মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নামায যেমন মুসলমানদের প্রতি বাধ্যতামূলক করেছেন তথা ফরজ করেছেন, তেমিন সঠিক সময়ে নামায আদায় করাও ফরজ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন-
إِنَّ الصَّلوةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا
বস্তুত নামায এমন একটি কর্তব্য কাজ, যা সময়ানুবির্ততা সহকারে ঈমানদার লোকদের ওপর ফরজ করে দেয়া হয়েছে। (সূরা আন নিসা-১০৩)
সময় মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ মানুষের জীবনকাল অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ, খুবই অল্প সময় মানুষকে দান করা হয়েছে। হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতদের গড় আয়ু হলো ৬০ বছর। পূর্ববর্তী নবী-রাসূল যাঁরা ছিলেন, তাঁরা যেমন অধিক হায়াত পেয়েছেন, তেমনি তাঁদের উম্মতগণও অধিক হায়াত পেয়েছিলেন।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত স্বল্প হায়াতের অধিকারী বিধায় তাদেরকে এমন সুযোগ-সুবিধা মহান আল্লাহ তা'য়ালা দান করেছেন যে, এরা অল্প কাজের অধিক বিনিময় পাবে। যেমন মুমিন বান্দা সুবহানাল্লাহ, আল হাম্দু লিল্লাহ উচ্চারণ করলে তার আমলনামায় অসংখ্য সওয়াব লিপিবদ্ধ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আবার রমজান মাসের প্রত্যেক কাজের সর্বাধিক বিনিময় দেয়ার কথা বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কদরের রাতের সম্মান-মর্যাদা অগণিত রাতেরও অধিক বলে কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে।
এ জন্য সময়ের ব্যাপারে ইসলাম মুসলমানদেরকে অত্যন্ত সতর্ক করেছে এবং সময়ের যথাযথ ব্যবহার করার জন্য নামাযের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারণ কাল বা সময় অত্যন্ত তীব্র গতিতে মানধ জীবনকে জীবনের শেষ প্রান্তে অগ্রসর করিয়ে দিচ্ছে। এ জন্য সময় মানব জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রত্যেক মানুষের জন্য এই পৃথিবীতে যতটুকু সময়কাল নির্ধারণ করেছেন, তার অতিরিক্ত একটি মুহূর্তও কারো পক্ষে এখানে অবস্থান করা সম্ভব নয়।
পৃথিবীতে মানুষ সময়ের যে হিসাব করে, সেই সময় অনুযায়ী কোন ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তা'য়ালা যদি ৮০ বছর তিনদিন তিন ঘন্টা তেত্রিশ সেকেন্ড নির্ধারণ করে রাখেন, তাহলে সে ব্যক্তি পৃথিবীতে আবিষ্কৃত যাবতীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে চৌত্রিশ সেকেন্ড অবস্থান করতে পারবে না। মানব সন্তান পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হবার সময়কাল থেকে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে নির্ধারিত এই সময়ের খুব কাছে এগিয়ে যাচ্ছে।
মানব সন্তান শৈশব অতিক্রম করে কৈশোর পেরিয়ে তারুণ্যের কোঠা ছাড়িয়ে যৌবনে পদার্পণ করছে, এর অর্থ হলো বন্ধ কলি থেকে ফুল যেন প্রস্ফুটিত হলো। আর ফুল প্রস্ফুটিত হবার অর্থই হলো এখন সে যে কোন মুহূর্তে ঝরে যাবে। রোদ,বৃষ্টি-ঝড়ে ফুল ক্রমশ বিবর্ণ হয়ে হরিদ্রাভা ধারণ করে ধূলায় লুটিয়ে পড়বে। মানুষ যৌবনে পদার্পণ করার অর্থই হলো সে এখন ক্রমশ প্রৌঢ়ত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তারপর বৃদ্ধ অবস্থায় উপনীত হয়ে পৃথিবীকে বিদায় জানানোর প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
মানব জীবনের সোনালী যৌবনের সৌরভ দিদিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে, মহাকাল সেই সৌরভ ক্রমশ নিঃশেষে চুষে নেয়। যৌবনের সুষমা, লাবণ্য আর মাধুরীময় আভা মহাকালের গর্ভে হারিয়ে যায়। যে সময় মানব জীবন থেকে অতিক্রান্ত হয়ে যায়, সে সময় প্রাণান্তকর সাধনার পরেও আর ফিরে পাওয়া যায় না।
মানব জাতির প্রতি মহান আল্লাহর অমূল্য দান হচ্ছে মহামূল্য সময়। এই সময়ই মানুষকে পরিপক্ক করে, কোনো মানুষ জ্ঞানী হয়ে জন্মলাভ করে না। নদীর স্রোত আবু কালের স্রোতের মধ্যে মূল পার্থক্য এই যে, নদীর স্রোত ইচ্ছে করলে থামিয়ে দেয়া বা তার গতি পরিবর্তনও করা যায়, কিন্তু কালের স্রোতের ওপর মানুষের কোনো নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নেই।
অর্থের অপব্যবহার করলে তাকে অমিতব্যায়ী বলে, কিন্তু সবচেয়ে বড় অমিতব্যায়ী হলো সময়ের অপব্যবহার যে করে। কারণ সময় হলো সবচেয়ে বড় সম্পদ। আর মানুষ এই বড় সম্পদই সবচেয়ে বেশী অপচয় করে থাকে।
আজকের এই নবীন ঊষা কিছুকাল পরে অতীতের স্বপ্ন বলে মনে হবে। অর্থ সম্পদ হারালে তা ব্যবসায়-বাণিজ্যের মাধ্যমে পূরণ করা যায়। জ্ঞানের অভাব হলে তা অধ্যয়নের মাধ্যমে লাভ করা যায়। স্বাস্থ্য নষ্ট হলে সংযম বা ওষুধের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা যায়। কিন্তু সময়ের সদ্ব্যবহার না করলে তা চিরদিনের জন্যই হারিয়ে যায়।
বর্তমান বলে কিছুই নেই, যে মুহূর্তে যাকে বর্তমান বলি, সেই মুহূর্তেই তা অতীত হয়ে যায়, অতএব কালের মধ্যে আছে কেবল অতীত ও ভবিষ্যৎ-আর তাদের মধ্যে হাইফেন হয়ে আছে পরিস্থিতিহীন বিন্দুমাত্র বর্তমান, যা থেকেও নেই, যা এক মুহূর্তে থেকে সেই মুহূর্তেই নেই হয়ে যায়, এরই নাম সময়। যে ফুল গভীর নিশীথে ঝরে পড়েছে, তা আর কখনোই ফুটবে না। যে সময় চলে যাচ্ছে মানব জীবনের ওপর দিয়ে, তা আর ফিরে আসবে না।
পৃথিবীতে বর্তমান বলে কিছুই নেই-এই মুহূর্তটি পর মুহূর্তেই অতীতের গর্ভে আশ্রয় নিচ্ছে। প্রতিটি অনাগত মুহূর্ত এসে ভবিষ্যতকে বর্তমানে রূপান্তরিত করছে এবং বর্তমান মুহূর্ত চোখের পলকে অতিবাহিত হয়ে কালের গর্ভে প্রবেশ করে বর্তমানকে অতীতে রূপান্তরিত করছে। বাড়ির ঘড়িটি সেকেন্ডের স্তর পার হয়ে মিনিট অতিক্রম করে ঘন্টা চিহ্নিত স্থানে গিয়ে শব্দ করে বাড়ির মালিককে এ কথাই জানিয়ে দিচ্ছে যে, 'ওহে গৃহকর্তা! এখনো সাবধান হও, তোমার জন্য নির্দিষ্ট জীবনকাল থেকে একটি ঘন্টা পুনরায় কোনদিন ফিরে না আসার জন্য মহাকালের বিবরে গিয়ে প্রবেশ করলো।' মানুষ তার জীবনকাল সম্পর্কে দীর্ঘ আশা পোষণ করে অথচ ক্ষণ পরে কী ঘটবে সে সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই নেই।
পৃথিবীর শিক্ষাঙ্গনসমূহে যখন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, তখন সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। প্রশ্ন পত্রের ওপরে লেখা থাকে, 'সময়-৩ ঘন্টা।' অর্থাৎ যে প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখতে বলা হয়েছে, তা তিন ঘন্টার মধ্যে লিখে শেষ করতে হবে। শুধু লিখলেই চলবে না, সুন্দর হস্তাক্ষরে প্রশ্নের সঠিক উত্তর যথাযথভাবে লিখতে হবে। তাহলেই কেবল পরীক্ষায় যথার্থভাবে উত্তীর্ণ হওয়া যাবে। নির্দিষ্ট এই সময় অতিক্রান্ত হলে পরীক্ষার্থীকে সময় দেয়া হয় না। পরীক্ষার্থী যদি পরীক্ষার স্থানে প্রশ্নের উত্তর না লিখে সময় ক্ষেপণ করে, তাহলে সে কোনভাবেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে না এবং নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে যাবার পরে পরীক্ষার্থী যত অনুরোধই করুক না কেন, তাকে কিছুতেই সময় দেয়া হয় না।
মানব জীবনের বিষয়টিও ঠিক এমনি। এই পৃথিবীতে তাকে নির্দিষ্ট সময়কাল দেয়া হয়েছে এবং তাকে এখানে পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। এখানে তার কাজ হলো সে আঁকা-বাঁকা পথ ত্যাগ করে মহান আল্লাহ যে পথ তাকে প্রদর্শন করেছেন, সেই পথে সে তার জীবনকাল অতিবাহিত করবে। সময় মানব জীবনের প্রকৃত মূলধন। এই মূলধন তাকে যথার্থ পন্থায় ব্যয় করতে হবে। যে কাজের জন্য বরফ নিয়ে আসা হলো, সেই কাজে বরফ ব্যবহার না করে তা যদি ফেলে রাখা হয়, তাহলে সে বরফ তো অত্যন্ত দ্রুত গলে নিঃশেষ হয়ে যাবে। তা কোনো কাজেই লাগবে না।
মানুষের জীবনও বরফের মতোই। তাকে যে নির্ধারিত জীবনকাল দেয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে কালের কৃষ্ণকালো বিবরে গিয়ে প্রবেশ করছে। মানুষের জন্য নির্দিষ্ট সময়কে যদি অপচয় করা হয় বা আল্লাহর অপছন্দনীয় পথে তা ব্যয় করা হয়, তাহলে এ কথা নিশ্চয়তার সাথে বলা যায় যে, সে মারাত্মক ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত। সে স্বয়ং নিজের যে ক্ষতি করছে, সেই ক্ষতি কখনো পুষিয়ে নেয়া যাবে না। এই ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকার জন্যই যথাযথ সময়ে নামায আদায়ের নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ তা'য়ালা তাঁর বান্দাদেরকে সময়ানুবর্তিতা শিক্ষা দিয়েছেন। ফজরের নামায কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে সূয উদিত হওয়ার পরে আদায় করে, তাহলে তার নামায হবে না। যোহর বা আসরের নামায যদি কেউ সন্ধ্যার পরে আদায় করে তাহলে তার নামায হবে না। নামায যিনি ফরজ করেছেন, তিনিই নামায আদায়ের সময়ও নির্ধারিত করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন-
أقم الصلوة لِدُلُوكِ الشمس إلى عَسَقِ اللَّيْلِ وَقُرْآنَ الْفَجْرِ إِنَّ قُرْآنَ الْفَجْرَ كَانَ مَشْهُودًا -
নামায প্রতিষ্ঠিত করো সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে নিয়ে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত এবং ফজরে কোরআন পড়ারও ব্যবস্থা করো। কারণ ফজরের কোরআন পাঠ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। (সূরা বনী ইসরাঈল-৭৮)
উল্লেখিত আয়াতে যে 'দুলুক' শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরাম ও পরবর্তী কালের মুফাস্সিরীনে কেরাম এর অর্থ করেছেন, দুপুরে সূর্যের পশ্চিম দিকে হেলে পড়া। এই আয়াতে ব্যবহৃত 'গাসাকিল লাইলি' শব্দের অর্থ কেউ করেছেন রাতের সম্পূর্ণ অন্ধকার হয়ে যাওয়া। এর অর্থ হলো ইশার নামাযের প্রথম ওয়াক্ত। আবার কেউ অর্থ করেছেন, মধ্যরাত বা গভীর রাত। এর অর্থ হলো ইশার নামাযের শেষ ওয়াক্ত। উল্লেখিত আয়াতে ব্যবহৃত 'ফজর' শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো, প্রভাতের প্রকাশ পাওয়া, প্রভাতের উদয় হওয়া, নিশি ভোর হওয়া বা রাতের অবসান হওয়া। অর্থাৎ রাতের অবসানের সেই প্রথম সময়টি, যখন পূর্ব গগনে পূর্বাশার ইশারা দেখা দেয় বা প্রভাতের সাদা-শুভ্রতা অন্ধকার রাতের বক্ষ ভেদ করে উঁকি দিতে থাকে।
'দুলুক' শব্দের অর্থ কেউ করেছেন সূর্যের পতন হওয়ার ক্ষেত্রে। প্রকৃত অর্থে সূযের পতনও চার বার হয়ে থাকে। প্রথমবার সূর্য যখন দিনের অর্ধেক অতিক্রম করে পশ্চিম দিকে হেলে পড়ে। দ্বিতীয়বার সূর্য যখন অপরাহ্নের দিকে তার স্বাভাবিক উজ্জ্বল্য ও উত্তাপ হারিয়ে এক বিশেষ হলুদ বর্ণ ধারণ করে। তৃতীয়বার সূর্য যখন পশ্চিম গগনে অস্তমিত হয়ে যায়। চতুর্থবার পশ্চিম দিগন্তের দিকচক্রবালে দৃশ্যমান রক্তিম আভা অদৃশ্য হয়ে যায়। এই চারটি সময়কে কেন্দ্র করেই ধারাবাহিকভাবে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যোহর, আসর, মাগরিব ও ইশার নামায আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। আর ফজরের নামাযে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করার বিষয় উল্লেখ করে ফজরের নামায আদায়ের বিষয়টি স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে।
মহাগ্রন্থ আল কোরআনে বলা হয়েছে, ফজরের সময়ে কোরআন পাঠ পরিলক্ষিত হয়। এ কথার অর্থ হলো, মহান আল্লাহর অগণিত ফেরেস্তা এ সময়ের সাক্ষী হয়। হাদীসে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহর ফেরেস্তারা প্রত্যেক নামায ও সৎকাজের সাক্ষী হন, তবুও বিশেষভাবে ফজরের নামাযে কোরআন পাঠের ব্যাপারে তাঁদের সাক্ষী হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে এর গুরুত্ব ও গভীর তাৎপর্যের দিকেই স্পষ্ট ইঙ্গিত করা হয়েছে।
ঠিক এ কারণেই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাযে দীর্ঘ আয়াত ও সূরা পড়ার পদ্ধতি অবলম্বন করেন। তিনি ফজরের নামাযে পবিত্র কোরআনের যে কোনো দীর্ঘ সূরা বা আয়াত তিলাওয়াত করতেন। আবু দাউদও মুসলিমসহ অন্যান্য হাদীস গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, সফরকালে তিনি ফজরের নামাযে প্রথম রাকাআতে সূরা কাফিরুন ও দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা ইখলাস অথবা প্রথম রাকাআতে সূরা নাস ও দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা ফালাক তিলাওয়াত করেছেন। সাহাবায়ে কেরামও এই নীতিই অবলম্বন করতেন।
মি'রাজের সময় যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের নির্দেশ করা হয়েছিলো, তার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে এভাবে যে, দিনের সূচনার নামায আদায় করতে হবে সূর্য উদয়ের পূর্বে। আর পরবর্তী চার ওয়াক্ত নামায সূর্য পশ্চিম গগনে ঢলে পড়ার পর থেকে রাতের প্রথম প্রহরে আদায় করতে হবে। কোন্ সময়ে কোন পদ্ধতিতে এই পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করতে হবে, মহান আল্লাহ তা'য়ালা হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস্ সালামকে প্রেরণ করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জিব্রাঈল আমাকে দুই বার আল্লাহর ঘরের নিকটবর্তী স্থানে নামায আদায় করান। প্রথম দিন যোহরের নামায ঠিক এমন এক সময়ে আদায় করান, যখন সূর্য সবেমাত্র ঢলে পড়েছিলো এবং ছায়া জুতার একটি ফিতার তুলনায় অধিক দীর্ঘ হয়নি। এরপর আসরের নামায এমন এক সময়ে আদায় করান, যখন প্রত্যেক বস্তুর ছায়া তার দৈর্ঘের সমপরিমাণ ছিলো। মাগরিবের নামায এমন সময় আদায় করান, যখন রোযাদার ব্যক্তি ইফতার করে। এরপরে ইশার নামায আদায় করান পশ্চিম আকাশের লালিমা শেষ হয়ে যাবার পরে। আর ফজরের নামায আদায় করান যে সময়ে রোযাদারের প্রতি শেষ রাতে আহার করা হারাম হয়ে যাওয়ার সময়ে।
0 Comments