, 'যার পারিপার্শ্বিকতাকে আমি আগেই বরকতপূর্ণ করে রেখেছিলাম'।

        জাগতিক নিয়মের দিকে লক্ষ্য করলে মানুষের যে আয়োজন থাকে মেহমানের সম্মানে, তা থেকেই মহান রাব্বুল আলামীনের ব্যবস্থাপনা কেমন হতে পারে তা কিছুটা অনুমান করা যায়। সাধারণ মানুষ প্রিয় অতিথি, সম্মানিত মেহমান বা ভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে কিভাবে সম্মান প্রদর্শন করে। সাধারণ বিমান নয়, বিশেষ বিমানে তাঁকে আনা হয়। বিমান বন্দরে বিমান অবতরণ করার পূর্বেই বিমান বাহিনীর বিশেষ বিশেষ বিমান আকাশেই তাঁকে সম্মান প্রদর্শন করে। অবতরণ করার পরে তাঁকে লাল গালিচা সম্বর্ধনা দিয়ে এর পর গার্ড অব অনার দেয়া হয়। বিমান বন্দর থেকে বের হয়ে তিনি যে পথে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে যাবেন এবং ওখান থেকে যে সকল স্থান তাঁকে পরিদর্শন করানো হবে, এসব পথ সজ্জিত করা হয়। মহান আল্লাহ তা'য়ালা তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ মেহমানকে নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁর মর্যাদার কারণেই তাঁর ভ্রমণ পথের পারিপার্শ্বিকতাকে তিনি এমনভাবে সজ্জিত করেছিলেন যা কোনো মানুষের পক্ষেই কল্পনা করা সম্ভব নয়। শুধু সজ্জিতই নয়, তিনি ভ্রমণ পথের পারিপার্শ্বিকতাকে অত্যন্ত বরকতপূর্ণও করেছিলেন। নবী করীম (সা:) কে নিয়ে যাবার পূর্বেই মহান আল্লাহ তা'য়ালা যাবতীয় ব্যবস্থা সুসম্পন্ন করেছিলেন।

        আল্লাহ তা'য়ালা তাঁর এ সম্মানিত বান্দার প্রতি এমন কোনো কিতাব অবতীর্ণ করেননি, যে কিতাব বোধগম্য নয়। অথবা যে কিতাবের বিধি-বিধান অনুসরণ করা কষ্টসাধ্য। অথবা যে কিতাব মানুষের জন্যে বোঝা বিশেষ। এমন ধরনের কোনো কিতাব যদি তাঁর প্রতি অবতীর্ণ করা হতো তাহলে মানুষ আপত্তি তুলতো, 'বাহক এমনি এক কিতাব বহন করে এনেছেন যা বোধগম্য নয় এবং এর বিধি-বিধান অনুসরণযোগ্যও নয়'। এ অভিযোগ নবী করীম (সা:) এর উচ্চ মর্যাদার সাথে সাংঘর্ষিক। এ কারণেই মহান আল্লাহ তা'য়ালা ঘোষণা করলেন, 'আমি আমার এ বান্দার প্রতি এমনি এক কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যার মধ্যে কোনো ধরনের বক্রতা নেই'। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন-

الْحَمْدُ للهِ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَى عَبْدِهِ الْكِتَابَ وَلَمْ يَجْعَل لَّهُ عِوَجًا ط 
        
        সকল প্রশংসা আল্লাহ তা'য়ালার জন্যে, যিনি তাঁর (আব্দ) বান্দার প্রতি গ্রন্থ নাযিল করেছেন এবং তার কোথাও তিনি কোনোরকম বক্রতা রাখেননি। (সূরা কাহাফ-১)

        নবী করীম (সা:) এর প্রতি যা কিছু অবতীর্ণ করার তা আল্লাহ তা'য়ালা অবতীর্ণ করলেন। এ কথাটিও বলতে গিয়ে আল্লাহ আব্দ বা বান্দাহ্ শব্দ ব্যবহার করেছেন-

فَأَوْحَى إِلَى عَبْدِهِ مَا أَوْحَى ط 

        অতপর সে তাঁর (আল্লাহর) বান্দার (আব্দ) কাছে ওহী পৌঁছে দিলো, যা তার পৌঁছানোর (দায়িত্ব) ছিলো। (সূরা নাজম-১০)

        সর্বোচ্চ মর্যাদাবান ব্যক্তির প্রতি এমনই এক সম্মানিত কিতাব অবতীর্ণ করা হয়েছে, যে কিতাব মানুষকে মূর্খতার অন্ধকার থেকে বের করে আলোর জগতে নিয়ে আসে। সকল ধরনের জ্ঞান ভাণ্ডারের খনি যে কিতাবের মধ্যে নিহিত রয়েছে সেই কিতাবই নবী করীম (সা:) এর প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তা'য়ালা বলেন-

هُوَ الَّذِي يُنَزِّلُ عَلَى عَبْدِهِ آيَاتِم بَيِّنَاتٍ لِيُخْرِجَكُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّوْرِطَ وَإِنَّ اللَّهَ بِكُمْ لَرَؤُوْفٌ رَّحِيمٌ

        তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি তাঁর (আব্দ) বান্দার প্রতি সুস্পষ্ট আয়াত অবতীর্ণ করেছেন, যেনো তিনি তোমাদের (জাহিলিয়াতের) অন্ধকার থেকে (ঈমানের) আলোর দিকে বের করে নিতে পারেন।
  (সূরা হাদীদ-৯)

إِن كُنتُمْ آمَنْتُمْ بِاللَّهِ وَمَا أَنْزَلْنَا عَلَى عَبْدِنَا يَوْمَ الْفُرْقَانِ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ طَ

        তোমরা যদি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করো, (আরো) বিশ্বাস করো সে (বিজয় ঘটিত) বিষয়টির প্রতি, যা আমি হক ও বাতিলের চূড়ান্ত মীমাংসার দিন এবং একে অপরের মুখোমুখি হবার দিন আমার (আব্দ) বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছিলাম। (সূরা আনফাল-৪১)

وَأَنَّهُ لَمَّا قَامَ عَبْدُ اللَّهِ يَدْعُوهُ كَادُوا يَكُونُوْنَ عَلَيْهِ لِبَدَاعِ

         যখন আল্লাহর এক (আব্দ) বান্দাহ্ তাকে ডাকার জন্যে দাঁড়ালো, তখন (মানুষ বা জ্বিনের) অনেক সদস্যই তার আশেপাশে ভীড় জমাতে লাগলো। (সূরা জ্বিন-১৯)

أَرَأَيْتَ الَّذِي يَنْهَى لَا عَبْدًا إِذَا صَلَّى ط

        তুমি কি সে (দাম্ভিক) লোকটিকে দেখেছো যে তাঁকে বাধা দিলো (বাধা দিলো আল্লাহর) এক (আব্দ) বান্দাকে যে নামাজ আদায় করছিলো। (সূরা আলাক-৯-১০)

        হযরত ঈসা (আ:) শিশু বয়সে দোলনায় শুয়ে মহান আল্লাহ তা'য়ালার নির্দেশে নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছিলেন-

إِنِّي عَبْدُ اللَّهِ -

        'আমি আল্লাহ তা'য়ালার বান্দাহ্'। 

        অপরদিকে নবী করীম (সা:) স্বয়ং যেমন নিজেকে আল্লাহর বান্দাহ্ বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেছেন তেমনি আল্লাহ তা'য়ালাও তাঁকে পরম স্নেহে পরিচয় করে দিয়েছেন 'আমার বান্দাহ্' বলে।

        পবিত্র কুরআনের এসব আয়াতে নবী করীম (সা:) কে মহান আল্লাহ তা'য়ালা 'আব্দ' বা বান্দাহ্ বলে উল্লেখ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যে বার্তাটি পৌছানো হয়েছে তাহলো, নবী করীম (সা:) মহান আল্লাহর একজন বান্দাহ্, আল্লাহই তাঁকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই একান্ত অনুগ্রহ করে তাঁকে নবী-রাসূল নির্বাচিত করেছেন। তিনিই তাঁকে প্রতিপালন করছেন, যেমনটি অন্যান্য সৃষ্টিকেও তিনি প্রতিপালন করেন। প্রথমে তিনি আল্লাহর বান্দাহ্ তারপরে তিনি তাঁর রাসূল। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মর্যাদার সাথে তাঁকে কখনোই তুলনা করা যাবে না এবং তাঁর উলুহিয়াতের অংশও তিনি নন। যেসব গুণ-বৈশিষ্ট মহান আল্লাহর জন্যে প্রযোজ্য সেসব গুণ-বৈশিষ্টের ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম অংশেরও অধিকারী তিনি নন।

        এসব ব্যাপারে যারা সাধারণ মুসলমানদের সম্মুখে কথা বলেন, তাদেরকে অবশ্যই সতর্ক হয়ে কথা বলতে হবে। নবী করীম (সা:) সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তা যেনো মহান আল্লাহর দেয়া সম্মান-মর্যাদার স্তর অতিক্রম করে আল্লাহ জাল্লাশানুহুর মর্যাদার স্তর স্পর্শ না করে। আল্লাহ তা'য়ালা যে সীমারেখা অঙ্কন করে দিয়েছেন তাঁর নবীর ক্ষেত্রে, সে সীমারেখার মধ্যে অবস্থান করেই রাসূল (সা:) এর প্রতি মর্যাদা প্রদর্শন করতে হবে।

Post a Comment

0 Comments