আল্লাহ প্রাণীসমূহকে শিক্ষা দিয়েছেন

        পৃথিবীর এই মানুষগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করলে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তাহলো কোন সাধারণ মানুষ সৃষ্টির সেই শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মহান আল্লাহর অস্তিত্বে অবিশ্বাস পোষণ করেনি। আল্লাহর অস্তিত্বে অবিশ্বাস পোষণ করেছে এবং বর্তমানেও করছে, শিক্ষিত শ্রেণীর ভেতরে কিছু সংখ্যক ব্যক্তি। জড়বাদ আর বস্তুবাদী জীবন দর্শনের ওপর ভিত্তি করে। গড়ে ওঠা শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষিত এক শ্রেণীর তথাকথিত দার্শনিক-বুদ্ধিজীবী ব্যক্তিগণই আল্লাহকে অস্বীকার করেছে। বিশ্বের বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নাস্তিক্যবাদে আস্থাশীল. ব্যক্তিবর্গ নানা ধরনের ডিগ্রী অর্জন করেও গ্রামের ঐসব নিরক্ষর কৃষকের সমপর্যায়ের • যোগ্যতাও অর্জন করতে সক্ষম হয়নি, যে কৃষক তার নিজের দেহ আর পালিত পশুর মল ত্যাগের দৃশ্য অবলোকন করে মহান আল্লাহর প্রতি তার বিশ্বাস দৃঢ় করেছে। কৃষক যখন দেখেছে, তার পালিত পশুটি বৃক্ষ-তরুলতার পাতা আর ঘাস ভক্ষণ করে এবং মল হিসেবে ত্যাগ করে ভক্ষিত দ্রব্যের বিপরীত বস্তু, তখন তার চিন্তার জগতে এ কথার উদ্রেক হয়েছে, বিষয়টি কোন পরিকল্পনাবিদের পরিকল্পনা ব্যতিত কোনক্রমেই সম্ভব হতে পারেনা। পদার্থের রূপান্তর এভাবে যিনি ঘটাচ্ছেন তার পেছনে একজন মহান স্রষ্টা নিশ্চয় রয়েছেন, যার নাম আল্লাহ এবং তিনিই আমাদের রব্ব, তিনিই এগুলো নিয়ন্ত্রণ করছেন।

        নিরক্ষর কৃষক যখন তার নিজের হাতের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছে, তার এই হাতটি কিভাবে খাদ্য উঠিয়ে নিয়ে মুখের কাছে আসে। হাতের এই অবস্থা দেখে তার চিন্তার সাগরে ঢেউ সৃষ্টি হয়েছে। সহজ-সরলভাবে সে বুঝেছে, তার এই গোটা হাতের মধ্যে রয়েছে ছয়টি গ্রন্থি। এই গ্রন্থিগুলো না থাকলে তার এই হাত নামক অঙ্গটি একটি লাঠি ব্যতিত আর কিছুই হতো না এবং তা বক্র হয়ে মুখের কাছেও আসতো না। এক মহান সত্তার পরিকল্পনার অধীনে হাতে এই গ্রন্থিগুলো সৃষ্টি হয়েছে, সেই পরিকল্পনাবিদের নাম হলো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। অক্ষর জ্ঞানহীন মজুর ব্যক্তিটি তার বাড়িতে পালিত কবুতরের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছে। সে দেখেছে, ক্ষুদ্রাকৃতির দুটো ডিম থেকে ১৭/১৮ দিনের ব্যবধানে বিস্ময়কর ছোট্ট দুটো বাচ্চা বেরিয়ে এলো।

        একটি শস্যদানাও আহার করার এবং পরিপাক করার ক্ষমতা সদ্যফোটা কবুতরের বাচ্চার নেই। তাহলে কি খেয়ে বাচ্চা জীবিত থাকবে? এ চিন্তা বাচ্চা কবুতরের মা-বাবাকে করতে হয়নি। মহান আল্লাহ তা'য়ালার কি সুন্দর ব্যবস্থা দেখুন, কবুতর ডিমে তা দেবার জন্য বসার ৭ দিন পর থেকেই মা ও বাবা কবুতরের খাদ্য থলিতে পিজিয়ন মিল্ক তৈরীর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। আর বাচ্চা ফোটার সাথে সাথে অর্থাৎ ১৮ দিন থেকেই মাতাপিতা উভয় কবুতরের খাদ্য থলিতে এই দুধ যথেষ্ট পরিমাণে মওজুদ হয়।

        বাচ্চা দুটোর জনক-জননী বাচ্চার মুখ নিজের মুখের মধ্যে নিয়ে উদগিরণ করে এই দুধ বাচ্চার খাদ্যনালীতে পৌঁছে দেয়। মা ও বাবা কবুতরের খাদ্যনালীতেই এই দুধ একটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরী হয়। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, বাচ্চা কবুতরের খাদ্যের উপযোগী এই দুধে রয়েছে ৭০ ভাগ পানি, ১৭. ৫ ভাগ আমিষ, ১০ ভাগ চর্বি এবং বাকী ২. ৫ ভাগ বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ। এ কারণে ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সদ্যফোটা বাচ্চা কবুতরের বাড়তি খাদ্যের প্রয়োজন হয় না।

        নিরক্ষর ব্যক্তিটি এ দৃশ্য দেখে চিন্তা করেছে, কবুতর আহার করে শক্ত শস্যদানা। কিন্তু যে কবুতরের ছোট্ট বাচ্চা রয়েছে সে কবুতরের সদ্যফোটা বাচ্চাকে মা-বাবা কবুতর খাওয়াচ্ছে, কিন্তু বাচ্চার থলিতে শস্যদানা নেই, রয়েছে এক ধরনের সাদা তরল পদার্থ। এর কারণ কি? এর কারণ হিসেবে তার সহজ-সরল বুদ্ধিতে ধরা পড়েছে, শক্ত শস্যদানা আহার করালে তার বাচ্চা এখন তা হজম করতে পারবে না। এ কারণে কবুতর তার ছোট্ট বাচ্চাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নরম এমন কিছু বাচ্চার মুখে উদগিরণ করে দিচ্ছে-যেন বাচ্চা তা সহজে পরিপাক করতে পারে। বাকশক্তিহীন সামান্য একটি কবুতরকে এই প্রক্রিয়া অবলম্বনের জ্ঞান যিনি দান করেছেন, তার পরিচয় হলো রাব্বুল আলামীন।

        গৃহপালিত গাভী বা ছাগল বাচ্চা প্রসব করেছে। সে বাচ্চা কিছুক্ষণ পরেই টলমল পায়ে উঠে দাঁড়িয়ে গর্ভধারিণীর পেছনের দু'পায়ের মাঝে মুখ বাড়িয়ে দিয়ে খাদ্যের সন্ধান করছে। দুধ মুখের ভেতরে নিয়ে চুষতে আরম্ভ করেছে আর মাথা দিয়ে বার বার দুধের স্থানের গোস্ত পিন্ডে আঘাত করেছে। বাচ্চা প্রসবের পূর্বে সে স্থানে দুধ ছিল বরফের মতই জমাট বাঁধা। শাবকের মাথার আঘাতে সে দুধ গলে গলে দুধবাহী নালীতে এসেছে আর শাবক তা চুষে পান করে উদর পূর্ণ করেছে। এই দৃশ্য যখন রাখাল অবলোকন করেছে, তখন তার মনে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জেগেছে, এই প্রক্রিয়া সদ্যজাত ঐ শাবককে কে শিখিয়ে দিল? তার মনের গহীন থেকে প্রশ্নের উত্তর এসেছে, শিক্ষাদাতা হলেন স্বয়ং আল্লাহ এবং তিনিই সৃষ্টি জগতসমূহের রব্ব।

        মুরগীর বাচ্চার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে দেখা যায়, চিল বা বাজ পাখী দেখলে মা মুরগী একটা বিশেষ ধরনের শব্দ করে। সদ্যজাত মুরগী ছানা সে শব্দ শোনার সাথে সাথে আত্মগোপন করে। মা মুরগী একটা বিশেষ শব্দ করলো আর সদ্যজাত ছানাগুলো বুঝে নিল এটা একটি বিপদ সংকেত (Alarm or Signal of danger)। এখন ঐ বাচ্চাকে এই সিগ্‌ন্যাল সম্পর্কে কে অভিহিত করলো যে এটা বিপদ সংকেত? এই বিপদ সংকেত বোঝার ক্ষমতা যিনি দান করলেন তিনিই হলেন রাব্বুল আলামীন। একশ্রেণীর নাস্তিকগণ বলে থাকেন যে, মুরগী ছানার জনক-জননীর ভেতরে ভীতির প্রবণতা বিদ্যমান ছিল, চিল বা বাজপাখী যে তাদের জন্য বিপজ্জনক এই প্রবণতা তাদের রক্তের ভেতরে বিদ্যমান। যে ধরনের অনুভূতি জনক-জননীর ভেতরে বিদ্যমান ছিল, প্রজননের মাধ্যমে যে বাচ্চা জন্ম গ্রহণ করলো, ঐ প্রবণতা বাচ্চার ভেতরেও সংক্রামিত হলো।

        এ কারণে মুরগীর বাচ্চা চিল দেখেই আত্মগোপন করেছে। তাদের এই যুক্তি যে কতটা অর্থহীন তা এই নাস্তিকগণ অনুভব করতে চায় না। এরা হলো হতভাগ্য, এ কারণে সামান্য বিষয় তাদের মাথায় প্রবেশ করে না। যেমন মানুষ সাপ দেখলে ভয় পায়। নারী-পুরুষ উভয়েই সাপ দেখলে ভয় পায়। এই নারী ও পুরুষ থেকে আরেকটি শিশু জন্মগ্রহণ করলো, এই শিশুটি যখন এক বা দেড় বছরের হলো তখন সে হাতের কাছে যা পায় তাই ধরতে শিখলো। তার সামনে যদি একটি বিষাক্ত সাপ এসে ফণা তুলে দাঁড়ায়, শিশু সাপ দেখে ভয় পেয়ে পালায় না বা চিৎকার দেয় না। সে খেলার ছলে সাপটিকে ধরতে যায়।

        মাতা-পিতা সাপ দেখলে ভয় পায় অর্থাৎ তাদের ভেতরে ভীতির অনুভূতি বিদ্যমান ছিল। এই অনুভূতি কেন তার শিশু সন্তানের ভেতরে সংক্রামিত হলো না? প্রকৃত অর্থে বিষয়টি হলো, মুরগীর বাচ্চার কাছে বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষ নেই, তাকে হেফাজত করার কেউ নেই, এ কারণে স্বয়ং আল্লাহ তাদেরকে বোঝার তওফিক দান করেছেন কোনটা বিপদ সংকেত। আর মানুষের শিশুকে লালন-পালন করার দায়িত্ব আল্লাহ তা'য়ালা দিয়েছেন তার মাতা-পিতার ওপরে। এ কারণে শিশুর ভেতরে বিপদ সংকেত বোঝার মত অনুভূতি দেয়া হয়নি। এই ব্যবস্থা যিনি করেছেন, তাঁর নাম হলো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।

        বিড়ালের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে দেখা যায়, তার যখন প্রসব কাল অত্যাসন্ন হয়ে ওঠে তখন সে নিরব নির্জন গোপন স্থান অনুসন্ধান করতে থাকে। প্রসবের কয়েক দিন পূর্ব থেকেই গর্ভবতী বিড়াল প্রসবের স্থান খুঁজতে থাকে। তারপর সে গোপন স্থানে বাচ্চা প্রসব করে। এই বাচ্চা সে একস্থানে রাখে না, কয়েক দিন পরপর সে স্থান পরিবর্তন করে। মা তার শাবকের ঘাড়ে আলতোভাবে কামড়ে ধরে স্থান পরিবর্তন করে। শত্রু যেন কোনক্রমেই তার শাবকদের সন্ধান না পায় এ জন্য মা বিড়াল এটা করে থাকে। শাবককে রক্ষা করার জন্য বিড়ালকে সতর্কতা অবলম্বনের অনুভূতি যিনি দান করেছেন, তিনিই হলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। এসব দেখে সাধারণ মানুষের মনে মহান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস দৃঢ় হয়েছে। কিন্তু পৃথিবীতে প্রচলিত যাবতীয় বস্তু সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করার পরও এক শ্রেণীর পন্ডিত ব্যক্তি মহান আল্লাহ সম্পর্কে অবিশ্বাস পোষণ করেছে। যৌগিক পদার্থ আর মৌলিক পদার্থের পেছনে ছোটাছুটি করতে করতে এদের অনেকেই বয়সের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে, কিন্তু নিরক্ষর কৃষকের মতো স্রষ্টার নিদর্শনের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপের সময় এদের ভাগ্যে জোটেনি। পৃথিবীতে এই শ্রেণীর লোকগুলো হলো সবচেয়ে হতভাগা। এরা আকার আকৃতি মানুষের মত দেখতে হলেও মহান আল্লাহ এদেরকে পশুর থেকেও নিকৃষ্ট বিশেষণে বিশেষিত করেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন-

وَلَقَدْ ذَرَانَا لِجَهَنَّمَ كَثِيراً مِّنَ الجن والانس - لَهُمْ قُلُوبٌ . لا يَفْقَهُونَ بِهَا وَلَهُمْ أَعْيُنٌ لا يُبْصِرُونَ بِهَا وَلَهُمْ آذَانٌ لا يَسْمَعُوْنَ بِهَا أُولَئِكَ كَالأَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ أُولَئِكَ هُمُ الْغَفِلُونَ .

        এ কথা একান্তই সত্য যে বহু সংখ্যক জ্বিন ও মানুষ এমন আছে যাদেরকে আমি জাহান্নামের জন্যই সৃষ্টি করেছি। তাদের অন্তকরণ রয়েছে, কিন্তু তার সাহায্যে তারা চিন্তা-গবেষণা করে না। তাদের চোখ রয়েছে, কিন্তু তা দিয়ে তারা দেখে না। তাদের শ্রবণ শক্তি রয়েছে, কিন্তু তা দিয়ে তারা শুনতে পায় না। তারা আসলে জন্তু-জানোয়ারের মত, বরং তা থেকেও অধিক বিভ্রান্ত। এরা চরম গাফিলতির মধ্যে নিমগ্ন। (সূরা আ'রাফ-১৭৯)

        যারা মহান আল্লাহকে অস্বীকার করে, তারা এই সৃষ্টি জগতের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট। কারণ তাদের বুঝার মত জ্ঞান রয়েছে, এই জ্ঞান দিয়ে তারা সমস্ত কিছুই অনুভব করলো, অনুভব করতে পারলো না শুধু মহান আল্লাহকে। এদের দর্শনশক্তি এবং শ্রবণশক্তি রয়েছে, আল্লাহর দেয়া এসব শক্তির সাহায্যে তারা পৃথিবীর সমস্ত কিছুই দেখেছে এবং শুনেছে কিন্তু মহাসত্য তারা দেখতে পায়নি; মহাসত্যের বাণী তারা শুনেও শোনেনি। এ জন্যই এদেরকে পশু পদবাচ্যে বিশেষিত করা হয়েছে। আল্লাহ সম্পর্কে উদাসীন ব্যক্তিদেরকে পশু পদবাচ্যে চিহ্নিত করার কারণ হলো, এক শ্রেণীর পশু তার মনিবের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত এবং অবগত। বর্তমান পৃথিবীতে অনেক দেশেই বাড়িতে কুকুর লালন-পালন করা হয়।

        বিভিন্ন দেশের সরকারের কুকুর বাহিনী রয়েছে। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কুকুরগুলো লুকায়িত মাদক দ্রব্যের, অস্ত্রের সন্ধান জানিয়ে দেয় এবং অপরাধীকে সনাক্ত করতে পারে। গৃহপালিত কুকুর চৌকিদারের ভূমিকা পালন করে। তার শ্রবণ ইন্দ্রিয় সজাগ করে সে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আক্রমণ করার জন্য ছুটে যায়। সুতরাং কুকুরের মতো একটি প্রাণীও তার মনিবকে চিনে। কিন্তু মানুষের মতো সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ একটি জীব যখন তার আপন প্রভু আল্লাহকে চিনতে ব্যর্থ হয়; আল্লাহকে অস্বীকার করে তখন তো সে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট জীবে পরিণত হয়। কারণ পশুর যে যোগ্যতা বিদ্যমান, সে যোগ্যতা আল্লাহকে অস্বীকারকারী ঐ মানুষ অর্জন করতে সক্ষম হয়নি।

        আল্লাহ যে রব্ব-এ কথার ওপরে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। যেমন পানি, পানির অপর নাম হলো জীবন। কিন্তু এই পানি আবার জীবনহানির কারণও ঘটাতে পারে এ কথা মানুষ বিশ্বাস করে। প্লাবন যখন তীব্র গতিতে আসে, তখন বিশাল বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়ে যায়, অসংখ্য ঘর-বাড়ি, ধন-সম্পদের ক্ষতি হয়, প্রাণহানী ঘটে। পানির মধ্যে আল্লাহ তা'য়ালা এমন গুণাবলী দান করেছেন, যা দ্বারা কল্যাণও লাভ করা যায়, আবার অকল্যাণও হতে পারে-পানির এই গুণাবলীর প্রতি মানুষ বিশ্বাসী। গোটা সৃষ্টিকে প্রতিপালন করার জন্য পানি একান্ত প্রয়োজনীয়। এই পানির ব্যবস্থা করেছেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।

        এই পৃথিবীর চারভাগের তিনভাগ হলো পানি আর এক ভাগ হলো স্থল। পানির ভাগ বেশী করার কারণ হলো, পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখা। পানি ব্যতিত পৃথিবী টিকে থাকতে পারে না। এ কারণে আল্লাহ পাক বিশাল আকারের জলাধার নির্মাণ করেছেন। সাগর মহাসাগর সৃষ্টি করেছেন। এসবের পানি প্রয়োজন অনুযায়ী সর্বত্র পৌঁছতে সক্ষম হবে না বলে আল্লাহ ছুবহানাহু তা'য়ালা খাল-বিল, নদী-নালা, হাগুড় নির্মাণ করেছেন। মাটির প্রতিটি স্তরে তিনি পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন।

        এত পানির ব্যবস্থা করার পরও চাহিদা পূরণ হবে না বলে মহান আল্লাহ বৃষ্টির ব্যবস্থা করেছেন। তিনি তাপ সৃষ্টি করেছেন। এই তাপের কারণে পৃথিবীর জলভাগের পানি বাষ্প আকারে ঊর্ধ্বে চলে যায়। তারপর তা মেঘমালায় পরিণত হয়। তারপর তা আল্লাহর আদেশে শীতল থেকে শীতলতর হতে থাকে। এক সময় তা প্রচন্ড ভারী হয়ে যায়। আল্লাহ আদেশ দান করেন, বৃষ্টির আকারে পানি পৃথিবীর বুকে ঝরতে থাকে। এ পৃথিবীর কোথায় কোন কোণে একটি শুষ্ক বালু কণা অবস্থান করছে, আল্লাহ পাক সেটাকেও সিক্ত করার সুব্যবস্থা করেন।

        এমনিভাবে মানুষ বিষের গুণাবলী, বিভিন্ন খাদ্যের গুণাবলী, মৃত্তিকার গুণাবলী তথা দৃষ্টির সামনে বিদ্যমান যাবতীয় বস্তুর প্রতি মানুষ শুধু বিশ্বাস-ই করে না, এসব বস্তুর গুণাবলীর প্রতিও মানুষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। আগুনের অস্তিত্বেই মানুষ শুধু বিশ্বাস করে না, আগুন যে একটি দাহ্য বস্তু, আগুনের দহন ক্ষমতা রয়েছে, এ কথা প্রতিটি মানুষই বিশ্বাস করে। সাপের অস্তিত্বে মানুষ যেমন বিশ্বাস করে, তেমনি সাপের এ গুণাবলীর প্রতিও মানুষ বিশ্বাস করে, সাপ দংশন করলে তার বিষের ক্রিয়ায় প্রাণ হারাতে হবে। মানুষ বনের হিংস্র বাঘের অস্তিত্বে বিশ্বাসী। সেই সাথে এ কথাও মানুষ বিশ্বাস করে যে, বাঘের ভেতরে হিংস্রতা বিদ্যমান। বাঘের এই গুণাবলীসহ মানুষ বাঘের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে থাকে।

        এই পৃথিবীতে মানুষ শুধুমাত্র বস্তুর প্রতিই বিশ্বাস করে না, বস্তুর গুণাবলীসহ বস্তুকে বিশ্বাস করে। ঠিক তেমনি, শুধুমাত্র আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস স্থাপন করলেই যথাযথ অর্থে আল্লাহর খলীফা বা প্রতিনিধি হওয়া যাবে না, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যাবে না, জাহান্নাম থেকে মুক্তিও লাভ করা যাবে না। আল্লাহর গুণাবলী সম্পর্কে স্বচ্ছ ও পূর্ণ ধারণা না থাকলে ইসলামী আন্দোলনের কোন কর্মীর পক্ষে ময়দানের প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকাও যাবে না। এ জন্য মুমীন হতে হলে আল্লাহ পাকের অস্তিত্বে যেমন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী হতে হবে, সেই সাথে মহান আল্লাহর গুণাবলীর প্রতিও গভীর আস্থাশীল হতে হবে। মহান আল্লাহ হলেন সমস্ত কিছুর স্রষ্টা। দৃষ্টির সামনে পরিদৃশ্যমান এবং যা কিছু মানুষের দৃষ্টি ও ইন্দ্রিয়ানুভূতির বাইরে বিদ্যমান, তারও স্রষ্টা হলেন স্বয়ং আল্লাহ তা'য়ালা। আল্লাহ ব্যতিত এমন কোন শক্তির অস্তিত্ব নেই, যে শক্তি মাছির সামান্য একটা পাখা তৈরী করতে সক্ষম। তবে মানুষকে এ জ্ঞান দান করা হয়েছে, তারা বস্তুর রূপান্তর ঘটাতে সক্ষম-কিন্তু স্বয়ং সে কোন বস্তুর স্রষ্টা নয়। বস্তুর স্রষ্টা হলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।

        তিনি প্রতিপালক। অর্থাৎ তিনি শুধু স্রষ্টাই নন, সমস্ত কিছু সৃষ্টি তিনি তার সৃষ্টির প্রতিপালক হিসেবে অন্য কোন শক্তিকে দায়িত্ব অর্পণ করেননি। তিনি তার যাবতীয় সৃষ্টির লালন ও পালন কর্ত। কোথায় কোন সৃষ্টি অবস্থান করছে, কোন সৃষ্টির কখন কি প্রয়োজন, এ সম্পর্কে তিনি উদাসীন নন। সাগর-মহাসাগরের অতল তলদেশে শৈবালদামে আবৃত প্রস্তর খন্ডে বসবাসরত এমন ক্ষুদ্র একটি পোকা, যা ম্যাগনিফাইং (Magnifying) গ্লাসের সাহায্য ব্যতিত দৃষ্টি গোচর হবে না, সে পোকাটিরও আহারের ব্যবস্থাসহ যাবতীয় প্রয়োজন তিনিই পূরণ করে থাকেন। মানুষের দৃষ্টি যেখানে পৌঁছে না এবং যেখানে অনুভূতিও ক্রিয়াশীল থাকে না, এমন কোন স্থানে কোন সৃষ্টি যদি বিপদগ্রস্থ হয়ে আর্তনাদ করে ওঠে, সে আর্তনাদ তিনি শোনেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তিনিই যাবতীয় প্রশংসার অধিকারী।

        তিনি স্রষ্টা, তিনিই প্রতিপালক, এবং সমস্ত সৃষ্টির অনুপম সৌন্দর্য তিনিই দান করেছেন, পৃথিবীকে যেমনভাবে সৃষ্টি করলে অপরূপ সৌন্দর্য ফুটে উঠবে, তিনি সেভাবেই সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি জীবসমূহের যে অঙ্গ দেহের যেখানে প্রয়োজন সেখানেই তিনি স্থাপন করেছেন। যে-বস্তুর মধ্যে যে ধরনের গুণাবলী উপস্থিত থাকা প্রয়োজন, সে বস্তুর ভেতরে তিনি সেই গুণাবলীই দান করেছেন। প্রতিটি খাদ্যবস্তুকে তিনি তার বান্দার আহারের জন্য আবৃত করে দিয়েছেন। যাবতীয় প্রশংসামূলক কর্ম এবং প্রশংসাযোগ্য কার্যাবলী তিনিই সম্পাদন করে থাকেন। এ জন্য যাবতীয় প্রশংসার একমাত্র যোগ্য সত্তা হলেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।

        তিনিই সর্বশক্তিমান; সমস্ত কিছুর ওপরে তিনিই একমাত্র শক্তিশালী এবং তাঁর শক্তি সমস্ত কিছুর ওপরে পরিব্যপ্ত। তাঁর শক্তির মোকাবেলায় তাঁরই সৃষ্টি অন্যান্য শক্তিসমূহ সম্পূর্ণভাবে অসহায়। তাঁর শক্তির সামনে দৃশ্যমান যাবতীয় শক্তি একেবারেই ভঙ্গুর। তিনি মুহূর্তেই সমস্ত কিছু ধ্বংস স্তূপে পরিণত করতে সক্ষম এবং প্রজ্জ্বলিত অনলকুন্ড পুষ্পকাননে পরিণত করতেও সক্ষম। মানুষ যাকে মহাশক্তিশালী হিসেবে জ্ঞান করে, আল্লাহর শক্তির তুলনায় এসব শক্তির সামান্যতম কোন মূল্য নেই। মানুষের কাছে অসম্ভব বলে যা বিবেচিত হয়, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা'য়ালার কাছে তা অত্যন্ত সহজ।

        মানুষের যাবতীয় কল্যাণ ও অকল্যাণের চাবি কাঠি একমাত্র আল্লাহর কাছে। আল্লাহ ব্যতিত এমন কোন শক্তির অস্তিত্ব নেই, যে শক্তি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে সক্ষম। একমাত্র আল্লাহ তা'য়ালাই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারেন। তিনিই মানুষকে ধন-দৌলত দান করতে পারেন, আবার তিনিই মানুষকে অসহায় দরিদ্রে পরিণত করতে পারেন। তিনিই মানুষকে বিপদগ্রস্থ করতে পারেন, আবার তিনিই মানুষকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারেন। এ সমস্ত গুণ আল্লাহ ব্যতিত অন্য কারো ভেতরে উপস্থিত নেই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন-

وَلَا تَدْعُ مِنْ دُونِ اللهِ مَالاً يَنْفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ فَإِنْ فَعَلْتَ فَإِنَّكَ اذا مِّنَ الظَّلِمِينَ

        আল্লাহকে ত্যাগ করে এমন কোন সত্তাকে ডেকো না যারা তোমার কোন কল্যাণ করার বা কোন ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে না। যদি তোমরা এমন কাউকে ডাকো তাহলে তোমরা জালিমদের মধ্যে গণ্য হবে। (সূরা ইউনুছ-১০৬)

        আল্লাহ যদি তোমাকে কোন ক্ষতি বা বিপদ দেন, তাহলে তা আল্লাহ ব্যতিত আর কেউ-ই দূর করতে পারে না। আর তিনিই যদি তোমার প্রতি কোন কল্যাণ দান করতে ইচ্ছে পোষণ করেন, তবে তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে চান কল্যাণ দেন, তিনিই ক্ষমা দানকারী, করুণাময়। মানুষসহ যে কোন প্রাণীর আহার দাতা একমাত্র তিনিই। তিনি ব্যতিত খাদ্যের ব্যবস্থা আর কেউ করতে পারে না। কোথা থেকে কিভাবে তিনি মানুষের এবং অন্যান্য প্রাণীর আহারের ব্যবস্থা করবেন, এ দায়িত্ব একমাত্র তাঁরই। সমস্ত প্রাণীর খাদ্যের ব্যবস্থা তিনিই সম্পাদন করে থাকেন। তিনি যদি ইচ্ছে করেন, কাউকে তিনি অনাহারে রাখবেন, সেটাও তিনি পারেন আবার তিনি যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, কাউকে তিনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত রিস্ক প্রদান করবেন, তাও তিনি পারেন।

         তাঁর সিদ্ধান্তে কেউ পরিবর্তন আনতে সক্ষম নয়, তাঁর কার্যাবলীতে কেউ হস্তক্ষেপ করতেও সক্ষম নয়। যা ইচ্ছা তিনি তাই করতে সক্ষম। সমস্ত সৃষ্টি একমাত্র তাঁরই মুখাপেক্ষী, তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। কোন প্রয়োজনের জন্য তাঁকে কারো দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে হয় না। বরং সমস্ত সৃষ্টিই নিজের প্রয়োজন পূরণের জন্য আল্লাহ তা'য়ালার দিকে তৃষ্ণার্ত দৃষ্টি মেলে থাকে। মাতৃগর্ভে যে সন্তান অবস্থান করছে, সে সন্তান কি আহার করে বৃদ্ধি লাভ করবে, এ চিন্তা সন্তানের জনক-জননীকে করতে হয় না। পৃথিবীর কোন কর্তৃত্ব পরায়ণ শক্তিও গর্ভস্থ সন্তানের আহারের চিন্তা করে না। আহার দাতা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, মাতৃগর্ভে ঐ সন্তানকে জীবিত রাখার জন্য বিশেষ প্রক্রিয়ায় তার আহারের ব্যবস্থা করেন।

        মুরগীর ডিম দেয়া যখন শেষ হয়ে যায়, আল্লাহ তা'য়ালা ঐ মুরগীর শরীরের স্বল্প মেয়াদী এক ধরণের জ্বর সৃষ্টি করে দেন। ফলে মুরগীর শরীরে ঐ পরিমাণ উত্তাপের সৃষ্টি হয়, যে পরিমাণ উত্তাপ থাকলে ডিম ফুটে বাচ্চা নির্গত হবে। ডিম দেয়া শেষে মুরগীর শরীরের যে উত্তাপের সৃষ্টি হয়, এর ফলে মুরগীর ভেতরে জড়তা সৃষ্টি হয়। মুরগী এক স্থানে বসে থাকতে চায়। বাচ্চা ফোটানোর জন্য মুরগি ডিমগুলো পেটের নিচে নিয়ে শুধু নিরবে বসেই থাকে না। নিজের মুখের সাহায্যে ডিমগুলো সে দিনের মধ্যে কয়েক বার ওলট-পালট করে দেয়-যেন সবগুলো ডিম সমপরিমাণ তাপ লাভ করতে পারে।

        এরপর ডিমের মধ্যে যখন বাচ্চার অস্তিত্ব দেখা দিল, তখন তার আহারের প্রয়োজন হয়। ডিমের মধ্যে সাধারণত দুটো অংশ দেখা যায়। একটি হলো সাদা অংশ আরেকটি হলো কুসুম বা হলুদ অংশ। ঐ হলুদ অংশ থেকে বাচ্চা সৃষ্টি হলো। আর এই বাচ্চা খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে তার চারপাশে অবস্থিত সাদা অংশগুলো, ফলে ডিমের খোসা ঘনত্ব হারিয়ে ফেলে। যেদিন খাবার শেষ হয়ে যায়, সেদিন বাচ্চা নিজের ঠোঁটের সাহায্যে ঠোকর দিয়ে ডিমের পাতলা খোসা ভেঙ্গে পৃথিবীর আলো-বাতাসে বেরিয়ে আসে। এই ব্যবস্থা বৈজ্ঞানিক পন্থায় যিনি সম্পাদন করেন, তাঁর নাম হলো রব্ব।

        পিঁপড়াকে ও মাছিকে দেয়া হয়েছে তীব্র ঘ্রাণশক্তি। দশতলায়, বারোতলায় কোন খাদ্য রাখা হলে এরা সেখানেই গিয়ে উপস্থিত হয়। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে তিন থেকে সাড়ে তিন মাইল ঊর্ধ্বে চিল এবং শকুন উড়তে থাকে। সেখানে কোন খাদ্য ছড়ানো নেই। তাদের খাদ্য লাভের উৎস কি? আল্লাহ হলেন এমন রব্ব-তিনি এসব প্রাণীকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিশক্তি দান করেছেন। ভূ-পৃষ্ঠে কোথায় কোন প্রাণীর মৃতদেহ পড়ে আছে, তারা সেখান থেকে তা দেখতে পায়। তারপর তীব্র বেগে নেমে এসে তা ভক্ষণ করে। এরই নাম হচ্ছে রবুবিয়াতে ইলাহি। যার যা প্রয়োজন তিনি তাকে তাই দান করেছেন।

        শামুকের ওপরের আবরণ অত্যন্ত শক্ত। চিল এবং বাজ পাখির আরেকটি খাদ্য হলো এই শামুক। কিন্তু শক্ত আবরণ ঠোকর দিয়ে ভেঙে ওরা শামুকের গোস্ত খেতে পারে না। জন্তু-জানোয়ারের বড় হাড় ভেঙে ওরা মজ্জা খেতে পারে না। এ জন্য চিল-বাজ হাড় এবং শামুক মুখে নিয়ে অনেক ওপরে চলে যায়। তারপর সেখান থেকে তা কোন শক্ত পাথুরে স্থানে ফেলে দিয়ে ভেঙে খায়। উট পাখির ডিমও ওরা এভাবে খেয়ে থাকে। হায়েনা, সিংহ বা বাঘ, এরা বিশাল আকারের বন্য গরু এবং মোষকে একা ধরে খেতে পারে না। কারণ এদের শক্তি বেশী। এ জন্য এসব হিংস্র প্রাণী দলবদ্ধভাবে এসে তারপরে ধরে খায়।.

        চিতা বাঘ যখন শিকার ধরতে যায় তখন একা যায় না। চার পাঁচটি চিতা একত্রিত হয়ে প্রথমে শিকারকে টার্গেট করে। শিকারকে তাড়া করলে সে কোন কোন পথ দিয়ে দৌড়ে পালাতে পারে সেদিকগুলো এরা নির্দিষ্ট করে নেয়। শিকার সাম্ভাব্য যে পথ দিয়ে পালাতে পারে, সেসব পথের ঝোপ-ঝাড়ে কতকগুলো চিতা লুকিয়ে থাকে এবং একটি চিতা শিকারকে তাড়া করে। . শিকার দৌড়ে পালানোর সময় ঝোপে লুকিয়ে থাকা চিতা তার ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে ধরে ফেলে। প্রাণীজগতকে এ ধরনের কৌশল যিনি শিক্ষা দিয়েছেন তিনিই হলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।

Post a Comment

0 Comments