কোরআনকে বুঝার জন্য সহজ করা হয়েছে

        এ পৃথিবীর মানুষের জন্য নতুন কোনো জীবন দর্শনের প্রয়োজন নেই, কারণ এ বিশ্ববাসীর জন্য যা কিছু প্রয়োজন সমস্ত কিছু মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের মধ্যে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন। পবিত্র কোরআন দ্বারাই আল্লাহর রাসূল বিপ্লব করেছিলেন। তিনি সমাজ ও রাষ্ট্র বিপ্লব যেভাবে করেছিলেন পৃথিবীর বুকে আর কেউ ঐভাবে করতে পারেনি। আর এই কোরআনের শাসন ব্যবস্থার মধ্যেই রয়েছে সমগ্র মানবতার সুখ-শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি।

        মানুষ পবিত্র কোরআনে ভুল আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছে। এ পৃথিবীতে কোন গ্রন্থ বা কোন বই এত বেশী পাঠ করা হয়নি, যত বেশী পাঠ করা হয়েছে ও হচ্ছে পবিত্র কোরআনুল কারীমকে। রাত দিন চব্বিশ ঘণ্টা পাঠ করা হয় পবিত্র কোরআন। কোন গ্রন্থ বা পুস্তক কিছু সময় বা কিছু দিন পাঠ করার পর তার প্রয়োজন শেষ হয়ে যায়। কিন্তু পবিত্র কোরআনে কারীমের ক্ষেত্রে তা ব্যতিক্রম। এ কোরআন মানুষ বুঝে পাঠ করে, না বুঝে পাঠ করে, দেখে পাঠ করে, না দেখে পাঠ করে, নামাযের ভেতরে পাঠ করে, নামাযের বাইরে পাঠ করে। আর মানুষ এর এত পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছে, এর আয়াত সংখ্যা কত, রুকুর সংখ্যা কত, এর পারার সংখ্যা কত, সূরার সংখ্যা কত, অক্ষরের সংখ্যা কত, শব্দের সংখ্যা কত, বাক্যের সংখ্যা কত, রাহীমের সংখ্যা কত, রহমানের সংখ্যা কত ইত্যাদি। সবগুলো কম্পিউটারের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে কম্পিউটারকে প্রশ্ন করা হয়েছে এটা মানুষের বানানো কি না? মানুষের পক্ষে কি এটা তৈরি করা সম্ভব? কম্পিউটার উত্তর দিয়েছে, সংখ্যা তথ্যের দিক হতে ভারসাম্যপূর্ণ এমন কিতাব মানুষের দ্বারা তৈরি করা সম্ভব নয়।

        আপনি যে লেখকের বই বা যে কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প ইত্যাদি বেশি পছন্দ করেন, সে বইটি একাধিক বার পাঠ করেন, তারপর আপনার মনে বিরক্ত এসে যাবে আর পাঠ করতে ইচ্ছা করবে না। কিন্তু পবিত্র কোরআন এর ব্যতিক্রম। এ কোরআন যত বেশি পাঠ করা হয় ততই ভালোলাগে। যত বেশি বুঝে পাঠ করা হয় ততই পাঠ করার দিকে আগ্রহ বাড়ে। প্রত্যেক নামাযে মানুষ কোরআন পাকের আয়াত ও সূরা দিয়ে নামায আদায় করে থাকে। আজ দেড় হাজার বছর গত হলো, এ পর্যন্ত একজন মানুষও বলতে পারলো না যে কোরআন দিয়ে নামায আদায় করতে আর ভালোলাগে না, এবার হাদীস দিয়ে নামায আদায় শুরু করবো। আবার অন্য দিকে পৃথিবীতে যত বই বা কিতাব পাঠ করা হয়, এর বিনিময়ে একটি নেকী লেখা হবে এমন কোন গ্যারান্টি নেই।

        কিন্তু পবিত্র কোরআনুল কারীমের ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা আছে, যে ব্যক্তি পবিত্র কোরআন কারীম তিলাওয়াত করে তার আমলনামায় প্রতিটি অক্ষরের বিনিময়ে মহান আল্লাহ দশটি করে নেকী লিখে দেন।

        এই পৃথিবীর জায়গা-জমি, অর্থ-সম্পদ, স্বর্ণ-রৌপ্য, হীরা-মুক্তা, সম্পত্তির দলিল-পর্চা ও আসবাবপত্র রক্ষা করতে মানুষ সিন্দুক, লকার ইত্যাদি জায়গায় সংরক্ষণ করে থাকে। যেন মূল্যবান জিনিসগুলো হারিয়ে বা চুরি হয়ে না যায়। কেউ যেন নকল করতে না পারে, তারপরেও দেখা যায় একজনের সম্পত্তির দলিল অন্যজনে জাল করে দখল করে নিয়ে যায়। এ পবিত্র কোরআন হলো মানুষের বেঁচে থাকার দলিল। এ কোরআন যেন নকল না হতে পারে সে জন্য কোরআনে কারীমকে মানুষের স্মৃতিশক্তির মধ্যে হেফাজত করার ব্যবস্থা করেছেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। পৃথিবীর মানুষ যাকিছু রেকর্ড করে রাখে, তার উপর যদি আরেকটি রেকর্ড করে তাহলে আগের রেকর্ড করা সবকিছু মুছে যায়। কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষের স্মৃতির ভেতরে এমন ব্যবস্থা করে রেখেছেন, যাতে দুনিয়ার সমস্ত কিছু যদি মুখস্থ করে রেকর্ড করে রাখা হয় তাহলে আগেরটা মুছে যাবে না।

        এ পৃথিবীতে যত ধর্মের লোক আছে তাদের প্রত্যেকের ধর্মগ্রন্থ আছে, যেমন হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থ হল বেদ। গোটা পৃথিবীতে বেদের একজন হাফেজ পাওয়া যাবে না। এ পৃথিবীতে কয়েক শত কোটি খৃষ্টান আছে, তাদের ধর্মগ্রন্থ হল বাইবেল, তাদের মধ্যে বাইবেলের একজন হাফেজ খুঁজে পাওয়া যাবে না। শুধু বেদ আর বাইবেল নয়, পৃথিবীর এমন কোন ধর্মগ্রন্থ নেই পবিত্র কোরআন কারীম ব্যতীত যে, সে গ্রন্থের একটি হাফেজ খুঁজে যাওয়া যাবে। কিন্তু পবিত্র কোরআনুল কারীম মুখস্থ করার ও বুঝার জন্য আল্লাহ তা'য়ালা সহজ করে দিয়েছেন-

وَلَقَدْ يَسَّرْنَا القُرْآنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِنْ مُّدَّكِرٍ 

        আমি এই কোরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ মাধ্যম বানিয়েছি। এ থেকে উপদেশ গ্রহণে কেউ প্রস্তুত আছে কি? (ক্বামার: ১৭)

        পবিত্র কোরনানের অন্যত্র বলা হচ্ছে-

الرَّحْمنُ عَلَمَ الْقُرْآنَ - خَلَقَ الإِنْسَانَ عَلَمَهُ الْبَيَانَ

         পরম করুণাময় আল্লাহ এই কোরআনের শিক্ষা দিয়েছেন। তিনিই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে কথা বলা শিক্ষা দিয়েছেন। (আর রাহমান-১-৪)

ومَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَّسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْ 

        আমি আমার বাণী পৌঁছানোর জন্য যখনই কোন রাসূল প্রেরণ করেছি, সে নিজ জাতির জনগণের ভাষায়ই পয়গাম পৌঁছিয়েছে, যেন তিনি তাদেরকে অত্যন্ত ভালোভাবে স্পষ্টরূপে বুঝাতে সক্ষম হয়। 
(সূরা ইবরাহীম-৪)

فَإِنَّمَا يَسِّرْنَهُ بِلِسَانِكَ لِتُبَشِّرَبِهِ الْمُتَّقِينَ وَتُنْذِرَ بِهِ قَوْ مَالُدًا

        হে রাসূল। এ বাণীকে আমি সহজ করে তোমার ভাষায় এ জন্য অবতীর্ণ করেছি যেন তুমি মুত্তাকিদেরকে সুসংবাদ দিতে ও সীমালংঘনকারীদেরকে ভীতি প্রদর্শন করতে সক্ষম হও। 
(সূরা মারিয়াম)

কোরআনের বক্তব্যে বিন্দুমাত্র দুর্বোধ্যতা নেই। এ কিতাব যা বলে তা অত্যন্ত সহজ সরল ও স্পষ্টভাবে বলে দেয়। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন-

تِلْكَ أَيْتُ الْكِتٰبِ الْمُبِيْنِ إِنَّا أَنْزَلْتُهُ قُرْ نَا عَرَبِيًّا لَّعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ

এটা সেই কিতাবের আয়াত, যা নিজের বক্তব্য স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে। আমি একে কোরআন রূপে আরবী ভাষায় অবতীর্ণ করেছি। (সূরা ইউসুফ-১-২)

وَكَذَالِكَ اَنْزَلْنَهُ قُرْأَنَا عَرَبِيًا وَصَرَّفْنَا فِيهِ مِنَ الْوَعِيدِ

হে রাসুল! এভাবে আমি একে আরবী কোরআন বানিয়ে অবতীর্ণ করেছি এবং এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সতর্কবাণী করেছি। (সূরা ত্বা-হা-১১৩)

وَلَقَدْ ضَرَبْنَا لِلنَّاسِ فِي هَذَا الْقُرْآنِ مِنْ كُلِّ مَثَلٍ لعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ قُرَأْنَا عَرَبِيًّا غَيْرَنِي عِوَجٍ لَّعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ

এ কোরআনের ভেতরে আমি মানুষের জন্য নানা ধরনের উপমা পেশ করেছি যেন তারা সাবধান হয়ে যায়, আরবী ভাষার কোরআন-যাতে কোন বক্রতা নেই। যাতে তারা নিকৃষ্ট পরিণাম থেকে রক্ষা পায়। 
(সূরা যুমার-২৭-২৮)

এ কিতাব অত্যন্ত সুস্পষ্ট, এর ভেতরে না বুঝার মতো কোন জটিল বিষয়ের অবতারণা করা হয়নি। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন-

تَنْزِيلٌ مِّنَ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمٍ كِتَابٌ فُصِّلَتْ أَيْتُهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِقَوْمٍ يَعْلَمُوْنَ بَشِيرًا وَنَذِيرًا فَأَعْرَضَ أَكْثَرُهُمْ فَهُمْ لَا يَسْمَعُونَ

        এটা পরম দাতা ও মেহেরবান আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ করা জিনিস। এটি এমন এক গ্রন্থ যার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। আরবী ভাষার কোরআন। সেসব লোকদের জন্য যারা জ্ঞানের অধিকারী, সুসংবাদ দানকারী ও সতর্ককারী। 
(সূরা হা-মীম-সাজদাহ-২-৪)

وَلَوْ جَعَلْنَهُ قُرْآنًا أَعْجَمِيًا لَقَالُوا لَوْلَا فُصِّلَتْ أَيْتُهُ أَعْجَمِيٌّ وَعَرَبِي

        আমি যদি একে অনারব কোরআন বানিয়ে প্রেরণ করতাম তাহলে এসব লোক বলতো, এর আয়াতসমূহ সুস্পষ্ট করে বর্ণনা করা হয়নি কেন? কি আশ্চর্য কথা, অনারব বাণীর শ্রোতা আরবী ভাষাভাষী। 
(সূরা হা-মীম-সাজদাহ-৪৪)

মহান আল্লাহ তা'য়ালা মহাকাশ ও গ্রহ-নক্ষত্র সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলেছেন-

 إِذَا السَّمَاءُ انْفَطَرَتْ وَإِذَا الْكَوَاكِبُ انْتَثَرَتْ

আকাশ যখন বিদীর্ণ হবে, আর নক্ষত্রমণ্ডলী যখন বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়বে।

আবার বিজ্ঞান যা বলে তা কোরআনের দৃষ্টিতে ঠিক হলে তাকে ঠিক বলেই আমরা মেনে নেই। আর কোরআনের দৃষ্টিতে সঠিক না হলে তাকে মিথ্যা বলেই প্রত্যাখ্যান করি। পৃথিবী সৃষ্টির ব্যাপারে বিজ্ঞানের কথা কোরআন বিরোধী নয়। যদি কুন ফাইয়াকুন-এর অর্থ ধরি যে, "তক্ষুণি হয়ে গেল" তাহলে বিজ্ঞানে ও কোরআনে অবশ্যই গরমিল মনে হবে। পবিত্র কোরআনে বলা হচ্ছে-

بَشِيرًا وَنَذِيرًا فَأَعْرَضَ أَكْثَرُهُمْ فَهُمْ لَا يَسْمَعُونَ 

        সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী। কিন্তু অধিকাংশ লোক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সুতরাং তারা শুনবে না। 
(সূরা হা-মীম সাজদা: ৪)

পবিত্র কোরআনে মহাবিশ্ব সৃষ্টির পর্যায় ক্রমিক মেয়াদকাল সম্পর্কে বলা হচ্ছে-

إِنَّ رَبَّكُمُ اللهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مَا مِنْ شَفِيعٍ إِلا مِنْ بَعْدِ اذْنِهِ - ذَلِكُمُ اللهُ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ 

        তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন। তিনি সকল বিষয় পরিচালনা করেন। তাঁর অনুমতি লাভ না করে সুপারিশ করার কেউ নেই। তিনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। সুতরাং তাঁর ইবাদত কর। তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না? (সূরা ইউনুস-৩)

মহান আল্লাহ রাববুল আলামীন অন্যত্র বলেছেন-

وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَلَئِنْ قُلْتَ إِنَّكُمْ مَّبْعُوثُونَ مِنْ بَعْدِ الْمَوْتِ لَيَقُولَنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا إِنْ هذَا إِلَّا سِحْرٌ مُّبِينٌ

        আর তিনিই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, তখন তাঁর আরশ ছিল পানির উপর তোমাদের মধ্যে কে কর্মে শ্রেষ্ঠ তা পরীক্ষা করার জন্য। তুমি যদি বল, মৃত্যুর পর তোমরা অবশ্যই উত্থিত হবে। কাফেররা নিশ্চয়ই বলবে, তাতো সুস্পষ্ট যাদু। (সূরা হুদ-৭)

الَّذِي خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ الرَّحْمَنُ فَسْئَلُ بِهِ خَبِيرًا -

        তিনি আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী ও তাদের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছু হয় দিনে সৃষ্টি করেন। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন। তিনিই রহমান তাঁর সম্বন্ধে যে অবগত আছে, তাকে জিজ্ঞেস করে দেখ।" 
(ফুরকান: ৫৯)

        এসব আয়াতের প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, পৃথিবী সৃষ্টির ব্যাপারে বিজ্ঞানের আবিষ্কার কোরআনের বক্তব্যের মোটেই পরিপন্থী নয়। তবে বিজ্ঞানীদের মধ্যে কেউ কেউ পৃথিবী সৃষ্টির যাবতীয় পর্যায়ক্রমিক মেয়াদকাল, ব্যবস্থাপনাকে নিজ থেকেই বা আপনা-আপনিই সৃষ্টি হওয়ার কথা বলেছেন, আবার কেউ কেউ সৃষ্টিকর্তাকে মেনে নিচ্ছেন।

        সুতরাং পরিষ্কার করে বলা যেতে পারে, প্রকৃতপক্ষে বিজ্ঞান যেখানে ভুল করেনি সেখানে কোরআনে ও বিজ্ঞানে কোন সংঘর্ষ নেই। আর যেখানেই বিজ্ঞান ভুল করেছে সেখানেই কোরআনের সাথে বিজ্ঞানের সংঘর্ষ।

Post a Comment

0 Comments